কলেজে তাণ্ডব। ফাইল টিত্র।
ছাত্র পরিষদের পথ ধরে মুর্শিদাবাদে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বয়কট করল এসএফআই।
এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি সাহার বক্তব্য, ‘‘পুলিশের মদতে টিএমসিপি-র গুন্ডাদের দখলে চলে গিয়েছে সব কলেজ। নির্বাচনের পরিবেশ নেই। তাই এই সিদ্ধান্ত।’’ জেলা টিএমসিপি সভাপতি ভীষ্মদেব কর্মকারের কটাক্ষ, ‘‘ওরা কেউই ভোট বয়কট করেনি। ছাত্রছাত্রীরাই ওদের বয়কট করেছেন।’’
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলার ১৫টি কলেজের মধ্যে ১১টিই কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছে শাসকদল প্রভাবিত সংগঠন। আজ, শুক্রবার জঙ্গিপুর, জিয়াগঞ্জের শ্রীপৎ সিংহ ও কান্দির দু’টি কলেজে মনোয়পত্র জমা দেওয়ার দিন।
এ দিন বহরমপুরে কৃষ্ণনাথ কলেজ, জিয়াগঞ্জে রানি ধন্যা কুমারী কলেজ ও নওদায় আমতলা কলেজে মনোনয়ন জমার শেষ দিন ছিল। ছাত্র পরিষদ কলেজমুখো হয়নি। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েও ফিরে আসেন এসএফআই সমর্থকেরা। লালগোলার বিডিও স্বপ্নজিৎ সাহা ৪ এসএফআই প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে ঢুকতে গেলে টিএমসিপি-র সমর্থকেরা বাধা দেন। ফিরতে হয় তাঁদের। যদিও ওই কলেজে টিএমসিপি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ২১টি আসনের জন্য মনোনয়ন জমা পড়েছে ২৫টি।
কংগ্রেসের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি আবু তাহেরের অভিযোগ, ‘‘বুধবার টিএমসিপি-র গুণ্ডারা আমতলা কলেজে তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের আক্রমণে অধ্যক্ষার চশমার কাচ ভেঙেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে কেবল।’’ এর প্রতিবাদে এ দিন সকালে ছাত্র পরিষদ আমতলা মোড়ে ঘণ্টাখানেক পথ অবরোধ করে।
আগামী ২৮ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার বিভিন্ন কলেজে ভোট। বুধলবারই পলাশি কলেজে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে টিএমসিপি-র সঙ্গে এসএফআইয়ের সংঘর্ষ হয়। পাথরে জখম হন কালীগঞ্জ থানার ওসি মানস চৌধুরী-সহ পাঁচ পুলিশকর্মী। ওই ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় লোকেদের নামে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। যদিও রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। আক্রান্ত হয়েছিলেন এসএফআইয়ের নদিয়া জেলা সভাপতি বাবুসোনা সরকার এবং ডিওয়াইএফ নেতা দেবাশিস আচার্যও। দেবাশিসকে এ দিন শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর অভিযোগ, এসএফআই সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ভয় দেখাচ্ছে। তাঁদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। পুলিশ অবশ্য এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
রঘুনাথগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক তথা দলের মহকুমা সভাপতি আখরুজ্জামানও অভিযোগ করেন, “পুলিশ ও তৃণমূলের কর্মীরা ছাত্রদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এক পুরোনো মিথ্যে মামলায় রাতে পুলিশ এক ছাত্র পরিষদ নেতাকে গ্রেফতার করেছে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ বিপন্ন করে আমরা ভোট লড়তে চাই না।” এসএফআইও পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে। জঙ্গিপুরে শাসকদলের চেয়ে পুলিশের হুমকিই বেশি আসছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
জঙ্গিপুরে সন্ত্রাসের অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি মহকুমাশাসক এবং এসডিপিও। জঙ্গিপুর কলেজে মনোনয়ন দাখিলের কথা শুক্রবার। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই সেখানে সিভিক ভল্যান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। মহকুমাশাসক টি বালসুব্রহ্মণ্যম এ দিন অধ্যক্ষ, ছাত্র সংগঠনগুলির প্রতিনিধি ও পুলিশের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। তিনি বলেন, “অশান্তির আশঙ্কা না থাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়নি।” এসডিপিও (জঙ্গিপুর) প্রবীণ প্রকাশ বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার কোনও বহিরাগতকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy