Advertisement
০২ ডিসেম্বর ২০২৪

কারনানের জারিজুরি শেষ ইঞ্জেকশনের সুচেই

প্রায় এক সপ্তাহ এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কারনান। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এমনিতে একান্ত প্রয়োজন না-হলে হাসপাতালের কর্মীরা ভয়ে তাঁর কাছে ঘেঁষতেন না।

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

অঙ্কন: ওঙ্কারনাথ ভট্টাচার্য

অত্রি মিত্র
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

জেলের কর্মী-অফিসার থেকে হাসপাতালের নার্স-কর্মী পর্যন্ত সকলেই তাঁর ভয়ে তটস্থ।

কিন্তু তাঁর ভয় কীসে?

ইঞ্জেকশনের সুচে।

তাঁর মানে কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনানের। কী জেলে আর কী হাসপাতালে, দাপটের অন্ত নেই তাঁর। যাঁরা তাঁকে গ্রেফতার করতে গিয়েছিলেন, সেই দুঁদে সিআইডি অফিসারদের সঙ্গেও সমানে হম্বিতম্বি করেছিলেন কারনান। সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ বিচারপতির কাছে ইঞ্জেকশনের সুচ যে সাক্ষাৎ জুজু, সেটা জানা গিয়েছে হাসপাতালে।

প্রায় এক সপ্তাহ এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কারনান। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এমনিতে একান্ত প্রয়োজন না-হলে হাসপাতালের কর্মীরা ভয়ে তাঁর কাছে ঘেঁষতেন না। বিশেষ করে তাঁকে তামিলনাড়ু থেকে গ্রেফতার করে আনা পুলিশদলের উপরে যে-ভাবে তিনি হম্বিতম্বি করেছিলেন, তাতে ওই বিচারপতি সম্পর্কে সবিশেষ সতর্ক ছিল এসএসকেএম হাসপাতাল। কিন্তু যাঁকে সকলে পদে পদে এত ভয় পাচ্ছেন, তাঁর ভয় ঠিক কীসে, সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই হাসপাতালেই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিচারপতি কারনানের ভয়ের হদিস পেয়ে তাঁকে সাহস জোগানোর দায়িত্বও নিতে হয়েছে হাসপাতালের কর্মীদেরই। ডায়াবেটিসের রোগী কারনানের যখনই রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হতো, তখনই তাঁর মন শক্ত করতে হাসপাতাল-কর্মীরা নিজের নিজের মতো করে সাহস জোগাতেন। হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, ‘‘রক্ত নেওয়ার সুচ দেখলেই একেবারে সিঁটিয়ে যান উনি। ঠিক বাচ্চাদের মতো। আমাদের অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়ে রক্ত নিতে হয়েছে।’’

আরও পড়ুন:দেগে দেওয়ার আতঙ্কেই সায় আন্দোলনে

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের একটি বিশেষ দল গত ২০ জুন তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তূরের একটি রিসর্ট থেকে বিচারপতি কারনানকে গ্রেফতার করে। ২১ জুন তাঁকে কলকাতায় আনার পরে পাঠানো হয় প্রেসিডেন্সি জেলে। সেখানে অসুস্থ বোধ করায় ওই রাতেই স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে জেল হাসপাতালে ফেরানো হয় ধৃত বিচারপতিকে। ২২ জুন নানান শারীরিক সমস্যার জন্য তিনি ভর্তি হন এসএসকেএম হাসপাতালে।

স্বাস্থ্য ভবনের খবর, ওই বিচারপতির আর এসএসকেএমে থাকার প্রয়োজন নেই বলে সুপারিশ করেছে মেডিক্যাল বোর্ড। বৃহস্পতিবার দুপুরে এসএসকেএম থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসএসকেএম সূত্রে জানানো হয়, কারনান বেশ মানসিক চাপে ছিলেন। তাঁর হৃৎপিণ্ডেও কিছু সমস্যা ছিল। তবে ধকল অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রের অনেকটা উন্নতি হওয়ায় অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হয়নি। তাঁর মানসিক অবস্থাও এখন অনেকটাই ভাল।

কারা দফতর সূত্রের খবর, পিজি থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও প্রেসিডেন্সি জেলের হাসপাতালে কারনানকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বন্দিদের খাবার নয়, চিকিৎসকদের নির্দেশ মেনেই খাবার দেওয়া হচ্ছে তাঁকে।

অন্য বিষয়গুলি:

C S Karnan Injection Needle ইঞ্জেকশন S.S.K.M. Hospital চিন্নাস্বামী স্বামীনাথন কারনান সুচ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy