জরিমানার পর পুলিশ ও রানাঘাট পুরপ্রধানের বাগবিদান্ডা। মঙ্গলবার রানাঘাটের কোর্ট মোড়ে। ছবি: সুদেব দাস।
মাথায় হেলমেট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না-থাকায় রানাঘাট পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীকে ছয় হাজার টাকা জরিমানা করল পুলিশ। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের সঙ্গে বিতর্কে জড়ালেন রানাঘাটের পুরপ্রধান ও পুরসভার কয়েক জন কর্মী। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘তোলাবাজি’র অভিযোগ এনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধও করেন পুরকর্মীদের একাংশ। তাতে যোগ দেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। যদিও পুলিশের পাল্টা দাবি, নিয়ম মেনেই জরিমানা করা হয়েছে।
পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ রানাঘাট শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পুরসভার কর্মী স্বরূপ দে মোটরবাইকে চেপে পুরসভা থেকে পুরপ্রধানের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। রানাঘাট কোর্ট মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পারাপারের সময় স্বরূপের মোটরবাইক থামায় পুলিশ। তাঁর মাথায় হেলমেট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স না-থাকায় ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। স্বরূপ নিজেকে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী বলে পরিচয় দেন। তবে তাতে পুলিশের জরিমানা থেকে নিস্তার মেলেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরসভার অন্য কর্মীরা। কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকের বাদানুবাদ হয় বলে অভিযোগ। শেষে ঘটনাস্থল থেকে সরে যান ওই পুলিশ আধিকারিক। স্থানীয় সূত্রে খবর, পুলিশ নিয়ম না-মেনে মোটরবাইক থামিয়ে টাকা তুলেছেন এই অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ পুরকর্মীরা ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। অবরোধের জেরে প্রায় আধঘণ্টা জাতীয় সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে রানাঘাট থানার পুলিশ এসে অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তোলে।
পুরসভার কর্মী স্বরূপ দে বলেন, ‘‘মোটরবাইক থামিয়ে পুলিশ অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। নিজেকে পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী পরিচয় দেওয়ার পরেও ছাড়া হয়নি। হেলমেট না-থাকায় ছয় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’’
পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশের বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘মোটরবাইক চেকিং করার নামে পুলিশ কোর্ট মোড়ে নির্মীয়মাণ উড়ালপুলের নীচে দাঁড়িয়ে দিনের পর দিন টাকা তুলছে। জরুরি কাজে এ দিন স্বরূপ আমার বাড়িতে নথিপত্রের সই করাতে যাচ্ছিল। কয়েক জন পুলিশ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। এই ঘটনা দীর্ঘ দিন চলতে দেওয়া যায় না।’’
পুলিশের অবশ্য দাবি, দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিনিয়ত প্রচার করা হচ্ছে। জরিমানা করা লক্ষ্য নয়। হেলমেট ব্যবহার করা, ট্রাফিক নিয়ম মেনে যানবাহন চালানোর জন্য মানুষকে সচেতন করাই মূল উদ্দেশ্য। রানাঘাট পুলিশ জেলা সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘‘পুরসভার ওই কর্মী নিজের পরিচয় প্রথমে দেননি। তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির নথিপত্র দেখতে চাওয়া হলে তিনি প্রথম পুলিশকর্মীর সঙ্গে অসহযোগিতা করেন। নিয়ম মেনেই পুলিশ কাজ করেছে। পুলিশের বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ মিথ্যাও ভিত্তিহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy