Advertisement
E-Paper

শুরু টি২০ বিশ্বকাপ, বেসবল, বাস্কেটবলপ্রেমী আমেরিকায় ছাপ ফেলতে পারবে ক্রিকেট?

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে রবিবার ভোর থেকে। আমেরিকা এবং কানাডা নামবে প্রথম ম্যাচে। বেসবল, বাস্কেটবল-প্রেমী আমেরিকায় ক্রিকেট কি কোনও ছাপ ফেলতে পারবে?

cricket

ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে মাতছে নিউ ইয়র্ক। ছবি: রয়টার্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ১২:১১
Share
Save

বেসবল, বাস্কেটবল, ফুটবল।

আমেরিকার খেলাধুলোর জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই তিন খেলাই। আমেরিকায় ক্রীড়াপ্রেমী যে কোনও মানুষের সঙ্গে কথা বললে বা সে দেশের খেলাধুলোর ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে এই তিনটি খেলার নামই সবার আগে উঠে আসবে। সকার (বাকি বিশ্বে যে খেলা ফুটবল নামে পরিচিত, আমেরিকায় সেটাই সকার) ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তায় থাবা বসাচ্ছে। কিন্তু আকর্ষণের কেন্দ্রে শুধুই লিয়োনেল মেসি। রবিবার (স্থানীয় সময় শনিবার) শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ কী ভাবে জায়গা করে নেবে এই ভিড়ে?

আমেরিকায় কোনও ক্রিকেটবোদ্ধা নেই বলে যাঁরা ভাবেন, তাঁদের জানা দরকার যে ১৮৮০-র দশকের মাঝামাঝি সে দেশে বেশ জনপ্রিয় ছিল ক্রিকেট। তখনও বাকি বিশ্বে তা সে ভাবে জনপ্রিয়তাই পায়নি। স্টেডিয়ামে বসে আমেরিকানদের খেলা দেখার দৃশ্য গুগ্‌লে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। ইতিহাস বলছে, ১৮৪৪ সালে আমেরিকার মাটিতে প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছিল। নিউ ইয়র্কে আমেরিকা এবং কানাডার মধ্যে হয়েছিল সেই খেলা। ঘটনাচক্রে, এই দু’টি দেশই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলল। সন্দেহ নেই যে আয়োজকেরা ইতিহাস ফিরিয়ে আনতে চেয়েছেন।

আমেরিকায় বহু আগে ক্রিকেট শুরু হলেও তা জনপ্রিয়তা হারাল কেন? মূল কারণ আরও দ্রুততম খেলা বেসবল। ১৮৬০ সালে গৃহযুদ্ধের সময় বেসবল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং অচিরেই ক্রিকেট ভুলে লোকে বেসবলের প্রেমে পড়েন। কালক্রমে বাস্কেটবল-সহ বাকি খেলাগুলিও জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু ক্রিকেট? এখনও আমেরিকার ক্রীড়া মানচিত্রে তার ঠাঁই হয়নি।

এত দ্রুত যে আমেরিকাবাসীর মনে ক্রিকেট ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে এটা মানছেন না ব্রায়ান লারা। তিনি নিজেই জানালেন, মায়ামির সমুদ্রসৈকতে একা ঘুরে বেড়ালেও তাঁকে একজন আমেরিকান চিনতে পারবে না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই বিনোদন। আমেরিকানরা ওটাই চায়। বাকি ফরম্যাট কি এখানে জনপ্রিয় হবে? আমি জানি না।”

লারার ব্যাখ্যা, “ক্রিকেট নিয়ে অনেক আমেরিকানের সঙ্গেই কথা বলেছি। ওরা বলেছে, তোমরা একটা ম্যাচ পাঁচ দিন ধরে খেলো, সেটাও ড্র হয়! তা হলে এই খেলার মানে কী? ফলে আমার মতে, ক্রিকেটকে জনপ্রিয় করে তোলা বেশ কঠিন।”

বিশ্বকাপের ৫৫টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র ১৬টি হবে আমেরিকায়। নিউ ইয়র্ক, ডালাস এবং ফ্লোরিডায় হবে ম্যাচ। বাকি সব ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ে। সপ্তাহ দুয়েকের প্রতিযোগিতায় কি সত্যিই আমেরিকানদের মনে ছাপ ফেলা সম্ভব? ‘থার্ড ম্যান’, ‘গালি’, ‘ডিপ ফাইন লেগ’-এর সঙ্গে এত তাড়াতাড়ি অভ্যস্ত হতে পারবেন তাঁরা?

এখানেই সঠিক চালটা চেলেছে আইসিসি। তারা বিনোদনমূলক ক্রিকেট দিয়েই আমেরিকার মাটিতে ছাপ ফেলতে চাইছে। ভরসা আরও বাড়িয়েছে লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিক্সে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তি। আমেরিকানরা অলিম্পিক্সের খেলাগুলি নিয়ে বেশ স্পর্শকাতর। তাঁদের দেশ অলিম্পিক্সে ক্রিকেট খেলবে, এটা দেখার জন্যই মানুষ স্টেডিয়ামে ভিড় করতে পারেন।

ক্রিকেটের সঙ্গে আমেরিকানদের আত্মীকরণের চেষ্টায় কসুর করছে না আইসিসি। উপমহাদেশীয় জনসংখ্যার কথা মাথায় রেখে ভারত এবং পাকিস্তানের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচ রাখা হয়েছে আমেরিকায়। ফর্মুলা ওয়ান, এনবিএ-র মতো খেলাধুলোকে ক্রিকেটের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উসাইন বোল্টকে দূত বানানো হয়েছে।

তাদের ভরসা আরও বাড়িয়েছে অলিম্পিক্স। আমেরিকার ক্রিকেট দল অলিম্পিক্সে খেলবে, এটা দেখার জন্যই অনেকে স্টেডিয়ামে ভিড় করতে পারেন। তবে বেসবল, বাস্কেটবল, ফুটবলের মাঝে ক্রিকেটকে স্থান করে নিতে হলে তৃণমূল স্তরে উন্নতির দিকে নজর দিতে হবে। বোল্ট বলেছেন, “আমেরিকায় ক্রিকেট জনপ্রিয় হতেই পারে। খেলাটার উপস্থিতি যত বেশি হবে তত মানুষ আগ্রহী হয়ে পড়বে।”

আমেরিকার ক্রিকেট সংস্থার প্রধান বেণু পিসিকে জানিয়েছেন, আমেরিকায় ক্রিকেট জনপ্রিয় করতে চেষ্টার কসুর করছেন না তাঁরা। তবে অলিম্পিক্সে খেলার সুযোগ পাওয়াই সমর্থকদের বেশি প্রলোভিত করছে। পিসিকে বলেছেন, “এখন ক্রিকেট বুদ্ধিজীবীদের খেলা। কিন্তু বিপণন এবং প্রচারের মাধ্যমে আমরা তাকে সাধারণ মানুষের কাছেও নিয়ে যেতে চাইছি। বিশ্বকাপের মাধ্যমে খেলাটাকে দেশের চার কোনায় ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি শুনতে পাচ্ছি যে অনেকেই ইদানীং ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। আমেরিকার লোক খেলাধুলো ভালবাসে। অলিম্পিক্স ভালবাসে। এটাকেই কাজে লাগাতে হবে।”

আমেরিকার ক্রিকেট দল এখনও পুরোপুরি পেশাদার নয়। ক্রিকেটের বাইরে খুচরো কাজ করে সংসার চালান দলের সদস্যেরা। ক্রিকেট জনপ্রিয় হলে সেখান থেকে আরও বেশি অর্থ উপার্জনের পথ খুলে যাবে। পাশাপাশি, ক্রিকেট চালু করতে হবে স্কুলে স্কুলে। ক্রিকেট খেলেও যে অর্থ উপার্জন করা যায়, এটা বোঝাতে হবে বাবা-মায়েদের। পিসিকে মানছেন, কাজ শক্ত। কিন্তু অসম্ভব নয়। বিশ্বকাপ আমেরিকায় ক্রিকেটের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে এটাই তাঁর বিশ্বাস। তার শুরুটা হয়ে গেল রবিবারই।

T20 World Cup 2024 USA Baseball Basketball

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।