Advertisement
E-Paper

রাস্তা সারানোর দায় কার, যানজট জাতীয় সড়কে

এমনিতেই সেতুতে যানবাহনের চাপ বেশি। সেতু লাগোয়া দক্ষিণ দিকের শেষ অংশের কিছুটা সড়ক ফরাক্কা ব্যারাজের।

মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের যানযট।

মুর্শিদাবাদের ফরাক্কায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের যানযট। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২৪ ০৯:২১
Share
Save

রাস্তা সারাবার দায় কার? ১২ নম্বর (পুরনো ৩৪ নম্বর) জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের, নাকি ফরাক্কা ব্যারাজের?

কেন্দ্রীয় সরকারের দুই মন্ত্রকের দায় এড়ানোর প্রশ্নেই বুধবার সকাল থেকেই ফরাক্কা বাঁধ সেতু থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত প্রবল যানজটের কবলে পড়েছে জাতীয় সড়ক। উত্তরবঙ্গে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ হয়েছে। নাজেহাল অবস্থায় জেরবার অ্যাম্বুল্যান্স, বাস ও ছোট গাড়ি। বহু মানুষ নাকাল হয়েছেন। প্রচণ্ড গরমে ঘণ্টার পরে ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকার ফলে অসুস্থ বোধ করেছেন অনেকে।

বুধবার সকালে ফরাক্কা সেতু থেকে বল্লালপুর পেরিয়ে প্রায় ধুলিয়ানের কাছে এসে ঠেকেছে এই যানজট। চার লেনের সড়কে পাশ কাটিয়ে আগে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে আরও তালগোল পাকিয়েছে যানজট।

প্রায় এক সপ্তাহ থেকেই সামান্য যানজট হচ্ছিলই। বৃষ্টি হওয়ার পরে ফরাক্কা সেতুর দক্ষিণে শেষ প্রান্তে রাস্তার উপর প্রচুর সংখ্যায় গর্ত তৈরি হওয়ার ফলেই এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের প্রকল্প আধিকারিক ওমনাথ বিহারী। তিনি বলেন, “ফরাক্কা সেতুটি দু’লেনের। দুই দিকের জাতীয় সড়কটি চার লেনের। ফলে এমনিতেই সেতুতে যানবাহনের চাপ বেশি। সেতু লাগোয়া দক্ষিণ দিকের শেষ অংশের কিছুটা সড়ক ফরাক্কা ব্যারাজের। সেই রাস্তাটির অবস্থা বেহাল। ফলে গাড়ি চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। যানজটের কারণ সেটাই। ফরাক্কা ব্যারাজকে বার বার জানানো হয়েছে। কিন্তু রাস্তা সারানোর ব্যবস্থা হয়নি।”

জঙ্গিপুরের পুলিশ জেলার ডিএসপি ট্রাফিক সুকান্ত হাজরা বলেন, “ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা হয়েছে ওই রাস্তা সারাতে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবারই আমরা আবারও ফরাক্কা ব্যারাজকে চিঠি দেব। এলাকাটি মালদহ জেলার মধ্যে পড়ে। কিন্তু সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে মুর্শিদাবাদকে বেশি। তাই পুলিশের তরফেই চেষ্টা হচ্ছে সেই রাস্তাটি নিজেদেরই উদ্যোগে সারিয়ে দেওয়ার। কারণ এর ফলে যান নিয়ন্ত্রণেও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পুলিশকে।চার লেনের নতুন ফরাক্কা সেতুটি চালু হয়ে গেলে যানজটের সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে।”

ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার আর কে দেশপাণ্ডেকে বার বার ফোন করা হয়। ফোন ধরেননি তিনি।মেসেজ করে তাঁকে জানানো হয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে ফরাক্কা ব্যারাজের অধীনে থাকা সেতুর দক্ষিণাংশের রাস্তার বেহাল দশা সংস্কার না হওয়ার কারণেই এই যানজট বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত মেসেজের কোনও উত্তর আসেনি।

ফরাক্কার প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গে যাওয়ার এক মাত্র সড়ক পথ এটি। যানজটের ফলে ছোট গাড়ি, ট্রাক তো বটেই, এই যানজটের গেরোয় সমস্ত যাত্রিবাহী বাস ও অ্যাম্বুল্যান্স আটকে রয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে। জাতীয় সড়কের কর্তা বলছেন সেতুর লাগোয়া রাস্তার দায় তাঁদের নয়, সারাতে হবে ফরাক্কা ব্যারাজকেই। ফরাক্কা ব্যারাজের কোনও মাথাব্যথা নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের দুই দফতরের বিবাদের ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।”

বাঁধের দু’পাশে চার লেনের ঝাঁ চকচকে সড়ক পথ। যথেষ্ট গতিতে ছুটে আসছে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গগামী যানগুলি। অন্যদিকে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা পাথর বোঝাই লরিগুলি ফিডার ক্যানালের এনটিপিসি সেতু পেরিয়ে জাতীয় সড়কে গিয়ে উঠছে।

সিআইএসএফের এক কর্তার কথা, ‘‘প্রহরারত জওয়ানরা বাঁধ পাহারা দেবেন, না যানজট নিয়ন্ত্রণ করবেন?’’

এর ফলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এমন পণ্য নিয়ে যাওয়া ট্রাক মালিকেরা আরও চিন্তায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

farakka NHAI

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}