Advertisement
E-Paper

লগ্নির ছাড়পত্রে এক জানলা, হচ্ছে নয়া পর্ষদ

আয়োজনে ত্রুটি ছিল না ঠিকই। কিন্তু কাজ প্রায় কিছুই হচ্ছিল না। দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়াতেই তাই শক্ত হাতে ব্যাট ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে কোনও দফতরে লগ্নি প্রস্তাব এলে তা সরলীকৃত পদ্ধতিতে রূপায়ণ করার জন্য ‘ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রমোশন বোর্ড’ (শিল্পোন্নয়ন ও প্রসার পর্ষদ) তৈরি হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৬ ০৪:৫৮

আয়োজনে ত্রুটি ছিল না ঠিকই। কিন্তু কাজ প্রায় কিছুই হচ্ছিল না।

দ্বিতীয় ইনিংসের গোড়াতেই তাই শক্ত হাতে ব্যাট ধরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে কোনও দফতরে লগ্নি প্রস্তাব এলে তা সরলীকৃত পদ্ধতিতে রূপায়ণ করার জন্য ‘ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রমোশন বোর্ড’ (শিল্পোন্নয়ন ও প্রসার পর্ষদ) তৈরি হচ্ছে। লগ্নি প্রস্তাব নিয়ে এখন দফতরগুলির মধ্যে সমন্বয়ের যে অভাব রয়েছে, পর্ষদ গঠিত হওয়ায় সেই সমস্যা হবে না। এই পর্ষদ যে কোনও বিনিয়োগ রূপায়ণের ক্ষেত্রে একটি ‘প্ল্যাটফর্ম’ হিসাবে কাজ করবে।’’

পর্ষদের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি, মৎস্য, ক্ষুদ্র শিল্পের মতো বিভিন্ন দফতর যে যার মতো করে লগ্নি টানার চেষ্টা করছে। কিন্তু বিনিয়োগের জন্য জমি লাগে, ভর্তুকি দেওয়ার ব্যাপার থাকে, প্রযুক্তিগত সাহায্য লাগে। সে সব সিদ্ধান্তই যাতে এক ছাতার তলায় বসে নেওয়া যায়, সেই কারণেই পর্ষদ গঠনের সিদ্ধান্ত। সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ দফতর পর্ষদে থাকবে। এতে কাজের সুবিধা হবে। নবান্নের এক কর্তার মতে, ‘এক জানলা’ নীতি মেনেই এই সিদ্ধান্ত।

এই একই কারণে বাম আমলে তৈরি হয়েছিল রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম। রাজ্যের শিল্প-ভাবমূর্তি তুলে ধরতে ‘নোডাল সংস্থা’-র ভূমিকা ছিল তার। বস্তুত, নিগমের জন্মলগ্ন থেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে রাজ্য সরকারের যতগুলি যৌথ উদ্যোগ হয়েছে, তা এই সংস্থার হাত ধরেই। নবান্নের এক কর্তা জানান, ২০১১ সালে প্রথম বার ক্ষমতায় এসে নিগমের কাজের পরিধি বাড়াতে কোর কমিটি তৈরি করে মমতার সরকার। তাতে সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কয়েকজন শিল্পপতি ও বণিকসভার প্রতিনিধিদেরও রাখা হয়।

কিন্তু তাতে বিশেষ কাজ হয়নি। বরং যেটুকু বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে, তার অধিকাংশই নবান্নের তৎপরতায়। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে প্রতি বছর নিয়ম করে রাজ্যে শিল্প সম্মেলনের আয়োজন হয়েছে। লগ্নিকারীর খোঁজে তিনি গিয়েছেন দিল্লি, মুম্বই, সিঙ্গাপুর। পশ্চিমবঙ্গে লগ্নির অন্তরায় হিসেবে যে সব কারণের কথা শিল্পপতিরা বলেছেন, তার মধ্যে জমির জট যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে লাল ফিতের ফাঁস। এই প্রেক্ষাপটেই এ বার ছাড়পত্রের এক জানলা হিসেবে পর্ষদ তৈরির ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে অধিক সন্ন্যাসীতে যাতে গাজন নষ্ট না হয়, তাই পর্ষদে শুধু সরকারি কর্তাদেরই রাখা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, অর্থ, শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, ক্ষুদ্র শিল্প, ভূমি সংস্কার-সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের সচিবরা থাকবেন পর্ষদে। চেয়ারম্যান হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত আমলা সিদ্ধার্থ। যিনি অতীতে রাজ্যের শিল্প পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেছেন। নতুন এই পর্ষদকে পরামর্শ দেবেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। আরও ঠিক হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে পর্ষদের বৈঠক হবে। তার অগ্রগতি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে প্রতি শনিবার। মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, প্রতি সপ্তাহে পর্যালোচনা হলে সমস্যা বোঝা যাবে। সেই মতো সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। পর্ষদের নিজস্ব একটি ওয়েবসাইটও তৈরি করা হবে।

সিদ্ধার্থ এ দিন জানান, নতুন শিল্প গড়তে গেলে বিভিন্ন দফতরের ছাড়পত্র ও লাইসেন্স নিতে হয়। এ বার থেকে শিল্পসংস্থাগুলি পর্ষদের কাছে আসবে। এক জায়গাতেই আবেদন করতে পারবে। ফলে যে কোনওপ্রস্তাবের ক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

প্রশ্ন উঠেছে, এর পর শিল্পোন্নয়ন নিগম কী করবে?

নবান্নের কর্তারা জানান, নিগম শিল্পতালুকগুলি পরিচালনা করবে, মেলা-রোড শো করবে, শিল্প সম্মেলন পরিচালনা করবে। তার সঙ্গে লগ্নি-সহায়ক ভূমিকা তো রয়েইছে।

নবান্নের একাংশের মতে, গত তৃণমূল সরকারের প্রথম দফার একটা বড় সময় অর্থ, শিল্প, আবগারি এবং তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের ভার ছিল অমিত মিত্রের হাতে। এ দফায় ব্রাত্য বসুকে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ বার শিল্পোন্নয়ন ও প্রসার পর্ষদ গড়ে লগ্নি টানার ক্ষেত্রেও অমিতবাবুর ভার লাঘব করা হল।

NOC investment Mamata Banerjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy