বছর গড়াতে চললেও ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি না পেয়ে বিডিও অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিলেন ক্ষুব্ধ মহিলা শ্রমিকরা।
মালদহের রতুয়া-১ ব্লকে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। তাদের জব কার্ড থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে গত ১৭ অগস্ট দেবীপুর তেররশিয়া ডাকঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন ওই শ্রমিকরা। তখন পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। সেজন্য এক সপ্তাহ সময় চাওয়া হয়। কিন্তু দু’সপ্তাহ পার হওয়ার পরেও সমস্যা না মেটায় এ দিন প্রথমে থানায় চড়াও হন কয়েকশো মহিলা শ্রমিক। এক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করার নেই জানানোর পর বিডিও অফিসে চড়াও হয়ে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। তালা ঝুলিয়ে মূল ফটকের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ওই শ্রমিকরা। প্রায় দু’ঘণ্টা বাদে বিকাল চারটায় পুলিশ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিডিও অফিসের তালা খোলার পর তাদের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসেন প্রশাসনের কর্তারা। রতুয়া ১-এর বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দুদিন আগে ব্লকে কাজে যোগ দিয়েছি। ওদের লিখিত অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
চাঁচলের ভারপ্রাপ্ত মহকুমাশাসক জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওরা যে অভিযোগ তুলেছেন তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ওরা বকেয়া মজুরি যাতে পায় তাও দেখা হচ্ছে।’’
পঞ্চায়েত ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের শেষে ও এ বছরের প্রথমে দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বাঁধে ঘাস লাগানো ও মাটি কাটার কাজ করেন ওই শ্রমিকরা। ওই শ্রমিকদের অভিযোগ, কাজ করার পর তাদের কিছু টাকা দেওয়া হয়েছিল। কয়েকমাস ধরে ওই সমস্যা চলার পর গত ১৭ অগস্ট ডাকঘরে চড়াও হয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। তাদের টাকা ডাকঘর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজসে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পোস্টমাস্টার পীযূষ পাল। ওই দিন প্রশাসনের তরফে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
দিনকয়েক আগে বিডিও বদলি হয়ে চলে গিয়েছেন। বদলি হয়ে গিয়েছেল চাঁচলের মহকুমাশাসকও। অফিসে গিয়ে প্রশাসনের কাছে সদুত্তর না মেলায় এ দিন প্রথমে থানায় বিক্ষোভ দেখান মহিলারা। তারপর ব্লক অফিসে হাজির হয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। শ্রমিকদের বুঝিয়ে দু’ঘণ্টা বাদে তালা খোলার ব্যবস্থা করেন ব্লকের জয়েন্ট বিডিও নাজির হোসেন।
পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান নার্গিস বিবি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের কোনও ত্রুটি নেই। কোন প্রকল্পে কত শ্রমিক কাজ করেছেন তার যাবতীয় তথ্য প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের টাকা কেউ আত্মসাৎ করেছে কি না তা তদন্ত করলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
শ্রমিকদের অভিযোগ, বছর পার হতে চললেও তাঁরা যে টাকা পাননি তা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। তাদের কখনও বলা হচ্ছে ডাকঘরে যেতে। কখনও পঞ্চায়েত আবার কখনও ব্লক অফিসে যেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। দুই শ্রমিক সুধা রবিদাস ও লক্ষী মন্ডল বলেন, ‘‘কাজ করেও মাসের পর মাস মজুরি বকেয়া পড়ে রয়েছে। কয়েকদিন দেখব। সমস্যা না মিটলে এবার তালা ঝুলিয়ে বিডিও অফিসের সামনে অনশনে বসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy