Advertisement
০৪ মে ২০২৪
ধরা পড়েনি অভিযুক্তেরা

চাপড়ায় খুন তৃণমূল নেতা

জেলা পুলিশ কর্তাদের অবশ্য দাবি, পুলিশের নাম করে অন্য কেউ এই কাজ করে থাকতে পারে। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে পুলিশ কোনও ভাবেই জড়িত নয়। কারা জড়িত তা আমরা তদন্ত করে দেখছি।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাপড়া শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৮
Share: Save:

মাঝরাতে দরজায় ধাক্কা শুনে চমকে উঠেছিলেন বাড়ির লোকজন। ঘুমজড়ানো গলায় বাড়ির কর্ত্রী জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘এত রাতে কে?’’ বাড়ির লোকের দাবি, উত্তর এসেছিল, ‘আমরা পুলিশ। দরজা খুলুন’।

অভিযোগ, রবিবার রাতে দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে জনা পনেরো লোক। তারাই পিটিয়ে মারে চাপড়ার বাঙালঝির বাসিন্দা রসুল মিস্ত্রিকে (৫৫)। রসুল এলাকায় তৃণমূলের নেতা হিসেবে পরিচিত।

তাঁর পরিবারের অভিযোগ, নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে রসুল ও তাঁর বড় ছেলে রসিদুলকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা। বাধা দিলে কিল, চড় ও লাথি মারতে থাকে। রসুল অসুস্থ হয়ে রক্ত-বমি করতে শুরু করায় তারা গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যায়। রসুলকে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানিয়ে দেন।

জেলা পুলিশ কর্তাদের অবশ্য দাবি, পুলিশের নাম করে অন্য কেউ এই কাজ করে থাকতে পারে। জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে পুলিশ কোনও ভাবেই জড়িত নয়। কারা জড়িত তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। ওই ব্যক্তি ঠিক কী কারণে মারা গিয়েছে তা ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

নিহতের পরিবার ও পড়শিদের একাংশের দাবি, পুলিশই বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে রসুলকে। তাঁর স্ত্রী সরিফা বিবির দাবি, “ওরা পুলিশই ছিল। কারণ ওদের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল। পুলিশের গাড়িতে করেই এসেছিল।” রসুলের বড় ছেলে রসিদুলের অভিযোগ, “ওরা পুলিশ পরিচয় দিয়ে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিল। বলছিল, আমাদের ঘরে নাকি আসামি লুকিয়ে আছে। বাধ্য হয়ে আমার মা দরজা খুলে দেয়। পুলিশের পোশাক পরা চার জন উপরে উঠে গিয়ে বাবাকে সিঁড়ি দিয়ে টানতে টানতে নীচে নামায়। বেধড়ক মারধর করে।”

রসুল আগে চাপড়া ২ পঞ্চায়েতের সিপিএমের দু’বারের সদস্য ছিলেন। স্ত্রী সরিফা বিবি উপপ্রধান ছিলেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে তাঁরা তৃণমূলে যোগ দেন। ভাইপো সুমর আলি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। আর এক ভাইপো গোলাম মোস্তাফা চাপড়া বাঙালঝি কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক। বড় পরিবার হওয়ায় তাঁদের দাপটও আছে এলাকায়।

অভিযোগ, চাপড়া ২ অঞ্চল সভাপতি কাংলা শেখ ও তাঁর ছেলে রাজীব শেখের সঙ্গে তাদের বিবাদ আছে। ক’মাস আগে রসুলের ভাইপো গোলাম কাংলার আত্মীয়ের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান। তা নিয়েও দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ চরম আকার নেয়। রসুল এই ঘটনায় বেশ কিছু দিন জেলেও ছিলেন।

নিহতের বড় ছেলের অভিযোগ, “পুলিশের সঙ্গে রাজীবের লোকও এসেছিল। ওদের কথাতেই সব হয়েছে। আমরা তৃণমূল করলেও রাজীবের সন্দেহ, বাবা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন।” তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি কাংলা শেখ বলেন, “আমাদের ওখানে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। পুলিশও যায়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE