Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

Covid: বাড়িতে জায়গা নেই, কোভিড রোগী ঘুরে বেড়াচ্ছেন ঢাকুরিয়ার রাস্তায়!

স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টে নাগাদ শ্বাসকষ্ট শুরু হয় নবকুমারের। প্রথমে তাঁকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

নবকুমার (বাঁ দিকে)। বাড়িতে জায়গা নেই বলেই রাস্তায় ঘুরছিলেন তিনি।

নবকুমার (বাঁ দিকে)। বাড়িতে জায়গা নেই বলেই রাস্তায় ঘুরছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২১ ২৩:১৫
Share: Save:

করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। কিন্তু আক্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাস্তায়। কারণ, তাঁর বাড়িতে নিভৃতবাসের জায়গা নেই। সংক্রমণের আশঙ্কায় এর পর পড়শিরা যোগাযোগ করেন স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে। তাদের তরফে কোনও সাড়়া না পেয়ে শেষে ১০০ ডায়াল করেন পড়শিরা। এর পর স্বাস্থ্য দফতরের অ্যাম্বুল্যান্স এসে নবকুমার মণ্ডল নামের ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।


নবকুমারের বাড়ি ঢাকুরিয়ায়। ৬ জনের সংসার। কিন্তু ঘর মাত্র একটি। সঙ্গে বারান্দা লাগোয়া একফালি রান্নাঘর। বাড়িতে জায়গার অভাব। নিভৃতবাসেরও কোনও সুযোগ নেই সেখানে। বরং সকলের সঙ্গে থাকলে পরিবারের অন্যদের সংক্রমণের আশঙ্কা। তাই বাড়ির বাইরে রাস্তায় রাস্তায় বুধবার ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন নবকুমার। পড়শিরা নবকুমারের বাড়ির অবস্থা জানতেন। কিন্তু তাঁরাও নবকুমারের এই ‘ঘুরে বেড়ানো’কে মানতে পারছিলেন না, কারণ, তাঁদের সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছিল। সে কারণেই বুধবার তাঁরা আবার যোগাযোগ করেন স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে। কিন্তু বেলা পর্যন্ত তাদের তরফে কোনও উদ্যোগ না দেখে শেষমেশ ১০০ ডায়ালে যোগাযোগ করা হয়। পরে বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ অ্যাম্বুল্যান্স এসে রাজারহাট সিএনসিআই-তে নিয়ে যায়। সেখানেই আপাতত ভর্তি নবকুমার।


স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টে নাগাদ শ্বাসকষ্ট শুরু হয় নবকুমারের। প্রথমে তাঁকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতাল। সেখানে করোনা পরীক্ষার পর জানা যায় নবকুমার ‘পজিটিভ’। শ্বাসকষ্ট কমাতে অক্সিজেন দেওয়া হয় তাঁকে। পরে হাসপাতাল ছেড়েও দেওয়া হয়। বাড়িতে ফিরে নিভৃতবাসে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁকে। গুরুতর সমস্যা হলে হাসপাতালে আসার কথাও বলা হয়। কিন্তু বাড়িতে বয়স্ক দিদি, জামাইবাবু-সহ ৬ জন থাকেন। নিভৃতবাসে থাকার মতো কোনও জায়গা নেই নবকুমারের। মঙ্গলবার রাতটা তিনি ঢাকুরিয়াতেই একটি রাজনৈতিক দলের অফিসে কাটান। এর পর সকাল থেকেই রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। আর তাতেই প্রমাদ গুণতে থাকেন পড়শিরা।


নবকুমারের পড়শি মাধব নস্করের কথায়, ‘‘শহরে একাধিক সেফ হোমের ব্যবস্থা রয়েছে বলে শুনি। অথচ নবকুমারের জন্য তার কোনও ব্যবস্থা না করে হাসপাতাল কী করে বাড়ি পাঠিয়ে দিল! ওদের তো সবটা জেনেবুঝে এক জন করোনা রোগীকে বাড়ি ফেরার অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল! আমাদের সংক্রমণের ভয় যেমন ছিল, তেমন ওরও তো চিকিৎসার প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid Infection COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE