Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাদ্রাসায় ঘেরাও প্রধান শিক্ষক

বাৎসরিক পরীক্ষা শেষ হয়েছিল গত বছরের ৪ ডিসেম্বর। তারপর নতুন বছর শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত মাদ্রাসায় পড়ুয়ারা আসেনি। অথচ ডিসেম্বর মাসের মিড-ডে মিলের যাবতীয় খরচ তোলা হয়েছে! বর্ষা বা অন্য কারণে মাদ্রাসা ছুটি থাকলেও মিড-ডে মিলের ভুয়ো হিসাব দেখানোর অভিযোগও রয়েছে।

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভগবানগোলা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ০১:১২
Share: Save:

বাৎসরিক পরীক্ষা শেষ হয়েছিল গত বছরের ৪ ডিসেম্বর। তারপর নতুন বছর শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত মাদ্রাসায় পড়ুয়ারা আসেনি। অথচ ডিসেম্বর মাসের মিড-ডে মিলের যাবতীয় খরচ তোলা হয়েছে! বর্ষা বা অন্য কারণে মাদ্রাসা ছুটি থাকলেও মিড-ডে মিলের ভুয়ো হিসাব দেখানোর অভিযোগও রয়েছে। এমনই একগুচ্ছ অভিযোগ বুধবার আব্দুল মান্নান জুনিয়র হাই মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক সাদিকুল ইসলামকে তালাবন্দি করে রাখলেন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশ। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।

যাঁর বিরুদ্ধে কারচুপির যাবতীয় অভিযোগ সেই সাদিকুল ইসলাম অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর দাবি, পূর্বতন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর সবুরের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষক তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এমনটা করেছেন। সহ-শিক্ষক আব্দুস সবুরের আবার দাবি, প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির দায় তাঁকেও নিতে হচ্ছে। তিনি জানান, গত সোমবার ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা তাঁকেও তালাবন্দি করে রেখেছিলেন। পুলিশ এসে উদ্ধার করে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা সব শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানা ও বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’ আব্দুল মান্নান জুনিয়র হাই মাদ্রসার অবস্থান ভগবানগোলা থানার কালুখালি এলাকায়। পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচশো। একই ভবনে দুপুরে চলে সারফিয়া হাই মাদ্রাসা। সকালে জুনিয়র হাই মাদ্রাসা।

জুনিয়র মাদ্রাসার মিড-ডে মিলের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষকের দাবি, কোনও দুর্নীতি হয়নি। ভগবানগোলা ব্লকের ইন্ডাসট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট অফিসার (আইডিও) এই ব্লকের মিড-ডে মিলের নোডাল অফিসার। তিনি বলেন, ‘‘তাঁর কাছে প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যে গত মাসের মিড-ডে মিলের ইউসি সার্টিফিটেক জমা দেওয়া হয়। সেখানেই সব তথ্য রয়েছে।’’ আইডিও সন্ন্যাসী দাস জানিয়েছেন তদন্ত শুরু করেছেন।

আইডিও-র কাছে জমা পড়া ইউসি-তে সাক্ষর রয়েছে প্রধান শিক্ষক ছাড়াও আরও এক সহ-শিক্ষকের। তাঁর নাম কামাল হাসান। কামালের আবার দাবি, তিনি সই করেননি। পরিচালন সমিতির সভাপতি সুরুজ্জামান শেখ ও সহ-শিক্ষক দীপঙ্কর ঘোষের দাবি, ‘‘দুর্নীতি ধরা পড়ার ভয়ে প্রধান শিক্ষক বেশ কয়েক মাস পরিচালন সমিতির মিটিং ডাকেননি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক সপ্তাহে দু’দিনের বেশি মাদ্রাসায় আসেন না। রুটিন অনুযায়ী বরাদ্দ ক্লাসও নেন না।

বুধবার ক্লাস করা নিয়েই বিবাদের শুরু। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীরা এ দিন থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছে। তাতে তারা লিখেছে, এ দিন ক্লাস নিতে ডাকলে প্রধান শিক্ষক তাদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ দেয়। দিনের পর দিন তা দেখে ক্ষোভে তারা প্রধান শিক্ষককে তালাবন্দি করে। মিড-ডে মিলের মান নিয়েও একগুচ্ছ অভিযোগ তুলেছে পড়ুয়ারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE