Advertisement
১০ মে ২০২৪

একুশের জন্য চাঁদা তোলা বন্ধ, নির্দেশ অভিষেকের

একুশে জুলাই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের নাম করে আর চাঁদা তোলা যাবে না। এমনকী সমাবেশের প্রচারের জন্য লাগানো পোস্টার-ব্যানার-ফ্লেক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও নামের সঙ্গে দলের কোনও স্তরের নেতার ছবি বা নাম ছাপা যাবে না বলে সোমবার জানিয়ে দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৬ ০৩:৫৩
Share: Save:

একুশে জুলাই তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের নাম করে আর চাঁদা তোলা যাবে না। এমনকী সমাবেশের প্রচারের জন্য লাগানো পোস্টার-ব্যানার-ফ্লেক্সে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও নামের সঙ্গে দলের কোনও স্তরের নেতার ছবি বা নাম ছাপা যাবে না বলে সোমবার জানিয়ে দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

একুশের সমাবেশ আয়োজনের জন্য এ দিন তৃণমূল ভবনে প্রস্তুতি বৈঠক ডেকেছিলেন অভিষেক। সেখানে এই দুই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়ে দেন যে, সংগঠনের পদাধিকারী ছাড়া আর কেউ দলের নাম দিয়ে লেটারহেড ছাপাতে পারবেন না। কোনও দলীয় কর্মসূচি গ্রহণ করতে গেলে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের অনুমোদন নেওয়া এখন থেকে বাধ্যতামূলক হবে। দলের এই সব নির্দেশ অমান্য করা হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করে দেন অভিষেক।

এই ফরমানকে অবশ্য একুশের আয়োজন সংক্রান্ত ‘ক্ষুদ্র ফ্রেমে’ দেখছে না তৃণমূল শিবির। নেতাদের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটে বিপুল সাফল্য পাওয়ার পর থেকেই দলে শৃঙ্খলা কায়েম ও দুর্নীতি বন্ধের ওপর জোর দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। যে সব বিষয়গুলির জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের ওপর মানুষের অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে, সেগুলি নির্মূল করতে সচেষ্ট হয়েছেন তিনি। সেই কারণে প্রোমোটার চক্র-সিন্ডিকেট রাজ বন্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন। একই ভাবে পই পই করে বলছেন দলে কোন্দল বন্ধ করার কথা। অভিষেকের এ দিনের ঘোষণা দলনেত্রীর উদ্যোগেরই অংশ।

তৃণমূল নেতারা বলছেন, দলীয় কোন্দল ও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের নেপথ্যে টাকা পয়সার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে অশান্তিটাই মূল ব্যাপার। তাই একুশের সমাবেশের নাম করে টাকা তোলার উপরে পুরোদস্তুর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন অভিষেক। ফ্লেক্স-ব্যানারে নেতাদের ছবি ছাপার উপরে নিষেধাজ্ঞার পিছনেও কারণ একই। ব্লক-জেলা, এমনকী রাজ্য স্তরের বহু তৃণমূল নেতা রাজনৈতিক প্রভাব জাহির করতে নিজের ও দলনেত্রীর ছবি পাশাপাশি রেখে পোস্টার ছাপান। তার পর সেই প্রভাব খাটিয়ে রীতিমতো বিল বই ছাপিয়ে চাঁদা তোলেন। কেউ বা চাঁদা তোলার নামে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের ওপর জুলুম করেন। আদায় করা ওই চাঁদার টাকা সবটা যে দলের তহবিলে যায় না তা বলাইবাহুল্য। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই অনিয়মটা ধরে ফেলেছেন। আর এই জন্যই জেলা সফরে গিয়ে ইদানীং কাউকে তিনি তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতেও দেন না।’’

প্রশ্ন হল, তা হলে একুশের সমাবেশের জন্য কী ধরনের পোস্টার-ব্যানার ছাপবে তৃণমূল? তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পোস্টার বা ব্যানারের ‘ডিজাইন’ অভিষেক এবং তাঁর সহকর্মীরা তৈরি করেছেন। তার সিডি জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সিডি অনুযায়ীই পোস্টার-ব্যানার করতে হবে।’’

চাঁদার বিষয়টি নিয়ে দলকে সতর্ক করার পাশাপাশি তৃণমূলের শাখা সংগঠনগুলির মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার কথা এ দিন তুলে ধরেন অভিষেক। তিনি বলেন, দলের প্রবীণ ও নবীনদের ‘ঐক্যবদ্ধ’ হয়ে কাজ করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করতেই সংগঠনকে মজবুত করা জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abhishek Banerjee subscription
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE