প্রতীকী ছবি।
এক নার্সিংহোম মালিক জানতে চাইলেন, “স্যার, রোগীর বাড়ির লোক টাকা দিতে না পারলে কী করব?” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায়ের জবাব, “রোগীর পরিজন টাকা দিতে না পারলে জোর করা যাবে না। মৃতদেহ কোনও ভাবেই আটকানো যাবে না।”
মঙ্গলবার দুপুর। বর্ধমানের সংস্কৃত মঞ্চে জেলার নার্সিংহোম মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে প্রণববাবু ছাড়াও উপস্থিত জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন, সভাধিপতি দেবু টুডুরা। দিন কয়েক আগেই রাজ্যের তাবড় বেসরকারি হাসপাতাল, নার্সিংহোমের ‘যথেচ্ছাচার’-এর বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দেগেছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, অনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তার পরেও বর্ধমানের পিজি নার্সিংহোমে ঝাড়খণ্ডের চুমকি লেটের পরিবারকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। সেই আবহেই ছিল এ দিনের বৈঠক।
বৈঠকে জেলার ১৫৫টি নার্সিংহোমের কর্তৃপক্ষ হাজির ছিলেন। প্রশাসনের কাছে তাঁদের অনেকেরই আর্জি, “অনেক স্বাস্থ্য-পরীক্ষারই খরচ নির্দিষ্ট করা নেই। তাই রোগীরা বা তাঁদের পরিবার তা নিয়ে নানা সময় গোলমাল পাকান। আপনারা একটা গাইড লাইন তৈরি করে দিলে বিল নিতে সুবিধা হবে।”
স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য, এ ব্যাপারে প্রাথমিক ভাবে নিদেজের শ্রেণি বিভাগ করতে হবে নার্সিংহোম মালিকদের। কোন শ্রেণির নার্সিংহোমে কীসের জন্য কত টাকা লাগবে তা প্রস্তাবের আকারে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে জানালে, তা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হবে। তবে জেলাশাসক নার্সিংহোম কর্তাদের মনে করিয়ে জেন, ‘‘স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে সাধারণ ব্যবসার তফাত রয়েছে। আপনাদের দায়িত্ব আছে। রোগী গরিব হলে ভর্তি নেব না, আবার টাকা না পেলে মৃতদেহ আটকে রাখব—এটা করা যাবে না।’’
স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের অনেক কর্তাই মনে করেন, নার্সিংহোম মালিকদের সঙ্গে রোগীর পরিজনদের গোলমালের মূলে রয়েছে নানা ব্যাপারে অস্বচ্ছতা। তা কাটাতে প্রথমেই রোগীর পরিবারের সঙ্গে বিশদে কথা বলতে হবে। নির্দিষ্ট পরিষেবার ‘রেট চার্ট’ টাঙাতে হবে। সেখানে শুধু শয্যা, অক্সিজেন সিলিন্ডারের খরচ লিখলেই হবে না, নার্সিংহোমে কী-কী অস্ত্রোপচার হয়, কোন চিকিৎসক, কী অস্ত্রোপচার করেন, সে জন্য কত টাকা দিতে হয়— সে সব তথ্য জানাতে হবে।
জেলার অনেক নার্সিংহোমে আচমকা পরিদর্শনে গিয়ে প্রশাসনের অভিজ্ঞতা যে সুখকর নয়, তা-ও জানাতে ভোলেননি সিএমওএইচ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy