—প্রতীকী চিত্র।
বহু অভিযান সত্ত্বেও মুর্শিদাবাদে নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করা যায়নি। তার ফলে নাবালিকা বয়সে মা হচ্ছে অনেকেই। চল্লিশের কোঠা ছোঁয়া অনেক মহিলা দিদিমাও হচ্ছেন। নাবালিকা বয়সে মা হওয়ার ফলে সদ্যোজাত অপুষ্টির শিকার হচ্ছে।
মাসখানেক আগে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একদিন ১১ জন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসতেই নাবালিকা মায়ের তথ্য ফের সামনে এসেছে। সেখানকার শিশু মৃত্যুর ঘটনার তথ্যের পর্যালোচনা করতে গিয়ে বাল্যবিবাহের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তকারীদের সামনে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তদন্তকারী দল, রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে বাল্য বয়সে মা হওয়ার কারণে শিশু-মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই হাসপাতালে যতজন আসন্নপ্রসবা ভর্তি হন তাঁদের ১৮-২০ শতাংশেরই বয়স ১৮ বছরের নীচে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, জেলায় বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার মহিলা মা হন। তার মধ্যে ৩৫ হাজার থেকে ৪১ হাজার জন নাবালিকা বয়সে মা হন। অর্থাৎ, ২২-২৬ শতাংশ ক্ষেত্রেই মায়েরা অপ্রাপ্তবয়স্ক। যে সন্তান তাঁরা প্রসব করেন তাদের ওজন অনেক ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত ওজনের চেয়ে কম। শিশুরা অপুষ্টির শিকার হচ্ছে। পরে তারা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুও হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতের ‘রাষ্ট্রীয় কিশোর স্বাস্থ্য কার্যক্রমে’র কাউন্সেলর, জেলা শিশু সুরক্ষা দফতর, জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নিয়ে কর্মশালা হয়েছে। বাল্যবিবাহ আটকাতে কাউন্সেলরদের ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
কর্মশালা শেষে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ সান্যাল বলেন, ‘‘জেলায় ২২-২৬ শতাংশ নাবালিকা মা হয়ে যাচ্ছে। এটা আটকাতে এবং নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে আমরা কর্মশালার আয়োজন করেছিলাম। কীভাবে নাবালিকা বয়সে বিয়ে ও মা হওয়া আটকানো যায়, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ব্লক স্তরেও এ নিয়ে নানা চেষ্টা চলছে।’’
জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক অর্জুন দত্ত ওই কর্মশালায় নাবালিকা বয়সে বিয়ে আটকাতে কী ধরনের আইন রয়েছে এবং তাতে কী শাস্তির বিধান রয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন। সেগুলি তুলে ধরে কাউন্সেলদের সচেতন করার পরামর্শও দেন তিনি। তবে কাউন্সেলরদের কেউ কেউ এমনও বলেন, অনেক সময় কিশোরীরাই বাড়ির অমতে অন্যত্র চলে গিয়ে বিয়ে করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy