প্রকল্প মঞ্জুর হয়ে টাকা বরাদ্দ হয়ে বসে আছে। অথচ জমি অধিগ্রহণের জন্য মন্ত্রিসভার সম্মচি চাইতে এখনও প্রস্তাবই পাঠানো হয়নি! বহরমপুরের কুলবেড়িয়ায় উদ্বাস্তু কলোনির পুনর্বাসনের কাজে রাজ্য সরকারের এমন গড়িমসিতে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস প্রয়োজনে আইনি পথে যাওয়ার কথা ভাবছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার কুলবেড়িয়া মৌজার ওই উদ্বাস্তু কলোনিতে এখন রয়েছে ১৫৮টি পরিবার। তাদের পুনর্বাসনের দাবি বহু দিনের। বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই পুনর্বাসনের জন্য প্রথম তৎপরতা শুরু হয়েছিল। কিন্তু কাগজে-কলমের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়নি ১৩ বছরেও! তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে রাজ্যে সরকারে আসার পরে বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে নতুন করে উদ্যোগী হয়েছিলেন। জেলার জমি অধিগ্রহণ কালেক্টরেটের রিপোর্টও তৈরি হয়ে গিয়েছিল ২০১২ সালের মার্চে। অথচ বিধানসভার চলতি অধিবেশনে রাজ্যের ত্রাণ ও উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর জানিয়েছেন, কুলবেড়িয়ার ওই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য এখনও মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাবই পাঠানো হয়নি! এই তথ্যেই সরকারি টালাবাহানা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি।
জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারি রিপোর্ট যখন তৈরি হয়েছিল, মনোজবাবু নিজেই তখন মন্ত্রী। মোট ৫.৬৬ একর জমি অধিগ্রহণের জন্য খরচ ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫৪০ টাকা। তার মধ্যে অনুমোদিত ব্যয় ধরা হয় ৬৮ লক্ষ ৩১ হাজার ৭৬২ টাকা। ওই টাকার কতটা খরচ হয়েছে, দু’বছর পরে এ বার বিধানসভায় সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন বিধায়ক মনোজবাবু। মন্ত্রী মঞ্জুলবাবু লিখিত উত্তর দিয়েছেন, ওই প্রকল্পের খরচ ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতরের বাজেট সংস্থানের মধ্যেই ধরা আছে। কিন্তু জমি অধিগ্রহণের জন্য মন্ত্রিসভার সম্মতি পেতে প্রস্তাবটি পাঠানো হচ্ছে। তাই কোনও টাকা এখনও খরচ হয়নি! ক্ষুব্ধ মনোজবাবু বিষয়টি নিয়ে ত্রাণ ও উদ্বাস্তু দফতরের বাজেট-বিতর্কে সরব হওয়ার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই দফতরের বাজেট গিলোটিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে! একই সঙ্গে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর হাতে-থাকা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের বাজেটও গিলোটিনে যাওয়ায় এই নিয়ে বিধানসভায় এ বার আলোচনারই সুযোগ নেই!
মনোজবাবুর বক্তব্য, “১৯৭১ সাল থেকে মানুষগুলো কষ্টে কাটাচ্ছেন। তাঁদের যন্ত্রণা কমানোর জন্য আগের সরকারের মন্ত্রীকে বারবার বলেছিলাম। এই সরকারের আমলে কাগজে-কলমে কাজ শুরু হয়েও কিছুই হল না! তবে আমরা ছেড়ে দেব না!” বাম জমানায় ২০০১ সালে প্রথম বার কুলবেড়িয়ার জন্য ৩০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর হয়েছিল। তার পরে ২০০৩ সালে আবার বরাদ্দ হয়েছিল ৯ লক্ষ টাকা। বছরের পর বছর, নথির পর নথি তৈরি হওয়া সত্ত্বেও বাস্তবে অগ্রগতি কিছু হয়নি! মন্ত্রী মঞ্জুলবাবু অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, বিষয়টি তিনি দেখবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy