ফাইল চিত্র।
নিমতিতা রেল স্টেশনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবিতে ফের সরব হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেন। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তিনি। এর আগেও বিস্ফোরণ কাণ্ডের তদন্ত নিয়ে সরব হয়েছেন জাকির। কিন্তু তদন্তে এখনও কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষুব্ধ জাকির।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা নাগাদ মুর্শিদাবাদের নিমতিতা রেল স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের উপর বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। ট্রেন ধরতে যাওয়ার পথে জাকির সহ ২৭ জন আহত হন, যাদের মধ্যে মন্ত্রী সহ কয়েকজনের অবস্থা এখনও গুরুতর। এই বোমা হামলার তদন্ত ভার রাজ্য সরকার সিআইডি সহ রাজ্য পুলিশের তিনটি সংস্থার উপর দেয়। বিস্ফোরণের রাতেই আজিমগঞ্জ জিআরপি থানায় এফআইআর করা হয়। পুলিশ ৩০৭, ৩২৬, ১২০বি, ৩/৪ বিস্ফোরক সংক্রান্ত আইনে মামলা রুজু করে।
পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতরের নির্দেশে এনআইএ-কে এই মামলার তদন্ত ভার দেওয়া হয়। এনআইএ’র কলকাতা শাখার ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট বীরেন্দ্র সিংহের নেতৃত্বে একটি দল তদন্ত করছে এই বিস্ফোরণ মামলার। তার আগে সিআইডি তদন্তে ২ জন ধরাও পড়ে। দুজনেই সুতি এলাকার বাসিন্দা।
এনআইএ এ পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে খবর। কিন্তু এই বিস্ফোরণ মামলার তদন্তে তেমন অগ্রগতি ঘটেনি। আড়াই মাস ধরে কলকাতার এসএসকে এম হাসপাতালে ভর্তি জাকির হোসেনের বাঁ পায়ে ৮ বার অপারেশন হয়েছে। গত সপ্তাহে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িতে ফিরলেও তিনি এখনও হাঁটাচলা করতে পারেন না। পায়ে পরোনো রয়েছে বিশেষ ধরণের সার্জিক্যাল জুতো।
সোমবার বিকেলে রঘুনাথগঞ্জে নিজের বাড়িতে সাংবাদিকদের কাছে জাকির বলেন, “আমার পায়ের অবস্থা ভাল নয়। আমি এখনও পা ফেলতে পারি না। কোনওরকমে লোকজনের সাহায্য নিয়ে কাজ করছি। জঙ্গিপুরে আমার কেন্দ্রে নির্বাচনও আপাতত বন্ধ। আমার থেকেও ভয়াবহ অবস্থায় দিন কাটছে বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের আরও অনেকেরই। বিস্ফোরণের পর কারও পা কাটা পড়েছে, কারও বা পা, হাত দুটোই। এই অবস্থায় দোষীদের কঠোর শাস্তি চাইছি আমি। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ আমার আবেদন, যারা এই ঘটনায় জড়িত সেই দোষীদের যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুন। আমি ও আহত আরও ২৭ জন দলীয় কর্মী যেন সঠিক বিচার পাই সে দাবি আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাখছি। প্রশাসনের কাছেও আমার একই দাবি। এতদিন আমি অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছি। কোনও কাজ করতে পারছি না। তাই মুখ্যমন্ত্রী যাতে দ্রুত এই ঘটনার তদন্ত শেষ করে বিচারের ব্যবস্থা হয় সেই বিষয়টি দেখেন।”
এনআইএ এপর্যন্ত এই বিস্ফোরণ কান্ডে ঝাড়খণ্ড ও সুতির একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে। এই তল্লাশিতে বহু “নথিপত্র ও ইলেকট্রনিক আইটেম” আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে এনআইএ।
এর থেকেই এনআইএ নিশ্চিত জঙ্গি নাশকতার পরিকল্পনা করেই নিমতিতা রেল স্টেশনে হামলা চালানো হয় জাকিরের উপর। কারণ এই সবের ব্যবহার রয়েছে শুধুমাত্র জঙ্গিদের মধ্যেই। তল্লাশিতে পাওয়া সামগ্রী খতিয়ে দেখে তাই এই মামলায় “জঙ্গি নাশকতার” ধারা জুড়ে তদন্ত শুরু করে এনআইএ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy