Advertisement
১৪ অক্টোবর ২০২৪
lockdown

তাঁতিদের থেকে সরাসরি শাড়ি কিনল তন্তুজ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ফুলিয়ায় আসেন তন্তুজের আধিকারিকেরা। সরাসরি তাঁতিদের কাছ থেকেই কেনেন কাপড়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:২২
Share: Save:

বর্তমান করোনা আবহে প্রভাব পড়েছে শান্তিপুর ফুলিয়া এলাকার তাঁত শিল্পে। বিক্রি নেই, ঘরেই জমছে উৎপাদিত সামগ্রী। সব মিলিয়ে সমস্যায় ভুগছেন এখানকার তাঁত শিল্পীরা। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের কাছ থেকে সরাসরি শাড়ি কিনল তন্তুজ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ফুলিয়ায় আসেন তন্তুজের আধিকারিকেরা। সরাসরি তাঁতিদের কাছ থেকেই কেনেন কাপড়। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী রত্না ঘোষ।
বেহাল দশা তাঁত শিল্পের। ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই চালাচ্ছেন ফুলিয়া শান্তিপুর এলাকার তাঁত শিল্পীরা। বিপণনের সমস্যায় ভুগছেন তাঁরা। এই অবস্থায় তাঁতিদের থেকে সরাসরি কাপড় কেনার কথা জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তন্তুজের মাধ্যমে এই কাপড় কেনার কাজ শুরু হয়েছে। শান্তিপুর থানা এলাকায় লক্ষাধিক মানুষ এই শিল্পের উপর নির্ভরশীল। হ্যান্ডলুম বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের তথ্য অনুযায়ী শান্তিপুর শহরে তাঁত শিল্পীর সংখ্যা প্রায় ২৭ হাজারের মতো, আনুষঙ্গিক কাজে যুক্ত আছেন ১৯ হাজারের বেশি মানুষ। আবার গ্রামীণ শান্তিপুরে তাঁত শিল্পীর সংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার, আনুষঙ্গিক কাজে যুক্ত আছেন আরও প্রায় ৩১ হাজারের মতো মানুষ। ব্লক এবং শহর মিলিয়ে রয়েছে ৩৮টি সমবায় সমিতি। এখানকার তাঁত শিল্পীদের তৈরি শাড়ি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং বিদেশেও যায়।
লকডাউনের সময়ে বন্ধ ছিল উৎপাদন। পরে উৎপাদন শুরু হলেও ক্রেতা নেই। বিভিন্ন হাট এবং দোকান খুললেও বিক্রি নেই। এমনকি পুজোর মুখেও বরাত নেই। শনিবার ফুলিয়ায় আসেন তন্তুজের আধিকারিকেরা। ফুলিয়া টাঙাইল শাড়ি বয়নশিল্প সমবায় সমিতি লিমিটেডের দফতরে একটি শিবিরের আয়োজন করা হয়ছিল। সেখানে এসে তাঁতিদের থেকে সরাসরি কাপড় কেনা হয় তন্তুজের তরফে। তন্তুজের এক কর্তা জানান, গোটা দেশে তাঁদের ৮২টি বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে এই রাজ্যেই আছে ৭০টির মতো। পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলির মতো এলাকায় আগেই এই ধরনের শিবির হয়েছে। এ দিন ফুলিয়ায় হল। তবে এই একবারই হবে। তন্তুজের ওএসডি (বিপণন) শুভব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই সময়ে তাঁত শিল্পীরা সঙ্কটের মধ্যে পড়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি যত বেশি সম্ভব শাড়ি তাঁদের কাছ থেকে কেনার। নিজেদের বিপণন কেন্দ্র হোক বা অনলাইনে হোক গ্রাহকদের কাছে এই শাড়ি পৌছে দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা।” সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই টাকা জমা পড়বে। এদিন ১০৪ জন তাঁতির থেকে ৩১০৮টি শাড়ি কিনেছে তন্তুজ। যার অর্থমূল্য ২৫ লক্ষ ৬৭ হাজার ১৫ টাকা।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু বলেন, “শাড়ির বিক্রি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে তাঁদের দিকে তাকিয়েই এই উদ্যোগ। এখানে তন্তুজের তরফে সরাসরি তাঁতিদের থেকে কাপড় কেনা হল। এতে এখানকার তাঁতিরা
উপকৃত হবেন।”
শান্তিপুরের তাঁত বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তারক দাস বলেন, “এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তাঁত শিল্প একটা সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। সেখানে তন্তুজ তাঁদের কাছ থেকে সরাসরি কাপড় কেনায় সুবিধা হবে।”
রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের প্রতিমন্ত্রী রত্না ঘোষ বলেন, “এই সময়ে বিপণনের সমস্যা রয়েছে। তাঁতিদের ঘরেও কাপড় জমে যাচ্ছিল। বিক্রি করতে পারছিলেন না। প্রান্তিক তাঁতিদের থেকে সরাসরি শাড়ি কেনা হল। অনেক জায়গায় এই ধরনের শিবির করা হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Tantuja Weavers Santipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE