Advertisement
E-Paper

জলের জন্য হাহাকার বড়ঞায়

পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে প্রায় দু’দশক আগে বড়ঞা এলাকায় বসানো হয়েছিল পাইপ লাইন, পাম্প। শুরুতে ভালো পরিষেবা দিলেও শেষ কয়েক বছর ধরে সেই পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে। অভিযোগ, বার বার প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তিদের কাছে আবেদন জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখন পানীয় জলের অনিয়মিত পরিষেবায় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে ওই এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৫৪

পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে প্রায় দু’দশক আগে বড়ঞা এলাকায় বসানো হয়েছিল পাইপ লাইন, পাম্প। শুরুতে ভালো পরিষেবা দিলেও শেষ কয়েক বছর ধরে সেই পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে। অভিযোগ, বার বার প্রশাসনের কর্তাব্যাক্তিদের কাছে আবেদন জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখন পানীয় জলের অনিয়মিত পরিষেবায় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে ওই এলাকায়।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলের পরিষেবা তো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেটুকুও বা চালু আছে সেখানে পাইপ লাইনের কোনও মেরামতি করার প্রয়োজন থাকলে বাসিন্দাদের নিজেদের চাঁদা সেই কাজ করতে হয়। দফতরের কর্মীদের জানালেও তাঁরা বিষয়টিতে কোনও গুরুত্ব দিতে চান না। বিষয়টি জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের কর্তাদের জানা থাকলেও ওই পাম্পটি সংস্কার করে পানীয় জলের পরিষেবা দেওয়ার কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দা তপন শেখ, দুলাল দাসরা বলেন, “ভোটের আগে এলাকার নেতাদের মুখে ওই পাম্পটির পরিষেবা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিতে শোনা যায়। কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলে আর কারওই দেখা পাওয়া যায় না।”

১৯৮৫ সালে বাম আমলে বড়ঞা ও পাশ্বর্বর্তী গোপীপুর, পাঠানপাড়া, রাজনগর, মসড্ডা গ্রামে পানীয় জলের পরিষেবা দেও য়ার জন্য বড়ঞা গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় পাম্প বসানো হয়। প্রথমদিকে ওই পাম্প থেকে সকাল, দুপুর ও বিকালে নিয়ম করে নলবাহিত জলের পরিষেবা দেওয়া হত। এর ফলে এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের কষ্ট অনেকটাই কমে ছিল। কিন্তু গত এক দশক ধরে ওই পানীয় জলের অনিয়মিত পরিষেবার কারণে পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভরসা বলতে এখন পঞ্চায়েতের নলকূপগুলি।

এলাকার বাসিন্দা তপন প্রামাণিক বলেন, “নলবাহিত জলেই সংসারের যাবতীয় কাজ মিটত। কিন্তু এখন জল না মেলায় গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে নলকূপ বসিয়েছি।”

গ্রামবাসী বিকাশ গুহ বলেন, “আশির দশকে যখন জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পাইপ বসিয়ে এলাকায় জল সরবরাহ শুরু করেছিল তখন অনেকই পান পান করতে চাইতেন না। তখন প্রশাসনের তরফে মানুষকে ওই জল পানের জন্য বোঝানো হয়েছিল। আস্তে আস্তে মানুষ সেই জল পান করতে অভ্যস্থ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এখন সেই জল সরবরাহ বন্ধ। পানীয় জলের উৎস বলতে এখন কিছু নেই।”

নলবাহিত পানীয় জলের পরিষেবা যে বেহাল সে বিষয়ে অবগত আছেন স্থানীয় বিধায়ক কংগ্রেসের প্রতিমা রজক। তাঁর কথায়, “শুধু বড়ঞা নয়, পাঁচথুপী ও সাটীতারার পাম্পের সংস্কারের জন্য আমি বহুবার রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারগরি দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে বলেছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আমি ফের মন্ত্রীকে পাম্পগুলি সংস্কারের জন্য আবেদন জানাব।”

কান্দি মহকুমা আধিকারিক রাহুল মণ্ডল বলেন, “ওই এলাকার কূপগুলি অকেজো হয়ে যেতে বসেছে। নতুন করে যাতে তা বসানোর জন্য চিন্তাভাবনা চলছে। সেই মতো পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে। বর্তমানে ওই এলাকার বাসিন্দারা কী কারণে জল পাচ্ছেন না সেটা খোঁজ নিয়ে দেখব।”

ওই গ্রামের যে পানীয় জলের অভাব রয়েছে তা বিলক্ষণ জানেন স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তারা। বড়ঞার বিডিও বাদশা ঘোষাল জানান, তিনি নিজে ওই এলাকায় গিয়ে পানীয় জলের যে অভাব রয়েছে তা ঘুরে ঘুরে দেখেছেন।

তিনি বলেন, “সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের জানানোর পাশাপাশি এলাকার উন্নয়ন বৈঠকেও সমস্যার সমাধান চেয়ে আলোচনা করা হয়েছে।” এখন পানীয় জলের পেতে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তারজন্য এলাকায় একাধিক অগভীর নলকূপ বসানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান বিডিও।

কিন্তু কবে সেই নলকূপ বসানো হবে, এবং কবে পানীয় জলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন তার জন্য আপাতত হা পিত্যেশ করে বসা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের।

water crisis barayan baraya
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy