কৃতিত্ব: কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের স্বীকৃতি বিজ্ঞানীকে। —নিজস্ব চিত্র।
বাবার মৃত্যুর সময় বাড়ি আসতে পারেননি বিজ্ঞানী নন্দগোপাল সাহু। শেষ দেখা হয়নি বাবার সঙ্গে। সারা জীবনের খেদ থেকে গেছে। উপায়ও ছিল না। নৈনিতালে অধ্যাপক পদে নিয়োগের দিন পনের আগের ঘটনার কথা জানাচ্ছিলেন বিজ্ঞানী। বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজে নিয়োগের দিনেই বাবার শেষ কাজ হয়। সে এক আশ্চর্য পরিস্থিতি। বলছিলেন বিজ্ঞানী। তাঁর কথায়, ‘‘একদিকে বাবার শ্রাদ্ধ। আমার জীবনের একটা পর্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে বাড়িতে। অন্যদিকে আমার জীবনের অন্য অধ্যায়ের শুরু। কিন্তু কিছুই করার ছিল না।’’
বাবাকে শেষ না দেখার কষ্ট এখনও বয়ে চলেন তিনি। কিন্তু থেমে নেই নন্দগোপাল সাহু। দেশকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে কাজ করে চলেছেন। তার পাশাপাশি জল পরিশ্রুতকরণের কাজও চালিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাজ আইআইটি-তে গড়ে উঠেছে ওয়াটার টেকনোলজি সেন্টার বা ওয়াটার ইনোভেশন সেন্টার। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি তার উদ্বোধন হয়। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষবর্ধন। শুরুতেই পুরস্কারও পেয়েছে এই প্রকল্প। নন্দগোপাল এই সেন্টারে একজন পরিদর্শক এবং তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করেন। নয়টি প্রতিষ্ঠান এক যোগে জল নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। প্লাস্টিক থেকে ডিজেল, গ্রাফিন নিয়ে কাজ চলছে জ্বালানি সাশ্রয়ে, বিশ্বকে বিপর্যয় থেকে বাঁচাতে। কিন্তু জলের উৎসও যে অফুরান নয়। নন্দগোপাল মূলত জল পরিশ্রুতকরণের বিষয়টি দেখভাল করেন। কী ভাবে পুনরায় জল ব্যবহার করা সম্ভব সে নিয়েও কাজ করছেন। ওয়াটার ফিল্টার নিয়ে গবেষণার কাজ চালাচ্ছেন। তার কথায়, ‘‘কাজ সফল হলেই খুশি। যেন মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারে আমার এবং আমাদের গবেষণার সুফল।’’
নন্দগোপালের বক্তব্য, বিজ্ঞান অনেক উন্নত হচ্ছে। কিন্তু তার সঠিক ব্যবহার করতে পারা যাচ্ছে না। দেশের হয়ে কাজ করার ইচ্ছে থেকেই তাঁর কাজ করে যাওয়া। সিঙ্গাপুর, জাপান, আমেরিকা যুক্ত রাষ্ট্র প্রভৃতি দেশে গবেষণা ও অধ্যপনার কাজে গেলেও ফিরেছেন দেশে। সিঙ্গাপুরে বেশ কয়েকবছর ছিলেন। দেশীয় বন্ধু ও অগ্রজদের বার্তা নন্দগোপালকে নাড়িয়েছে। তাঁদের কয়েকজন বিদেশে থেকে গেলেও দেশে ফিরে দেশের ও মানুষের জন্য কাজ করছেন তিনি। উত্তরাখণ্ড থেকে পুরস্কার পেয়েছেন বিজ্ঞানী। কেদারনাথে বন্যার পরে প্লাস্টিক নিয়ে সচেতন করতে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে নাটক পরিবেশন। বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টিক দূষণের মারাত্মক ফল আলোচনা করা হয়। নন্দগোপালের গবেষণার জন্য উত্তরাখণ্ডের রাজ্যপাল ২০১৭ সালে পুরস্কার দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy