Advertisement
০৩ মে ২০২৪

গাংনাপুরে সিপিএম নেতাকে লাঠি দিয়ে মার দুষ্কৃতীদলের

বিরোধীদের একত্র করে পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনার পিছনে রয়েছেন তিনি। সেই কারণে আঁইশমালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের গৌতমপ্রসাদ মিত্রকে মঙ্গলবার রাতে গাংনাপুর থানার দেবগ্রাম এলাকায় বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অনাস্থা আনা হয়েছিল যাঁর বিরুদ্ধে সেই তৃণমূলের উপপ্রধান দীপক সিকদারের নেতৃত্বে মারধর হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন প্রহৃত গৌতমবাবুর স্ত্রী সীমা মিত্র। গৌতমবাবু নিজে গুরুতর আহত অবস্থায় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:০১
Share: Save:

বিরোধীদের একত্র করে পঞ্চায়েতে অনাস্থা আনার পিছনে রয়েছেন তিনি। সেই কারণে আঁইশমালি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের গৌতমপ্রসাদ মিত্রকে মঙ্গলবার রাতে গাংনাপুর থানার দেবগ্রাম এলাকায় বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অনাস্থা আনা হয়েছিল যাঁর বিরুদ্ধে সেই তৃণমূলের উপপ্রধান দীপক সিকদারের নেতৃত্বে মারধর হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন প্রহৃত গৌতমবাবুর স্ত্রী সীমা মিত্র। গৌতমবাবু নিজে গুরুতর আহত অবস্থায় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন। বুধবার বিকালে ওই ঘটনার প্রতিবাদে এরুলিতে সভা করে সিপিএম।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রানাঘাট ২ ব্লকের ২০ আসন বিশিষ্ট আঁইশমালি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের ১০ জন, সিপিএমের ৯ জন এবং একজন নির্দল সদস্য জিতেছিলেন। পরবর্তীকালে দীপক সিকদার নামে ওই নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়ে উপপ্রধান হন। বোর্ড গঠনের পর থেকেই প্রধান ও উপপ্রধান নিয়ে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছিল। গৌতমবাবুর নেতৃত্বে সিপিএমের ৯ জন এবং তৃণমূলের ৪ জন পঞ্চায়েত সদস্য প্রথমে প্রধান পুতুল গোলদারের বিরুদ্ধে এবং পরে উপপ্রধান দীপক সিকদাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। ২০ জন সদস্যের মধ্যে ১৩ জন সদস্য অনাস্থার পক্ষে হওয়ায় ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান উভয়েই চাপে রয়েছেন। পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকার ‘অজুহাতে’ গত ১৮ নভেম্বর প্রধানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা ভোট স্থগিত রাখে প্রশাসন। আগামী ১৭ ডিসেম্বর উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের দিন। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে না পারলে উপপ্রধানকে সরে যেতে হবে। এই প্রেক্ষিতে উপপ্রধানই ভয় দেখাতে গৌতমবাবুকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ।

আঁইশমালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এরুলিতে আদি বাড়ি গৌতমবাবুর। রানাঘাট পুরসভা এলাকার ভাংরাপাড়ায় বাড়ি ভাড়া করে থাকেন তিনি। এরুলি বাজারে তাঁর উপহারসামগ্রীর দোকান। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টা নাগাদ দোকান বন্ধ করে সাইকেলে চেপে গাংনাপুর স্টেশনে যাচ্ছিলেন গৌতমবাবু। সেখান থেকে ট্রেনে রানাঘাটে ফেরার কথা ছিল তাঁর। পথে আঁইশমালি-গাংনাপুর রাস্তার দেবগ্রাম এলাকায় কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ করে লাটি, লোহার রড দিয়ে বেধড়ক পেটায়। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন গৌতমবাবু। তাঁর চিত্‌কার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। বেগতিক বুঝে দুষ্কৃতীরা মাঠের মধ্য দিয়ে চম্পট দেয়। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে গৌতমবাবু বলেন, “দীর্ঘ ২৫ বছর রাতের ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরছি। কখনও এমন হয়নি। আসলে পঞ্চায়েতের দুর্নীতির জন্য উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছি। উপপ্রধান জানেন তিনি হেরে যাবেন। তাই ভয় দেখানোর জন্য তিনি কয়েকজনকে নিয়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। উপপ্রধান ঘটনাস্থলেও ছিলেন। এমনকী যারা মারধর করছিল, তারা বার-বার বলছিল, দেখ অনাস্থা আনলে কেমন লাগে।”

অভিযোগ অস্বীকার করে উপপ্রধান দীপকবাবু বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। ওই ঘটনার সঙ্গে আমি কোনও মতেই যুক্ত নই। ঘটনার সময় আমি সেখানে ছিলাম না। আঁইশমালিতে একটি চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম।” উপপ্রধানের বক্তব্য, “অনাস্থা ভোটে স্থগিতাদেশ আনার জন্য আমি আদালতে যাব বলে ঠিক করেছি। এর জন্য আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এই সব করব কেন?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gangnapur ranaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE