Advertisement
E-Paper

ধুস, এক টাকার কয়েন! রেখেই ফিরে গেল চোর

বেলডাঙার মেছুয়া বাজারে যাঁর দোকা‌‌নে চুরি, সেই আনাজ ব্যবসায়ী আফজল খাঁ বলছে‌ন, ‘‘প্রতিদিন যে সময় বাড়ি যাই, সেই সময়েই গিয়েছি। সকালে দোকানে এসে দেখি, তালা ভাঙা।

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৮ ০১:০৮
নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব চিত্র

চেষ্টার কোনও ত্রুটি ছিল না। অভাব ছিল না অধ্যাবসায়েরও। কিন্তু বেশ কয়েক ঘণ্টা ‘সলিড’ পরিশ্রম করে বরাতে জুটল স্রেফ কয়েন। তা-ও আবার এক টাকার! যে কয়েন এখন আর কেউ নিতে চাইছেন না। ফলে রবিবার রাতে নসিবকে গালিগালাজ করতে করতে বাড়ি ফিরতে হল তস্করদের।

বেলডাঙার মেছুয়া বাজারে যাঁর দোকা‌‌নে চুরি, সেই আনাজ ব্যবসায়ী আফজল খাঁ বলছে‌ন, ‘‘প্রতিদিন যে সময় বাড়ি যাই, সেই সময়েই গিয়েছি। সকালে দোকানে এসে দেখি, তালা ভাঙা। ভিতরে ডিজিটাল কাঁটা নেই। পাঁচ টাকার কিছু কয়েন ছিল সেগুলোও নেই। কিন্তু এক টাকার কয়েকশো টাকার কয়ে‌ন যেমন ছিল, তেমনই পড়ে আছে।’’

মেছুয়া বাজারে নিত্যদিন বসেন মাছ ও আনাজ ব্যবসায়ীরা। কারবার শেষ হলেও আঁশটে গন্ধে ম-ম করে চারপাশ। সেই বাজারে বেশ কিছুক্ষণ ওত পেতে কয়েক ইঞ্চির ফাঁক গলে দোতলার সিঁড়ি দিয়ে চোরেরা উঠে পড়ে দোতলায়। সেখান থেকে নেমে তারা ঢোকে এক তলায় আফজলের দোকানে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, গোপনে আফজলের দোকানে উঠতে হলে এ ছাড়া যে আর গতি নেই।

ফলে সেই কষ্ট করে দোকানের সামনে এসে গেটে বেশ কয়েক জোড়া প্রকাণ্ড তালা। তা ভেঙে, গেট সরিয়ে ভিতরে ঢোকা চাট্টিখানি কথা নয়। কিন্তু এত কষ্ট করেও শাঁসালো কিছু মিলল না। চোরেরা দোকানে ঢুকে দেখে, আনাজের সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু এক টাকা আর পাঁচ টাকার কয়েন। এমনিতেই খুচরো টাকা নিয়ে বিস্তর হ্যাপা। তার উপরে ব্যাঙ্ক ও প্রশাসনের তরফে বার বার বলার পরেও এক টাকার কয়েন নিতে চাইছে না অনেকেই।

পুলিশের অনুমান, সেই কারণেই চোরেরা সে সব ফেলে শুধু বেশ কয়েকটি পাঁচ টাকার কয়েন ও ডিজিটান দাঁড়িপাল্লা নিয়ে গিয়েছে। মাস খানেকের মধ্যে বেলডাঙায় ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ১৫টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। শেষ সংযোজন রবিবার রাতে। বেলডাঙায় দু’টো দোকানে তালা ভেঙে চুরি হয়েছে।

আনাজ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, রাত ১০টা-সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বাজারে লোকজন থাকে। তার পরেও কিছু লোকজন দোকানের সামনে আড্ডা দেন। কিন্তু ১২টার পরে বাজারে আর কেউ থাকেন না। বেলডাঙা শহরের কেন্দ্রস্থলে থাকা এই বাজারটি গলির একদম ভিতরে। চার দিকে গেট লাগানো। কিন্তু একটা খোলা পথ রয়েছে। দোতলার সিঁড়ি বেয়ে সেই দিক দিয়ে একেবারে নীচে নেমে আসা যায়। সেই দিক দিয়ে নেমে চোরেরা রবিবার গভীর রাতে তালা ভেঙে নীচে নামে।

বেলডাঙা পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর মোহন ছাজের সোমবার সকালে ঘট‌‌নাস্থ‌লে যান। তিনি বলেন, ‘‘শহরে চুরি বেড়েছে। কয়েক দিন আগে আমার বাড়ি থেকেও চুরি হয়েছে। অন্য দোকানে ও এক কলেজ শিক্ষকের বাড়িতেও চুরি হয়েছে। কিন্তু এক টাকার কয়েন চোরেরাও নিচ্ছে না জেনে বেশ অবাক লাগছে।’’

বেলডাঙা বাজারপাড়ার এক ব্যবসায়ী বলছেন, ‘‘সামনে না বলতে পারলেও এক টাকা ও দু’টাকার কয়েন অনেকেই নিচ্ছে না। কিন্তু চায়ের দোকান, চকোলেটের দোকানে চলছে। কিন্তু তাই বলে চোর দোকান ভেঙে ঘরে ঢুকে কয়েন রেখে চলে গেল? ভাবা যায়!’’

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, নেশায় আসক্ত কিছু লোকজন চুরির ঘটনায় জড়িত। ইতিমধ্যে কয়েকটি চুরির কিনারা করা গিয়েছে। তবে এ দিন কয়েন ফেলে রেখে চোরেরা এ তল্লাটে একটা নজির রেখে গেল।

Coins Thief
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy