Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫

ছাত্রীদের নিখরচায় ন্যাপকিন দুই স্কুলে

গত বুধবার সেই দুই স্কুলেই স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসিয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। ঘোষপাড়া সরস্বতী ট্রাস্ট এস্টেট হাই স্কুল ও চরসরাটি কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা সেই যন্ত্র থেকেই নিখরচায় পেয়ে যাচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিন। বেশিরভাগ কিশোরীই তাদের জীবনে প্রথম বার ন্যাপকিন ব্যবহার করতে পারছে।

স্কুলে বসছে মেশিন। নিজস্ব চিত্র

স্কুলে বসছে মেশিন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৭:৩০
Share: Save:

দু’টি স্কুলই পিছিয়ে পড়া এলাকার। সেখানে মূলত দরিদ্র প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করতে আসে। তাদের বেশিরভাগেরই দু’বেলা খাবারের সংস্থান হওয়া দুষ্কর। ফলে ঋতুকালীন সময়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনে ব্যবহার করার কথা ভাবতেই পারে না। সাধারণ কাপড়ই তাদের সম্বল। তা ঘোওয়া-শুকোনো সমস্যার। এবং তাতে ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা সমস্যার হয়। অনেকেই তাই ঋতু চলাকালীন কয়েকটি দিন স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়।

গত বুধবার সেই দুই স্কুলেই স্যানিটারি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসিয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। ঘোষপাড়া সরস্বতী ট্রাস্ট এস্টেট হাই স্কুল ও চরসরাটি কেন্দ্রীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা সেই যন্ত্র থেকেই নিখরচায় পেয়ে যাচ্ছে স্যানিটারি ন্যাপকিন। বেশিরভাগ কিশোরীই তাদের জীবনে প্রথম বার ন্যাপকিন ব্যবহার করতে পারছে।

বলিউডের ‘প্যাডমান’ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পরেই স্কুলে গরিব ছাত্রীদের জন্য ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসানোর কথা মাথায় এসেছিল একটি সংস্থার কর্ণধার সায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি কথা বলেন কল্যাণী পুরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলরাম মাঝির সঙ্গে। এই প্রকল্পের জন্য ওই ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল পার্কের মাঠে গত দোলের দিন জমজমাট নাচ-গানের অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানের টিকিট বিক্রি থেকে লাখখানেক টাকা ওঠে। সেই টাকাতেই কেনা হয় দু’টি ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন।

মুম্বইয়ের একটি সংস্থা থেকে কেনা হয় প্রচুর ন্যাপকিন। ঠিক হয়েছে, যখন ন্যাপকিন শেষ হয়ে যাবে সঙ্গে-সঙ্গেই সংস্থার তরফে তা ভরে দেওয়া হবে। সারা বছর এই ভাবেই চলবে। ঘোষপাড়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ন সরকার জানাচ্ছেন, মূলত রেললাইনের ও পারের গ্রামের পড়ুয়ারাই তাঁদের স্কুলে আসেন। বেশিরভাগের অভিভাবকই দিনমজুর। ওই ছাত্রীরা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে পারে না।। বলরামবাবু বলেন, ‘‘নতুন প্রকল্পে এই ছাত্রীদের খুব উপকার হল।’’ চরসরাটির স্কুলটিতেও প্রায় শ পাঁচেক ছাত্রী রয়েছে। এই স্কুলটি শহর থেকে বেশ দূরে। মূলত উদ্বাস্তু পরিবারের মেয়েরা ওই স্কুলে পড়ে। অনেকের বাড়িতেই দু’বেলা হাঁড়ি চড়ে না। মেয়েরা অপুষ্টিতে ভোগে।। এই পরিবারের মেয়েদের পক্ষেও মাসে-মাসে টাকা খরচ করে ন্যাপকিন কেনা অসম্ভব ব্যাপার ছিল। প্রধানশিক্ষক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘নিখরচায় ন্যাপকিন দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষিকারা মেয়েদের ঋতুকালীন সময়ে কী ভাবে পরিচ্ছন্ন থাকতে হয়, কী কী সুষম খাবার খেতে হয় সব কিছুই শেখাচ্ছেন। মেয়েদের সার্বিক স্বাস্থ্যর জন্য তা খুবই প্রয়োজনীয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sanitary Pad Vending Machine School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy