Advertisement
১৭ মে ২০২৪

সতীর্থ গায়কদের নিয়ে জলসা মাতালেন ইন্দ্রনীল

মুর্শিদাবাদে লালবাগের সভায় এসে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “গান শুনবেন নাকি গুন (GUN), আপনাদেরই ঠিক করতে হবে। আমি ইন্দ্রনীল সেনকে বহরমপুরে পাঠিয়েছি গান শোনানোর জন্য।” রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড ইয়ংস কর্নার ময়দানে জলসায় গান গেয়ে দলনেত্রীর কথা রাখলেন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন।

মিছিলে ইন্দ্রনীল। নিজস্ব চিত্র।

মিছিলে ইন্দ্রনীল। নিজস্ব চিত্র।

শুভাশিস সৈয়দ
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৩২
Share: Save:

মুর্শিদাবাদে লালবাগের সভায় এসে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “গান শুনবেন নাকি গুন (GUN), আপনাদেরই ঠিক করতে হবে। আমি ইন্দ্রনীল সেনকে বহরমপুরে পাঠিয়েছি গান শোনানোর জন্য।”

রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় বহরমপুর বাসস্ট্যান্ড ইয়ংস কর্নার ময়দানে জলসায় গান গেয়ে দলনেত্রীর কথা রাখলেন বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন। সেই সঙ্গে গান গেয়ে কবিতা শুনিয়ে মঞ্চ মাতালেন সতীর্থ শিবাজি চট্টোপাধ্যায়, অরূন্ধতী হোমচৌধুরী, সৈকত মিত্র, নাজমুল হক ও সতীনাথ মুখোপাধ্যায়।

তার আগে রবিবারের ছুটির সকালে ইন্দ্রনীলের সমর্থনে বহরমপুর শহরে তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি বর্ণাঢ্য মিছিল বেরয়। ওই মিছিলে পায়ে-পা মেলান কলকাতা থেকে আসা ওই শিল্পীরা। ডাকবাদ্য-সহযোগে মিছিল শুরু হয় ঐতিহাসিক বহরমপুর গ্রান্টহল থেকে। পরে কাদাই-রানিনবাগান মোড় হয়ে ইন্দ্রপ্রস্থ ছুঁয়ে খাগড়া চৌরাস্তা মোড়ে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মিছিলে কয়েক কিলোমিটার পথ হাঁটেন শিল্পীরা।

গায়ক শিবাজি চট্টোপাধ্যায়ের পরনে ছিল ধুতি-পাঞ্জাবি। গায়ক সৈকত মিত্র ও নাজমুল হক ছিলেন ডেনিম জিন্স ও ফুলহাতা সাদা কুর্তায়, পাজামা-পাঞ্জাবিতে সতীনাথ মুখোপাধ্যায়। সকালের প্রখর রোদে সকলেই ঘেমেনেয়ে যান। পরে মিছিল থেকে সরাসরি তাঁরা গাড়িতে করে চলে যান লালদিঘির পারিজাত আবাসনে চতুর্থ তলায় প্রায় হাজার স্কোয়ার ফুটের ইন্দ্রনীলের ফ্ল্যাটে। সেখানে পরে যোগ দেন অরূন্ধতী হোমচৌধুরী। সমবেত ভাবে সন্ধ্যার গানের জলসার রেওয়াজ করেন সকলে। দীর্ঘ দিন ভোট-প্রচারে ব্যস্ত থাকায় গানের রেওয়াজ করার সময় ওঠেনি বহরমপুরের তৃণমূল প্রার্থীর। এদিন তাই শিল্পী-সঙ্গীদের কাছে পেয়ে কোলের কাছে হারমোনিয়াম টেনে ইন্দ্রনীলবাবু গান ধরলেন“ধরো হাল শক্ত হাতে, ভয় কি নবির সাথে...”

গানের অবসরে শিবাজিবাবু বলেন, “ইন্দ্রনীল আমাদের সাথী গায়ক। বহরমপুর আসনটি এমনিতেই সাংঘাতিক কঠিন। সেই আসনে লড়াই করার মনোবল অবশ্যই ইন্দ্রনীলের আছে। আমরা এসেছি তার মনোবলকে আরও চাঙ্গা করতে। ভীষণ আবেগের জায়গা থেকে আমরা আজ ওর পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। সেই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আমাদের যে সমর্থন তা-ও বহরমপুরের মানুষকে জানাতে এলাম। ফলে রাজনীতি নেই বলব না, রাজনীতি অবশ্যই আছে। তবে তার অনুপাত কম, প্রাণের টান বেশি রয়েছে।”

সৈকত মিত্র বলেন, “গত কয়েক বছরে মিছিলে হাঁটার জন্য তো কম আমন্ত্রণ আসেনি। কিন্তু যাইনি। সেই অর্থে কোনও রাজনৈতিক মিছিলে এই প্রথম হাঁটলাম।” সৈকতের কথায়, “আমার সঙ্গে ইন্দ্রনীলের বন্ধুত্ব দীর্ঘ দিনের। তখনও আমরা কেউ গায়ক হয়ে উঠিনি। বহরমপুরে আসার পিছনে সেই ফেলো ফিলিং কাজ করেছে।”

সংযোজক তথা আবৃত্তিকার সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “দিদির খুব পছন্দের মানুষ ইন্দ্রনীল। আরও বড় কোনও জায়গায় প্রজেক্ট করবেন বলেই হয়তো এই কঠিন আসনে তাঁকে দাঁড় করিয়েছেন। রাজনৈতিক কোনও ছত্রছায়ায় এই প্রথম আমার পথে নামা।”

লোকগায়ক নাজমুূলের বাবা প্রয়াত জার্জিজ হোসেন। তিনি দীর্ঘ দিন সিপিএমের ভগবানগোলা জোনাল কমিটির সম্পাদক পদে ছিলেন। কাকা মোজাম্মেল হক মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের নির্দল প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রী প্রয়াত ছায়া ঘোষকে পরাজিত করেন। বামপন্থী ঘরানায় বেড়ে ওঠা নাজমুূল অবশ্য বলেন, “সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখার মানুষকে প্রার্থী করার মধ্যে দিয়েই দিদির স্বচ্ছ ভাবনা আমাকে ইন্দ্রনীলদার পাশে নিয়ে এসে দাঁড় করিয়েছে।”

যার জন্য আসা সেই ইন্দ্রনীল কোলে বালিশ টেনে নিয়ে বলেন, “ভোট প্রচারে যেখানেই গিয়েছে মানুষের দাবি ছিল গান শোনার। তাঁদের গান শোনাবো বলে কথাও দিই। অনেক তো বাক-যুদ্ধ হল। এবার বিনোদন হোক। বহরমপুরবাসীকে নববর্ষের উপহার হিসেবে ওই গানের অনুষ্ঠান। তবে আমি কাউকে ডাকিনি। এরা সকলেই নিজের থেকে এসেছেন।” মান্না দে-র বিখ্যাত গানটা ধরেন ইন্দ্রনীল ‘কী চেয়েছি আর, কী যে পেলাম।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

suvasish saiyad berhampore indranil sen
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE