শিলিগুড়ি থেকে ময়নাগুড়ি। সেখান থেকে বীরপাড়া, জঁয়গা, হাসিমারা হয়ে নিউ দিঘা। দিঘা থেকে কল্যাণী, বারাসাত হয়ে কোচবিহার। কোচবিহার এসেই ধরা পড়ল শিলিগুড়ির দশম শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণে অভিযুক্ত। উদ্ধার হয়েছে অপহৃত ছাত্রীও।
গত ৩০ জুলাই শিলিগুড়ির একটি স্কুল থেকে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে। ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে পরিচিত এক ব্যক্তি অপহরণে অভিযুক্ত বলে অভিযোগ করেন ছাত্রীর বাবা। স্কুল ছুটির পরে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ওই ব্যক্তি ছাত্রীকে বাইকে তুলে গা ঢাকা দেয়। অভিযুক্ত নিজেকে আইনজীবী হিসেবে পরিচয় দিয়ে পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা করেন বলে অভিযোগ জানান ছাত্রীর বাবা। ঘটনার ১৩ দিন পরে সোমবার রাতে কোচবিহারের ভবানী সিনেমাহল লাগোয়া এলাকা থেকে অভিযুক্ত কনক ঘোষকে ধরে পুলিশ। অপহৃত ছাত্রীও সঙ্গেই ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বয়স ৩৫। কনক কোচবিহারের বাসিন্দা হলেও, শিলিগুড়ির রথখোলা এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া করে বসবাস করতে শুরু করেছিল। ধৃতের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন করে খুন সহ একাধিক ফৌজদারি অভিযোগ আছে বলে পুলিশ জানায়। মঙ্গলবার অভিযুক্ত কনক ও ওই কিশোরীকে শিলিগুড়ি বিচারবিভাগীয় ফার্স্ট ক্লাস ফোর্থ কোর্টে নীলাঞ্জন মৌলিকের এজলাসে পেশ করা হয়। অভিযুক্তকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ছাত্রীকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “ধৃতের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। কয়েকটির বিচারও চলছে।”
পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই অভিযুক্ত ব্যক্তি জায়গা পরিবর্তন শুরু করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। গত ৩০ জুলাই স্কুল ছুটির পরে থেকে ছুটির পর বাড়িতে পৌঁছে দেবে বলে ছাত্রীকে বাইকে তুলে নেয় ধৃত ব্যক্তি। কিছুক্ষণ ঘুরিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেবে বলে ছাত্রীকে জানায় সে। এর পরে জলপাইগুড়ির দিকে বাইক নিয়ে রওনা দেয়। রাতে তারা ময়নাগুড়ি যায়। সেখান থেকে ছাত্রীর বাড়িতে ফোন করে অপহরণের কথা জানায় অভিযুক্ত কনক। শিলিগুড়ি থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন কিশোরীর বাবা।
এ দিন ওই ছাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। শিলিগুড়ি আদালতে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তি তাকে একাধিক বার ধর্ষণ করেছে বলে সে জানায়। পরে এজলাসে শুনানির সময় বিচারকের সামনেও একই অভিযোগ করে ছাত্রীটি। ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে এজলাশে দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে মুখ ঢেকে কেঁদে ফেলে সে। অভিযুক্ত আইনজীবী পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করায় তার পক্ষে সওয়াল না করার আর্জি জানান ছাত্রীটির বাবা। সেই আবেদন মতো কোনও আইনজীবী এ দিন অভিযুক্তের পক্ষে সওয়াল করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy