দুর্গাপুজোর বিসর্জনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন চার জন। তাঁদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শনিবার পাশাপাশি দুই গ্রামের দু’টি পুজো কমিটির সদস্যদের মধ্যে গণ্ডগোল বাঁধে হাঁসখালি বিডিও অফিসের সামনে। ওই দিন রাত আটটা নাগাদ গোবিন্দপুর শিহরণ ক্লাব ও পাশের গ্রামের ভোরেরঘাট বারোয়ারির সদস্যরা পরস্পরের উপর বাঁশ, লোহার রড নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। গোবিন্দপুর শিহরণ ক্লাবের সভাপতি মানব রায় বলেন, প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েই এই আক্রমণ। কিন্তু ভোরেরঘাটের সম্পাদক অরবিন্দ ঘোষ বলেন, “রাস্তা আটকে মণ্ডপ করে শিহরণ ক্লাব। বিসর্জনের সময় ওদের মণ্ডপে আমাদের ভ্যানের ধাক্কা লাগতেই অশান্তির শুরু। আমাদের বেধড়ক পিটিয়েছে ওদের ছেলেরা।” অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এ দিকে রবিবার সকালে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় দু’ঘণ্টা কৃষ্ণনগর-বগুলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হাঁসখালি থানার পুলিশের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ উঠে যায়।
বিসর্জনের পরে বাড়ি ফেরার পথে চার কিশোরীর শ্লীলতাহানি ও তাদের মারধর করার প্রতিবাদে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন শতাধিক মহিলা-সহ সুতি এলাকার বাসিন্দারা। শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত সুতি থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরে পুলিশ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “বাকিদের ধরতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।”
শনিবার অরঙ্গাবাদ কলেজ পাড়ার একটি ক্লাবের প্রতিমা নিরঞ্জন করতে সন্ধ্যায় শোভাযাত্রা বের হয়। ক্লাবকর্তারা জানান, শোভাযাত্রা বেরোনোর পর থেকেই কয়েক জন যুবকের অশালীন আচরণ তাঁদের নজরে আসে। মোটরবাইকে চেপে তারা শোভাযাত্রার পেছনে আসছিল। মহিলাদের অশালীন কথাবার্তাও বলছিল। ক্লাবের লোকজন ওই ঘটনার প্রতিবাদ করলে দুষ্কৃতীরা তাঁদের উপর চড়াও হয়। ক্লাবের অন্যতম কর্তা অনিমেষ সাহা বলেন, “বিসর্জন শোভাযাত্রায় পুলিশ-কর্মীরা হাজির থাকলেও তাঁরা তেমন কিছুই করেননি।” তিনিই জানান, রাত ৮ টা নাগাদ গঙ্গার পাড়ে প্রতিমা পৌঁছয়। কয়েকজন কিশোরী গঙ্গার ঘাটে না গিয়ে বাড়ির পথে ফিরে যায়। তখনই ওই দুষ্কৃতীরা কিশোরীদের উপর চড়াও হয়। তাদের শ্লীলতাহানি করে। চিৎকার শুরু করলে দুষ্কৃতীরা তাদের মারধরও করতে থাকে। খবর পেয়ে ক্লাবের লোকজন ছুটে এলে তারা পালিয়ে যায়। এরপরই স্থানীয় লোকজন অভিযোগ জানাতে সুতি থানায় যায়। অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের অভিযোগ নিতে রাজি হয়নি। উত্তেজিত জনতা থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ওসি আসেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভের পর ছয় জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নেয় পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক বলেই পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করেছিল। যদিও জঙ্গিপুর লোকসভা এলাকার সভাপতি ও বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “অভিযুক্তরা কেউই তৃণমূলের কর্মী নন। বরং সিপিএমের সঙ্গে যোগ রয়েছে তাঁদের। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছে।” সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অমল চৌধুরী বলেন, “এক সময় অভিযুক্তরা সিপিএম করলেও এখন তারা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে।” কংগ্রেসের সুতি-২ ব্লকের সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, “অভিযুক্তদের প্রায়ই তৃণমূলের সভা, সমিতিতে দেখা যায়। তাই পুলিশ অভিযোগ পেয়েও সক্রিয় হয়নি।”