সমীক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মী। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
করোনা আবহের মধ্যেও স্বাস্থ্য দফতরের চিন্তা বাড়াচ্ছে কালাজ্বর।
জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, করোনার ভয়ে অনেক সময় সাধারণ মানুষ জ্বর চেপে রাখছেন। আর তাতেই কালাজ্বরের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। তাই করোনা আবহেই ডেঙ্গির পাশাপাশি কালাজ্বর নিয়ে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষা শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
২০০৯ সাল থেকে জেলায় কোনও কালাজ্বর-আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলছিল না। ফলে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু ন’ বছরের ব্যবধানে ২০১৮ সালে করিমপুর ২ ব্লকের নারায়ণপুর গ্রামে কালাজ্বরে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মেলে। ২০১৯ সালে কলীগঞ্জ ব্লকের জুরানপুর গ্রামে আবার এক জন কালাজ্বরে আক্রান্ত হন। ফলে কালাজ্বর ফের নতুন করে মাথাব্যথার কারণ হয়ে ওঠে স্বাস্থ্যকর্তাদের। শুরু হয় ‘অ্যাকটিভ কেস সার্ভে’। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রোগীর খোঁজ শুরু করেন আশা কর্মী ও কালাজ্বর টেকনিক্যাল সুপারভাইজাররা।
পাশাপাশি ছ’মাস অন্তর কালাজ্বরের বাহক বেলেমাছি মারতে বাড়ি-বাড়ি ‘সিন্থেটিক পাইরেথ্রয়েড’ কীটনাশক স্প্রে করা হয়। জেলার পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ সুস্মিতা ঘোষ বলছেন, “প্রথম দিকে ওই দু’টি গ্রামে প্রচুর বেলেমাছির সন্ধান মিলেছিল। কিন্তু লাগাতার প্রচার ও স্প্রে করার ফলে এখন ওই দু’টি গ্রামে বেলেমাছির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।” বেলেমাছি যেহেতু গোবরের ভিতরে জন্মায় তাই নারায়ণপুর ও জুরানপুরে বাড়ির আশেপাশে যাতে গোবর পড়ে না-থাকে তার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৬ আগস্ট ওই দুই গ্রামের প্রতি বাড়িতে বেলেমাছি নাশক কীটনাশক ছড়ানো হবে। গ্রামের সবাইকে ওই চার দিন বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে।
চলতি বছর জেলায় এখনও পর্যন্ত ১৭৫ জনের কালাজ্বর পরীক্ষা করে হয়েছে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, ‘‘এখন করোনার উপরেই মূল নজর বলে অন্য রোগ কিছুটা হলেও কম গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু কালাজ্বরের ক্ষেত্রে সেটা হতে দেওয়া যাবে না।” জেলার আরেক পতঙ্গ বিশেষজ্ঞ অন্বেষা গোস্বামী বলছেন, “আমরা সবাইকেই বলছি, করোনার ভয়ে কোনও ভাবেই জ্বরের কথা চেপে রাখবেন না। বিশেষ করে দুই সপ্তাহের বেশি জ্বর থাকলে স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কালাজ্বর পরীক্ষা অবশ্যই করিয়ে নিন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy