Advertisement
E-Paper

স্থায়ী বাজার নেই, রাস্তা জবরদখল জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জে

শতাধিক বছরের পুরনো জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা। অথচ ভাগীরথীর দুই পাড়ের এই যমজ শহরে আজও গড়ে উঠেনি কোনও সরকারি বাজার। এলাকার প্রায় সব বাজারই বসে রাস্তা দখল করে। এতে একদিকে যেমন রাস্তায় যানজট বাড়ে, অসুবিধা হয় সাধারণ পথচারী থেকে অফিসযাত্রীদের। তেমনই অসুবিধা হয় বাজারের ক্রেতা বিক্রেতা সকলেরই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০১:০৫
রাস্তাতেই বসেছে বাজার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

রাস্তাতেই বসেছে বাজার। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

শতাধিক বছরের পুরনো জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা। অথচ ভাগীরথীর দুই পাড়ের এই যমজ শহরে আজও গড়ে উঠেনি কোনও সরকারি বাজার। এলাকার প্রায় সব বাজারই বসে রাস্তা দখল করে। এতে একদিকে যেমন রাস্তায় যানজট বাড়ে, অসুবিধা হয় সাধারণ পথচারী থেকে অফিসযাত্রীদের। তেমনই অসুবিধা হয় বাজারের ক্রেতা বিক্রেতা সকলেরই।

জিয়াগঞ্জের গাম্ভীলা শ্রীপাট, অর্থাৎ বড়গোবিন্দবাড়ির ভিতরে একটি তহবাজার বা সব্জি বাজার বসে। ট্রাস্টির মালিকানায় থাকা ওই বাজারের বয়স পঞ্চাশ বছর ছাড়িয়ে গিয়েছে। বয়সের সঙ্গে সঙ্গেই বেড়েছে বাজারের আয়তন। গোবিন্দবাড়ি ছাড়িয়ে সে বাজার ছড়িয়ে পড়েছে জিয়াগঞ্জ বাজার মোড় থেকে বেগমগঞ্জের বারোয়ারিতলা পর্যন্ত প্রায় ৩০০ ফুট দীর্ঘ রাস্তায়। স্থানীয় হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিক সমীর ঘোষ জানান, কয়েক শতাব্দী আগে জিয়াগঞ্জ ছিল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র। প্রাচীন সেই বন্দরনগরের অপ্রশস্ত রাস্তার দু’পাশ জবরদখল করে সব্জি বাজার বসে। সব সময় সেখানে যানজটে জেরবার হতে হয় হাসপাতাল, স্টেশন ও স্কুল-কলেজমুখী পথচারীদের। ওই এলাকারই বাসিন্দা জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার বিরোধীদল কংগ্রেসের কাউন্সিলর মনোজ সরকার। মনোজবাবু বলেন, “খুচরো ব্যবসায়ী ছাড়াও ওই রাস্তা দখল করে খুব ভোর থেকে বসে যায় সব্জির পাইকারি বাজার। এ সব বাজার বন্ধ করতে হলে পুরসভা, অথবা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আধুনিক মানের তহবাজার গড়ে তোলা খুব জরুরি প্রয়োজন।”

আরও আছে। জিয়াগঞ্জের রাজা প্রয়াত সুরেন্দ্রনারায়ণ সিংহের মালিকানায় থাকা প্রায় দেড়শো বছরের প্রাচীন ‘রাধামোহন বাজার’ যেমন। এটি মূলত মাছ, পান, চাল ও সব্জির বাজার। আগে চারদিক ঘেরা বাজারটির মাথায় ছাউনি থাকলেও কয়েক দশক আগে একটি অংশ আগুনে পুড়ে যায়। তারপর সংস্কার না হওয়ায় ওই বাজারের পোড়ো অংশটির মাথায় কোনও ছাউনি নেই। ওই বাজারে ঢোকার দু’টি ফটকের মধ্যে একটির মুখে লেগেই থাকে যানজট।

এ ছাড়াও রয়েছে সদরঘাটের কাছে, ফুলতলা বাসস্টপের কাছে, আমাইপাড়ায়, বাগডহরা ও আজিমগঞ্জ সিটি স্টেশন লাগোয়া রেল ও পুরসভার জায়গা জবরদখল করে খোলা আকাশের নীচে গড়ে ওঠা মোট পাঁচটি তহবাজার। স্থানীয় সব্জি ব্যবসায়ী দয়ারাম মণ্ডল বলেন, “সরকারি কোনও বাজার না থাকায় বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নীচে সব্জির ঝুড়ি নিয়ে আমাদের বসতে হয়। রোদে-বৃষ্টিতে খদ্দেরের সঙ্গে আমারও নাজেহাল হই। তার উপরে আছে দু’পাঁচ টাকার তোলাবাজির নিত্যদিনের জুলুমবাজি। সরকারি বাজার থাকলে আমরা খাজনা দিয়েই সেখানে বসতাম।”

ব্যবসায়ীরা চাইলেও সরকারি বাজার গড়ে উঠেনি। এ বিষয়ে পুরপ্রধান শঙ্কর মণ্ডল বলেন, “এই পুরসভার মালিকানায় থাকা এক চিলতে জমিও আজ আর ফাঁকা নেই। ফলে প্রয়োজন সত্ত্বেও পুরসভার উদ্যোগে তহবাজার গড়া সম্ভব হয়নি।” তিনি জানান, আজিমগঞ্জে ভাগীরথীর পাড় লাগোয়া খাস জমি রয়েছে ৬ একর। ওই জমি পুরসভাকে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছে পুরসভা। ওই জমি পাওয়া গেলে বড় আকারের পাইকারি ও খুচরো বাজার তৈরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পুরপ্রধান।

জিয়াগঞ্জের গাম্ভীলা শ্রীপাট অর্থাৎ বড়গোবিন্দবাড়িতেও দু’বিঘা জমি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। শঙ্করবাবু বলেন, “ওই জমি পুরসভার কাছে বিক্রি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিক্রি না করলে পুরসভার পক্ষ থেকে বিনা শর্তে বাজারের উপযোগী পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও সাড়া মেলেনি।” বড়গোবিন্দবাড়ির অন্যতম ট্রাস্টি ভোলানাথ রায় অবশ্য পুরপ্রধানের কথা অস্বীকার করে বলেন, “পুরসভার পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল ওই জমির ৩ ভাগ পুরসভাকে দেওয়া হলে বাকি এক ভাগের পরিকাঠামো নির্মাণ করে দেওয়া হবে। ওই প্রস্তাব মেনে নিলে অর্থাভাবে ঠাকুরের ভোগ-পুজো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।”

no fixed place market jiaganj azimganj
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy