Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Trekking

পশ্চিমবঙ্গের ৫ ঠিকানা: ট্রেকিংয়ে গেলে মনে হবে কেন এত দিন আসিনি

ট্রেক করার জন্য যে সব সময়ে অনেক দূরের রাজ্যে পাড়ি দিতে হবে, তা কিন্তু নয়। পশ্চিমবঙ্গেও এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে ট্রেক করার স্মৃতি আজীবন জীবন্ত হয়ে থাকবে। রইল তেমন কিছু পথের সন্ধান।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৪ ০৯:২৯
Share: Save:

ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে বেড়াতে যাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় থাকে না। অনেকটা ঠিক ‘উঠল বাই তো কটক যাই’-এর মতো। ইচ্ছা হলেই কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পড়লেই হল। পাহাড়ে গিয়ে ঝরনা আর খরস্রোতা নদীর শব্দে মোহিত হওয়া ছাড়াও, দুর্গম পথে ট্রেক করার পরিকল্পনা থাকে অনেকের। তবে ট্রেক করার জন্য যে সব সময়ে অনেক দূরের রাজ্যে পাড়ি দিতে হবে, তা কিন্তু নয়। পশ্চিমবঙ্গেও এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে ট্রেক করা স্মৃতি আজীবন জীবন্ত হয়ে থাকবে। রইল তেমন কিছু পথের সন্ধান।

সান্দাকফু

ট্রেকিংয়ের অন্যতম ঠিকানা সান্দাকফু।

ট্রেকিংয়ের অন্যতম ঠিকানা সান্দাকফু। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার সান্দাকফু ট্রেক করার অন্যতম ঠিকানা হতে পারে। এই পর্বতের উচ্চতা ১১৯৪১ ফুট। সান্দাকফু ট্রেকে পরিচয় হবে কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোটসে এবং মাকালুর সঙ্গে। সান্দাকফু ট্রেকে যাওয়ার কোনও আদর্শ সময় নেই। সারা বছরই যেতে পারেন। তবে ঋতুভেদে সান্দাকফু সেজে ওঠে নানারকম সাজে। এই ট্রেকের পথেই রয়েছে সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান। ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকেও। রেড পান্ডার মতো বিরল প্রজাতির পশু ও হরেক রকমের পাখি দেখতে পাওয়া যায় সেই অরণ্যে। পাহাড়ি পথে রডোডেনড্রন এবং ম্যাগনোলিয়াও মন কেড়ে নেবে আপনার।

নেওরা ভ্যালি

হিমালয়ের পাদদেশে জনপ্রিয় পথ নেওরা ভ্যালি।

হিমালয়ের পাদদেশে জনপ্রিয় পথ নেওরা ভ্যালি। —ফাইল চিত্র।

হিমালয়ের পাদদেশে এই উপত্যকা ট্রেক করার বেশ জনপ্রিয় একটি পথ। আদিম বনভূমিতে ঘেরা ‘নেওরা ভ্যালি ন্যাশনাল পার্ক’-এর মধ্যে দিয়ে এই পথ গিয়েছে। ৮৮ বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এই উপত্যকার দক্ষিণ দিক জলপাইগুড়ির কিছুটা অংশের সঙ্গে যুক্ত। চৌদাফেরি ক্যাম্প থেকে যাত্রা শুরু করতে পারেন। চার দিকে বাঁশ এবং পাইন গাছের মধ্যে দিয়ে ট্রেক করতে মন্দ লাগবে না। এ ছাড়াও পথে অর্কিড, স্ট্রবেরির মতো বাহারি গাছের সঙ্গে দেখা হবে। কপাল ভাল থাকলে চোখে পড়বে বিরল রেড পাণ্ডা, স্যাটার ট্র্যাগোপান-সহ আরও অনেক আকর্ষণীয় পশুপাখি। এই পথে ট্রেক করার সবচেয়ে আদর্শ সময় হল বসন্ত আর শীতের মাঝামাঝি। নিউ জলপাইগুড়ি, বাগডোগরা এবং কালিম্পং থেকে নেওরা ভ্যালি যাওয়া সবচেয়ে সহজ।

সামথার-পূর্বখোলা ট্রেক

কালিম্পং জেলার একটি ছোট গ্রাম সামথার।

কালিম্পং জেলার একটি ছোট গ্রাম সামথার। —ফাইল চিত্র।

কালিম্পং জেলার এক ছবির মতো সাজানো গ্রাম হল সামথার। এখান থেকেই শুরু হয় পূর্বখোলা ট্রেকের পথ। এই ট্রেক সফরে অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে জলপ্রপাত এবং চা বাগান। নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে চঞ্চল তিস্তা। ট্রেক করে পূর্বখোলায় পৌঁছতে লাগবে প্রায় তিন দিন মতো। শারীরিক পরিশ্রম হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সমস্ত ক্লান্তি কাটিয়ে দেবে। এই ট্রেকে যাওয়ার আদর্শ সময় হল শীতকাল। ট্রেনে এলে নিউ জলপাইগুড়ি এবং বিমানে এলে বাগডোগরা স্টেশন থেকে সড়কপথেই সামথার গ্রামে পৌঁছনো যাবে। অথবা কালিম্পং থেকে রিলি এবং সিনজি উপত্যকা দিয়ে আসা যায়। যাঁরা লাভা থেকে আসছেন, তাঁদের লোলেগাঁও হয়ে আসতে হবে।

বামুনপুখুরি ট্রেক

পাহাড়ি নদী রুংসুর ঠিক পাশেই অবস্থিত বামুনপুখুরি।

পাহাড়ি নদী রুংসুর ঠিক পাশেই অবস্থিত বামুনপুখুরি। —ফাইল চিত্র।

শিলিগুড়ি থেকে এই পথের দূরত্ব প্রায় ৩০ কিলোমিটার। সর্পিল আকৃতির পাহাড়ি নদী রুংসুর ঠিক পাশেই অবস্থিত বামুনপুখুরি। অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ এই ঠিকানা। চারদিকে গাছের বুনো গন্ধ আর চা বাগান থেকে আসা অপূর্ব ঘ্রাণ মন ভাল করে দেবে। কংক্রিটের শহর থেকে দু’দন্ড সবুজের শান্তি পেতে চাইলে এই পথে ট্রেক করতে হবে। শীত এবং গ্রীষ্ম— এখানে ট্রেক করার সবচেয়ে সেরা সময়। তবে সারা বছরই আসতে পারেন। এক স্নিগ্ধ-সবুজ স্মৃতি নিয়ে ফেরা যাবে, সেটা নিশ্চিত।

গোর্খে

দার্জিলিং জেলার নৈসর্গিক এক ট্রেক পথ গোর্খে ।

দার্জিলিং জেলার নৈসর্গিক এক ট্রেক পথ গোর্খে । —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের একটি কম পরিচিত ট্রেক করার ঠিকানা হল গোর্খে। শ্রীখোলা-রামমাম-গোর্খে দার্জিলিং জেলার নৈসর্গিক এক ট্রেক পথ। শ্রীখোলা থেকে রামমাম প্রায় ১২ কিলোমিটারের পথ। সেখান থেকে গোর্খে আরও কিছুটা। গোটা পথজুড়ে রডোডেনড্রন, পাইন,ওক গাছেদের সারি। ঘুঘু, ওরিওল, মোনাল পাখির কূজনে ভরে থাকবে চারপাশ। রামমাম কম জনবহুল এলাকা। সেখানে মূলত শেরপারা বাস করেন। সেখানে আবার আলু, ভুট্টা, বাজরার চাষও হয়। রামমামের পরেই আসে গোর্খে। একেবারে সিকিমের সীমান্তবর্তী গ্রাম। বাতাসে কান পাতলে শুধু পাখির ডাক আর পাহাড়ি নদীর স্রোতের শব্দ কানে আসবে। ক্যাম্প তৈরির জন্য গোর্খে বিশেষ সুবিধাযোগ্য নয়। এখানে বেশ কিছু হোমস্টে রয়েছে। সেখানে বিশ্রাম নেওয়া যেতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sandakphu Neora Valley trekking tourism travel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE