Advertisement
০৬ মে ২০২৪

জলকাদায় উধাও রাস্তা, ভোগান্তি

মরা নদীর সোঁতা নয়। সাইকেল কাঁধে নিয়ে পার হতে হয় রাস্তা। সে রাস্তা অবশ্য জল কাদায় মাখামাখি। দীর্ঘদিন মেরামতির দাবি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। প্রতিবাদ করে রাস্তার উপর ধানের চারাও পুঁতেছেন বাসিন্দারা। তবু সুরাহা হয়নি। গোকর্ণ-১ পঞ্চায়েতের পানপাড়ার কয়েক হাজার বাসিন্দার দুর্ভোগ চলছে এখনও। গোকর্ণ পাওয়ার হাউস থেকে পানপাড়া ট্রান্সফর্মার পর্যন্ত গ্রামের এক কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ দিন ধরে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে।

পানপাড়া গ্রামের রাস্তার হাল। নিজস্ব চিত্র।

পানপাড়া গ্রামের রাস্তার হাল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোকণ শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫২
Share: Save:

মরা নদীর সোঁতা নয়। সাইকেল কাঁধে নিয়ে পার হতে হয় রাস্তা। সে রাস্তা অবশ্য জল কাদায় মাখামাখি। দীর্ঘদিন মেরামতির দাবি জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। প্রতিবাদ করে রাস্তার উপর ধানের চারাও পুঁতেছেন বাসিন্দারা। তবু সুরাহা হয়নি। গোকর্ণ-১ পঞ্চায়েতের পানপাড়ার কয়েক হাজার বাসিন্দার দুর্ভোগ চলছে এখনও।

গোকর্ণ পাওয়ার হাউস থেকে পানপাড়া ট্রান্সফর্মার পর্যন্ত গ্রামের এক কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ দিন ধরে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। ওই রাস্তা মেরামতিতে কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠেছে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান কংগ্রেসের কোহিনুর বিবি জানেন রাস্তা মেরামতির আশু প্রয়োজন। তিনি বলেন, “ঢালাই রাস্তার জন্য যে খরচ হবে, তা পঞ্চায়েতের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। ফলে ঢালাই রাস্তা করার জন্য প্রকল্প তৈরি করে কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির কাছে পাঠানো হয়েছে।” কিন্তু কবে থেকে ওই রাস্তার কাজ শুরু হবে তা তিনি জানেন না।

১৪ আসনের গোকর্ণ-১ পঞ্চায়েতে কংগ্রেসের ৮টি আসন। সিপিএম এবং সিপিআই ২ টি করে আসনে, তৃণমূল ও নির্দল ১টি করে আসনে জয়ী হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১৯৮৩ সাল থেকে পঞ্চায়েত কংগ্রেসের দখলে। কিন্তু গত ৩১ বছরেও ওই রাস্তা ঢালাই করা যায়নি। প্রতি বছর ভোটের আগে নেতানেত্রীরা ওই রাস্তা ঢালাইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। কিন্তু ভোটর্র্ মিটে যেতেই প্রতিশ্রুতিও চাপা পড়ে যায়।

বিরোধী সদস্য সিপিএম-র বিলকিস বিবি বলেন, “শুধু গোকর্ণ-১ পঞ্চায়েত নয়, বর্তমানে কান্দি পঞ্চায়েত সমিতি এবং মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদে-সহ ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। তাদের গাফিলতিতে ওই রাস্তা ঢালাই হচ্ছে না। আমরা পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছি। কিন্তু প্রধান জানিয়েছেন ‘টাকা নেই’।”

বাসিন্দারা জানিয়েছেন ২০০৭ সালে একবার মোরাম ফেলা হয়েছিল ওই রাস্তায়। কিন্তু গত পাঁচ বছরে তা উঠে গিয়ে এখন হাঁটু পর্যন্ত কাদা জমে। এ দিকে ওই রাস্তা দিয়েই প্রতিদিন গোকর্ণ নিত্যগোপাল গার্লস হাইস্কুল ও গোকর্ণ প্রসন্নময়ী হাইস্কুলে যাতায়াত করতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর কোনাই বলেন, “বর্ষার সময়ে ওই পথ দিয়ে হাঁটাচলা করা যায় না। এমনকী সামান্য বৃষ্টিতেই ওই পথে হাঁটু পর্যন্ত কাদা জমে যায়। এক সময়ে ট্রাক্টর যাতায়াত করত। এখন সাইকেলও কাঁধে নিয়ে পার হতে হয়।”

এমনকী হঠাৎ অসুস্থ রোগীকে গোকর্ণ ব্লক-প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হলে ঘুরপথে যেতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা পঞ্চানন কোনাই বলেন, “গোকর্ণ মজলিস পাড়া থেকে বোলতলা পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা রয়েছে, চার চাকা গাড়ি আসে। কিন্তু বোলতলা থেকে পূর্ব দিকে পানপাড়া গ্রামে ৩০০ মিটার হেঁটে ঢুকতে হয়।” এ দিকে পঞ্চায়েত প্রধানের সাফাই, “গত নির্বাচনে পরে কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন রাস্তা ঢালাই করেছে।” উপপ্রধান তারকনাথ হাজরা অবশ্য স্পষ্ট বলেন, “ওই রাস্তার ঢালাই এবং নিকাশি নালার জন্য প্রকল্প পঞ্চায়েত সমিতিকে দেওয়া হলেও এখনও ভেটিং এবং টেন্ডার হয়নি। ফলে ঠিক কবে থেকে কাজ শুরু হবে তা বলা মুশকিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

road not visible mud water logging gokan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE