Advertisement
E-Paper

সেতু বেহাল, দুর্ঘটনা রুখতে বাঁশের রেলিং

কংক্রিটের রেলিংটা উধাও। তার বদলে কোনও মতে জোড়াতালি দিয়ে লাগানো দু’তিনটে বাঁশ। সেতু ভেঙে চূর্ণী নদীতে ট্রাক পড়ে যাওয়ার ঘটনা এখনও মনে আছে মানুষের। দুর্ঘটনা রুখতে ওগুলোই তাই ভরসা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৬ ০২:৪৮
এ ভাবেই জোড়াতালি দিয়ে তৈরি হয়েছে বাঁশের রেলিং। —নিজস্ব চিত্র।

এ ভাবেই জোড়াতালি দিয়ে তৈরি হয়েছে বাঁশের রেলিং। —নিজস্ব চিত্র।

কংক্রিটের রেলিংটা উধাও। তার বদলে কোনও মতে জোড়াতালি দিয়ে লাগানো দু’তিনটে বাঁশ। সেতু ভেঙে চূর্ণী নদীতে ট্রাক পড়ে যাওয়ার ঘটনা এখনও মনে আছে মানুষের। দুর্ঘটনা রুখতে ওগুলোই তাই ভরসা।

বাইরের লোক অবশ্য পরিস্থিতি দেখেশুনে আঁতকে ওঠে। সেতুর উপর দিয়ে যাওয়ার সময় যেমন চমকে উঠলেন বছর ষাটেকের প্রৌঢ়। বললেন, ‘‘এ কী অবস্থা। কারও নজর নেই। যে কোনও দিন বড় বিপদ ঘটতে পারে।’’ সে কথা অবশ্য মাথায় আসে না স্থানীয় প্রশাসনের।

উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম রানাঘাটের এই সেতু। চূর্ণী নদীর উপর এই সেতুই ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। এর এক দিকে কলকাতা, অন্য দিকে বহরমপুর হয়ে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার রাস্তা চলে গিয়েছে। সব সময় সেতুর উপর দিয়ে চলছে দূরপাল্লার সরকারি ও বেসরকারি বাস, লরি-সহ বিভিন্ন যানবাহন। চলে রানাঘাট শহর থেকে কালনাঘাট, শান্তিপুর হয়ে নৃসিংহপুরঘাট, শান্তিপুর, দিগনগর হয়ে কৃষ্ণনগর, বীরনগর ও তাহেরপুর হয়ে কৃষ্ণনগর, বলাগড়ঘাট রুটের শ’খানেক বাস।

গত বছর ৩০ মার্চ রানাঘাট থেকে হবিবপুরের দিকে যাওয়ার সময় বাঁ দিকের রেলিং ভেঙে একটি ট্রাক নদীতে পড়ে গিয়েছিল। সেতুর সেই ভাঙা অংশের মেরামত এখনও হয়নি। পুলিশের তরফে সেখানে বাঁশ দিয়ে কোনও রকমে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। উল্টো দিকের রেলিঙের অবস্থাও ভাল নয়। বিভিন্ন জায়গা প্লাস্টার খসে গিয়েছে। সেতুর উপর কয়েকটি জায়গা নিচু হয়ে বসে গিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ‘‘গাড়ি করে যাওয়ার সময় এক-এক বার মনে হয়, এই বুঝি সেতুটা ভেঙে পড়ল।’’

একই কথা বলছেন লরি চালক ইসলাম শেখ। বললেন, ‘‘একে রেলিং ভাঙা, তায় ধার ঘেঁষে লোক চলাচল করে। খুব সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়।’’

আরএসপির রাণাঘাট লোকাল কমিটির সম্পাদক সুবীর ভৌমিক জানান, পঞ্চাশ বছরেরও আগে এই সেতু তৈরি হয়েছিল। প্রথমে এখানে কাঠের সেতু ছিল। পরে কংক্রীটের সেতু তৈরি করা হয়। প্রথম থেকেই এর গুরুত্ব রয়েছে। সুবীরবাবু বলেন, ‘‘এখন এত খারাপ অবস্থা, কহতব্য নয়। যে কোনও মূহূর্তে বড়সড় দূর্ঘটনা ঘটতে পাড়ে।’’

রানাঘাটের পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়। ওই সেতুটা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি তাদের নজরেও আছে। কিন্তু কোনও হেলদোল নেই।’’ সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রানাঘাট ১ নম্বরের বিডিও অনুপম চক্রবর্তীও। বলেন, ‘‘ওই সেতু সংস্কারের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ সংশ্লিষ্ট দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁদের নজরে আছে। খুব শীঘ্রই সংস্কারে কাজ শুরু করা হবে।

তবে কর্তাব্যক্তিদের ‘নজরবন্দি’ সেতুটি সারানোর কাজ ঠিক কবে থেকে শুরু হবে, সে বিষয়ে আলোকপাত করতে পারেনি কোনও মহলই। অতএব, ফের অপেক্ষা।

Bamboo railing Bridge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy