ডিভাইডারের কাজ বন্ধ। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের তিনবাতি মোড় থেকে উত্তর পূর্ব ভারতের অন্যতম নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে যাওয়ার মূল রাস্তার দূরত্ব ঠিক সাড়ে তিন কিলোমিটার। অভিযোগ, প্রথম দুই কিলোমিটার সুবিশাল চওড়া রাস্তা থাকলেও শেষের এক কিলোমিটার কার্যত পার হয়ে স্টেশনে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়েন অনেকেই। রেল হাসপাতাল মোড় থেকে নেতাজি মোড় অবধি ক্রমশ রাস্তার দুই ধারে দখল বাড়তে থাকায়, রাস্তা সরু হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে রাস্তায় ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখার প্রবণতা। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায়ই যানজট হয়। অনেক সময় স্টেশনে সময়মত পৌঁছনো যায় না।
রেল সূত্রের খবর, সম্প্রতি এই সমস্যা মেটাতে রাস্তাটি চওড়া করে ‘ডিভাইডার’ বসিয়ে রাস্তাটি দুটি লেন তৈরির পরিকল্পনা নেয় উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। গত মাসে পুরোদমে কাজও শুরু হয়। রেলের লাইন বা ট্র্যাক কেটে রাস্তায় গেড়ে কংক্রিটের ডিভাইডার তৈরি শুরু হয়। গোটা প্রকল্পের জন্য প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়। কিন্তু ভোটের জন্য টাকা না আসায় থমকে গিয়েছে কাজ। আর এতে ৫০০ মিটার মত লোহার খুঁটি বিপজ্জনক ভাবে রাস্তায় পুঁতে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ।
বাসিন্দাদের আশঙ্কা, দ্রুত ওই লোহার খুঁটি কংক্রিটের চাদর দিয়ে না মুড়ে দিয়ে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশেষ করে লোহার খুঁটি মাথাগুলি চিন্তা বাড়িয়েছে। দ্রুতগামী যে কোনও গাড়ি, বাইক তো বটেই নিদেনপক্ষে কোনও সাইকেল আরোহী তাতে গিয়ে আছড়ে পড়ে মারত্মক জখম হতে পারেন। এই অবস্থায় দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ করে খুঁটিগুলি মুড়ে ফেলার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। উল্লেখ্য, এলাকাটি শিলিগুড়ি পুলিশের ভক্তিনগর থানার অধীনে রয়েছে। রাস্তাটির দুই পাশে পুরসভার ৩২ থেকে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডগুলি রয়েছে। পরিস্থিতির কথা জানতে পেরেছেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন, মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত’ও। পুলিশ কমিশনার বলেন, “আমি রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছি। ঢিমেতালে কাজ বা বিপজ্জনকভাবে খুঁটি পুঁতে রাখা যাবে না। মারাত্মক ঘটনা ঘটতে পারে।” কার্যত একই বক্তব্য মেয়র গঙ্গোত্রী দেবী’রও। তিনি বলেন, “দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য রেলকে বলব।”
শহরের বাসিন্দাদের সুবিধার জন্যই ওই কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল। তিনিএই প্রসঙ্গে বলেছেন, “পুলিশকেও আর ভাল করে যান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তবে ভোটের জন্য কিছু সমস্যা হয়েছে। লোহার খুঁটিগুলি দ্রুত মুড়ে ফেলা হবে।”
রেল সূত্রের খবর, তিনবাতি থেকে কাশ্মীর কলোনি হয়ে ডিআরএমের অফিসার অবধি রাস্তাটি প্রায় ৩০ ফুট করে চওড়া রয়েছে। এবার রাস্তাটি দুই পাশে আরও ১০ ফুট করে চওড়া করা হবে। সেই সঙ্গে রাস্তাটিতে ডিভাইডার বসিয়ে ‘রিফ্লেক্টার’ও বসানো হবে। এতে রাস্তাটি দুই দিকে ওয়ানওয়ে ছাড়াও ট্রাক বা গাড়ি যেখান সেখান দিয়ে এদিক ওদিক যাতায়াত করতে পারবে না। এই অবস্থায় যে কয়েকটি খুঁটি পোঁতা হয়েছে সেগুলি ঢেকে ফেলার দাবি তুলেছে রাজনৈতিক দলগুলিও। সিপিএমের এনজেপি-ফুলবাড়ির জোনাল সম্পাদক দিবস চৌবে বলেন, “মারাত্মকভাবে খুঁটিগুলি রয়েছে। আমরা এরমধ্যে রেলের অফিসারদের সঙ্গে দেখা করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy