Advertisement
০৯ মে ২০২৪

মেয়েকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে অপহরণ বাবাকে, গ্রেফতার

যার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবেন, আমন্ত্রণ ছিল তারই বাড়িটা এক বার চোখের দেখা দেখে আসার। জামাইষষ্ঠীর দিন সে প্রস্তাব দিয়েছিল খোদ ‘হবু জামাই’। কিন্তু মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের বাসিন্দা জামির মির্জা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে অপহৃত হতে হবে তাঁকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৪ ০২:১৯
Share: Save:

যার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেবেন, আমন্ত্রণ ছিল তারই বাড়িটা এক বার চোখের দেখা দেখে আসার। জামাইষষ্ঠীর দিন সে প্রস্তাব দিয়েছিল খোদ ‘হবু জামাই’। কিন্তু মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের বাসিন্দা জামির মির্জা দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে অপহৃত হতে হবে তাঁকে। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার রাতে মুক্তিপণের টোপ দিয়ে ধুলিয়ান থেকে ওই প্রৌঢ়কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁকে অপহরণের অভিযোগে ধরা হয়েছে ‘হবু জামাই’ জিয়ার শেখের তিন সাগরেদ সমর ঘোষ, রাজকুমার মণ্ডল ও পলাশ মণ্ডলকে। তবে জিয়ার পলাতক।

পুলিশ সূত্রের খবর, জিয়ার শেখ কর্মসূত্রে পুণেতে থাকত। সেখানেই তার সঙ্গে আলাপ হয় মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের পলষণ্ডার বাসিন্দা সাবির মির্জার। সাবির পুণেতে কসাইয়ের কাজ করেন। তাঁর দোকানে মাঝে-মধ্যে মুরগির মাংস নিতে আসত জিয়ার। সামশেরগঞ্জ থানার ধুলিয়ানে বাড়ি বলে জানিয়েছিল সে। বছরখানেক আগে সাবিরের অনুপস্থিতিতে পলষণ্ডার বাড়িতে এক বার হাজিরও হয় জিয়ার। সাবিরের বাবা জামির মির্জা সে বার ছেলের কাছে অপরিচিতের খোঁজখবর নিয়ে নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন। গত ৪ জুন সকালে ফের সাবিরের অনুপস্থিতিতে জিয়ার পলষণ্ডার বাড়িতে হাজির হয়। কথায়-কথায় জামিরের বড় মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয় জিয়ার। ছেলের পরিচিত ‘সৎ পাত্র’ পেয়ে দুই মেয়ের বাবা জামির রাজি হয়ে যান। দিনমজুর পরিবারটি আয়োজন করে জামাই আদরের ভোজের।

জামিরের কথায়, “খেয়েদেয়ে ছেলেটা বলল, ‘যার সঙ্গে দু’দিন পরে মেয়ের বিয়ে দেবেন, তার বাড়িটা দেখে আসবেন না’। এ প্রস্তাবে কারও সন্দেহ হয় বলুন!” পুলিশকে জামির জানিয়েছেন, জিয়ার মোটরবাইকে চাপিয়ে প্রথমে তাঁকে ধুলিয়ানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। পরে মত বদলে সে নিজের আদি বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার পারদেওনাপুর গ্রামে নিয়ে যাবে বলে প্রস্তাব দেয়। জামির তাতে না করেননি। কিন্তু পারদেওনাপুরে পৌঁছতেই জনা সাতেক মিলে তাঁকে বেঁধে নিয়ে যায় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে। সে রাতেই পলষণ্ডার বাড়িতে ফোন করে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। বলা হয়, ধুলিয়ানের টাঙা স্ট্যান্ডে এসে টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে হবে জামিরকে। শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতীদের দাবি অনুযায়ী জামিরের বাড়ির লোকজনকে নিয়েটাঙা স্ট্যান্ডে যায় সাদা পোশাকের পুলিশ। সেখানেই ধরা হয় তিন জনকে। জামিরকেও পাওয়া যায়। তবে জিয়ার ওই চত্বরে উপস্থিত ছিল না।

শনিবার কান্দি আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের চার দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। মুর্শিদাবাদের সুপার হুমায়ুন কবীর জানান, ধৃতদের জেরা চলছে।

পরিবারের কাছ থেকে ফোনে ঘটনা জেনে সাবির প্রায় হতবাক। বলেন, “জিয়ার যে আমার বাড়ি গিয়ে এই কাণ্ড করবে ভাবতেপারছি না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kandi jiyar sekh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE