করিমপুর দমকল কেন্দ্রে চলছে প্রশিক্ষণ। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক।
বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পাট খেত। সে খেতের ফসল তোলার পর সবথেকে ভয়ের বিষয় আগুন। দুর্ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষ ন্যূনতম ব্যবস্থাটুকুও করে উঠতে পারেন না। দমকলে খবর দেওয়া হলেও, অনেক সময়ই বাহিনী পৌঁছতে পৌঁছতে পুড়ে ছাই হয়ে যায় সব। এ অভিজ্ঞতা নতুন কিছু নয়। করিমপুর বা জেলার অন্যান্য প্রত্যন্ত এলাকায় প্রতি বছরই এমন ঘটনা ঘটে থাকে বেশ কয়েকটি। তা নিয়ে দমকল বাহিনীর আক্ষেপেরও শেষ নেই। তাই এলাকার যুবক যুবতীদের অগ্নিনির্বাপণ নিয়ে সচেতন করতে করিমপুরে শুরু হয়েছে প্রশিক্ষণ শিবির।
শুধু অগ্নিকাণ্ড নয়, যে কোনও বিপর্যয় মোকাবিলায় ‘অগ্নি নির্বাপণ ও ব্যবস্থাপন’ বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির চলছে করিমপুর অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরি পরিষেবা কেন্দ্রে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, করিমপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং করিমপুর অগ্নিনির্বাপণ দফতরের প্রয়াসে বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত চলবে এই শিবির। তেহট্টের মহকুমা শাসক অর্ণব চট্টোপাধ্যায় জানান, “চারদিনের এই শিবিরে জেলা সিভিল ডিফেন্স ও দমকল বাহিনী প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। প্রথম পর্বে করিমপুর ১ ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ও করিমপুর ২ ব্লকের একটি পঞ্চায়েতের মোট ৭০ জন যোগ দিয়েছেন। আগামী দিনে করিমপুর ২, তেহট্ট ১ ও তেহট্ট ২ ব্লকের ছেলে মেয়েদের ও এ ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাতে সকলেই উপকৃত হবেন।”
মূলত প্রাথমিক কয়েকটি বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে। কী কী কারণে আগুন লাগতে পারে, আগুন ও অন্যান্য বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় নানা রকমের সরঞ্জামের সঙ্গেও পরিচয় করানো হচ্ছে। সার্চ ক্যামেরা, রোপ লঞ্চার, কাটার-এর সাহায্যে কী ভাবে উদ্ধার করা হয় দুর্গত মানুষকে সে বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। করিমপুর অগ্নিনির্বাপণ দফতরের ওসি সুখেন সরকার বলেন, “তেহট্ট ও ডোমকল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় আগুন নেভানোর কাজে যেতে হয় আমাদের। খবর পাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে আমরা রওনা দিই। তবুও কখন একাধিক অগ্নিকাণ্ড এক সময়ে ঘটলে সমস্যা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রাথমিক কাজটা শুরু করতে পারলে সুবিধা হয়।”
তাঁর দেওয়া হিসেব অনুযায়ী মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১৪ সালে এই এলাকায় প্রায় ৯৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৫ জানুয়ারি মাসে ছ’টি, ফেব্রুয়ারি মাসে সাতটি ও মার্চ মাসের এখনও পর্যন্ত পাঁচটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গিয়েছে। আগামী তিনমাসে আরও বেশি অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা। সে ক্ষেত্রে আজকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারবে। প্রাথমিক ভাবে এলাকার মানুষকে সচেতন করার কাজটিও তাঁরা করতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy