Advertisement
১৭ মে ২০২৪
শান্তিপুর-কাণ্ড

অস্ত্র মেলেনি,জামিনে ছাড়া পেল মনোজ

নিজেদের হেফাজতে নিয়েও তার কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। শনিবার জামিনে ছাড়া পেয়ে গেলেন শান্তিপুর কলেজে হামলা-হুমকিতে অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা মনোজ সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৭
Share: Save:

নিজেদের হেফাজতে নিয়েও তার কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। শনিবার জামিনে ছাড়া পেয়ে গেলেন শান্তিপুর কলেজে হামলা-হুমকিতে অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা মনোজ সরকার।

এ দিন রানাঘাট আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক শিখা সেনের এজলাসে মনোজের জামিনের আবেদন করা হয়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর মনোজকে সাত দিন জেল হাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তিন দিনের মাথায় অতিরিক্ত দায়রা বিচারকের কাছে ফের আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুণ্ডুর মতে, “পাঁচ দিন নিজেদের হেফাজতে রেখেও পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে অস্ত্র আইনে যে মামলা করা হয়েছিল, প্রমাণ হয়নি। বাকি ধারাগুলো জামিনযোগ্য। তাই বিচারক জামিন দিয়েছেন।”

গত ২৯ অগস্ট শান্তিপুর কলেজে স্টাফরুমে ঢুকে অঙ্ক শিক্ষক অমরজিৎ কুণ্ডুকে মারধর করেছিল এক দল যুবক। এক জন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়েও শাসায় বলে অভিযোগ। ওই ঘরে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। পরে অধ্যক্ষের ঘরে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে আঙুল তুলে শাসাতে দেখা যায় মনোজকে। এর পরে সে বেপাত্তাও ছিল কিছু দিন।

মনোজের আইনজীবী অপূর্ব ভদ্র অবশ্য দাবি করেন, “মিথ্যা মামলায় যে ফাঁসানো হয়েছে তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হল, এত দিন ওকে নিজেদের হেফাজতে রেখেও পুলিশ কোনও অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। তা ছাড়া সিসিটিভি ফুটেজ বা অন্য কোনও ভাবেও প্রমাণ করতে পারেনি যে মনোজ অস্ত্র ব্যবহার করেছে।”

মনোজের সঙ্গে তার যে সঙ্গীকে ধরা হয়েছিল, সেই সমীর দাসেরও এ দিন জামিন মঞ্জুর হয়েছে। ধৃত আরও দু’জন আগে জামিন পেয়ে গিয়েছেন। বিরোধীদের দাবি, শাসকদলের চাপেই পুলিশ অস্ত্র উদ্ধার করেনি। মনোজকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া বা পুলিশকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া, সবটাই তৃণমূলের সাজানো। শান্তিপুরের বাসিন্দা, সিপিএমের জেলা কমিটির সম্পাদক শান্তনু চক্রবর্তীর মতে, “এটা তো তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে পুলিশের গটাপ গেম। পুলিশ ইচ্ছা করেই অস্ত্র উদ্ধার দেখায়নি।”

মনোজ বরাবরই শান্তিপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা পুরপ্রধান অজয় দের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তবে বেশ কিছু দিন ধরে তিনি টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অয়ন দত্তের অনুগামী হয়ে উঠেছেন। দলের একটা অংশের দাবি, রাজ্য নেতৃত্ব প্রকাশ্যে মনোজের পাশ থেকে সরে গেলেও মনোজকে বাঁচানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন অয়ন। অজয়বাবু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। অয়ন বলেন, “মনোজ সম্পর্কে দলের অবস্থান আগেই পরিষ্কার করে দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে তার বাইরে যাওয়ার কথা ভাবতেও পারি না। আদালত তাঁকে জামিন দিয়েছে। এই বিষয়ে কথা বলার আমি কে?”

জামিনে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে মনোজ দাবি করেন, “কলেজে বিভিন্ন অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমি চক্রান্তের শিকার হয়েছি।” পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “আদালতের রায় নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMCP Manoj sarkar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE