Advertisement
০৩ মে ২০২৪

নেই কাঁচামাল, বন্ধ উমরপুরের ৩৫টি প্লাস্টিক কারখানা

হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের দরজা বন্ধে দমবন্ধ দশা রাজ্যের প্লাস্টিক শিল্পের। কাঁচামালের ঘাটতিতে গত কয়েক দিনে মুর্শিদাবাদের উমরপুরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে অন্তত ৩৫টি ছোট ও মাঝারি মাপের প্লাস্টিক কারখানা। ওই কারখানা মালিকদের অভিযোগ, হলদিয়া মুখ ফেরানোয় রাজ্যের মাঝারি ও ছোট মাপের প্লাস্টিক শিল্পগুলি রিলায়্যান্স-এর উপরে ভরসা করেছিল। কিন্তু পশ্চিম ভারতের চাহিদা মিটিয়ে রিলায়্যান্স কর্তৃপক্ষ যে সামান্য কাঁচামাল পূর্ব ভারতের বিহার, ওড়িশা কিংবা এ রাজ্যের জন্য বরাদ্দ করেন, বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে থাকা ছোট কারখানা মালিকদের হাতে তা পৌঁছয় না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১০
Share: Save:

হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালসের দরজা বন্ধে দমবন্ধ দশা রাজ্যের প্লাস্টিক শিল্পের।

কাঁচামালের ঘাটতিতে গত কয়েক দিনে মুর্শিদাবাদের উমরপুরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে অন্তত ৩৫টি ছোট ও মাঝারি মাপের প্লাস্টিক কারখানা।

ওই কারখানা মালিকদের অভিযোগ, হলদিয়া মুখ ফেরানোয় রাজ্যের মাঝারি ও ছোট মাপের প্লাস্টিক শিল্পগুলি রিলায়্যান্স-এর উপরে ভরসা করেছিল। কিন্তু পশ্চিম ভারতের চাহিদা মিটিয়ে রিলায়্যান্স কর্তৃপক্ষ যে সামান্য কাঁচামাল পূর্ব ভারতের বিহার, ওড়িশা কিংবা এ রাজ্যের জন্য বরাদ্দ করেন, বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে থাকা ছোট কারখানা মালিকদের হাতে তা পৌঁছয় না।

এ অবস্থায় কলকাতার বড়বাজারে ছাঁট-প্লস্টিকের উপরেই ভরসা রেখেছিলেন ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পর্যাপ্ত প্লাস্টিক দানা বা কাঁচামাল সরবরাহ না থাকায় সেই সব কারখানা পুজোর আগে প্রায় বন্ধের মুখে। মুর্শিদাবাদের উমরপুর এলাকায় রয়েছে এমনই ৭৬টি ছোট মাপের প্লাস্টিক তৈরির কারখানা। পুজো এবং তার পরেই ঈদুজ্জোহা। তার আগেই, গত কয়েক দিনে ওই এলাকার অন্তত ৩৫টি প্লাস্টিক-কারখানায় উৎপাদন থমকে গিয়েছে। বছরভর বালতি, মগ, জাগ, টিফিন বাক্স ইত্যাদি তৈরি হয় উমরপুরের ওই কাখানাগুলিতে। মুর্শিদাবাদের জেলা শিল্প কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরে প্রায় ৮৫ কোটি টাকার ব্যবসা হয় এই সব প্লাস্টিক কারখানা থেকে। কাজ করেন অন্তত ৮০০ শ্রমিক। তাঁদের অধিকাংশেরই নিয়োগ চুক্তির ভিত্তিতে। ক্রমান্বয়ে কারখানা বন্ধের ফলে এলাকায় শ্রমিকদের মধ্যে এখন কাজ হারানোর আশঙ্কা।

নবাব হোসেন উমরপুরের এমনই এক মাঝারি কারখানার মালিক। তাঁর কারখানায় ১২টি মেশিনের মধ্যে ৬টি-ই বন্ধ। তিনি জানান, যে পরিমাণ কাঁচামাল রয়েছে তাতে ৩টির বেশি মেশিন চলবে না। তাও বড়জোর দু’সপ্তাহ। তিনি বলেন, “শ্রমিকদের মুখ চেয়েই ৬টি মেশিন চালু রেখেছি।” কারখানা মালিকরা জানান, কলকাতার বড়বাজারে এক নম্বর প্লাস্টিক দানার দাম ছিল কিলো প্রতি ১২২ টাকা। দু’মাসে তা বেড়ে এখন ১৫০ টাকা কিলোগ্রাম।

প্লাস্টিক পণ্য নির্মাতাদের সংগঠন ইন্ডিয়ান প্লাস্টিকস ফেডারেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রোকেমের কাঁচামাল না-পাওয়ায় ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অন্তত ২০০টি প্লাস্টিক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ইন্ডিয়ান প্লাস্টিকস ফেডারেশনের সভাপতি প্রদীপ নায়ারের দাবি, “রাজ্যের প্লাস্টিক শিল্পে অন্তত ৫০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। পেট্রোকেম দ্রুত না-খুললে এঁদের রুজির পথও বন্ধ হয়ে যাবে।”

রাজ্যে বড় শিল্পে বিনিয়োগের খরা অব্যাহত। এই খামতি ঢেকে দিতে রাজ্য সরকার যখন ছোট ও মাঝারি শিল্প গড়ে তোলার উপর জোর দিচ্ছে, তখন পেট্রোকেমের অনুসারি শিল্পের এই দশা শিল্পমহলে নতুন সংশয় তৈরি করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

plastic factory umarpur raw metarials unavailable
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE