বেহাল: হরিশ্চন্দ্রপুরের বরুই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
অটোয় চেপে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকলেন চিকিৎসক। অটোচালকই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের তালা খুলে দিলেন। এরপর রোগীদের দেখে নিজের হাতেই পুরিয়া তৈরি করে দিলেন হোমিও চিকিৎসক। তিনিও অবশ্য আসেন সপ্তাহে তিন দিন। বাকি দিনগুলো স্বাস্থ্যকেন্দ্র তালাবন্ধ থাকে। চতুর্থ শ্রেণির কর্মী তো বটেই, কোনও অ্যালোপ্যাথি চিকিত্সক বা ফার্মাসিস্টও নেই।
এক দিন দু’দিন নয়, বছরের পর বছর ধরে এমনই বেহাল অবস্থায় ধুঁকছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শ্রেণিভুক্ত মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বরুই দেবেন্দ্র মেমোরিয়াল হাসপাতাল। পরিষেবার হাল ফেরানোর জন্য একাধিকবার দাবি জানিয়েও সমস্যা না মেটায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।
এই সমস্যার কথা স্বাস্থ্যকর্তাদের অজানা নয়। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘ওখানে একজন অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক জরুরি। স্বাস্থ্য ভবন থেকে একজন চিকিত্সক দেওয়া হলেও তিনি কাজে যোগ দেননি। কী ভাবে সমস্যা মেটে তা দেখছি।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, একজন ফার্মাসিস্ট থাকলেও তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। একমাত্র হোমিও চিকিত্সকও ছুটিতে। ফলে অস্থায়ীভাবে একজন হোমিও চিকিত্সককে দিয়ে সপ্তাহে তিন দিন কাজ চালানো হচ্ছে।
মহানন্দা নদীর ওপারেই বিহার। এ পারে বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮টি গ্রাম রয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ও চাঁচল থেকে ২০ কিলোমিটার দূরের ওই এলাকার বাসিন্দাদের কথা ভেবে তিন দশক আগে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য বাড়িটি দান করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা দেবেন্দ্র থোকদার। পরে তৈরি হয় কর্মী-আবাসন, রোগীদের রান্নাঘরও। এক সময় শয্যা ছিল, উন্নত মানের চিকিত্সা পরিষেবা মিলত। ফলে বরুই ছাড়াও বিহারের বহু এলাকা থেকে রোগীরা ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসার জন্য আসতেন। এখন সংস্কারের অভাবে ভবনেরও বেহাল দশা। চালু রয়েছে শুধু আউটডোর। কিন্তু সেই আউটডোরে গিয়েও চিকিত্সা না মেলায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
এলাকার বাসিন্দা দীপক মজুমদার, নজরুল ইসলামরা বলেন, ‘‘এলাকার গরিবদের পক্ষে দূরে গিয়ে চিকিৎসা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। হাজার হাজার মানুষ যে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল তার বেহাল দশার কথা জেনেও স্বাস্থ্য দফতরের কোনও হেলদোল নেই। অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসক ছাড়া কি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলে।’’ হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বিএমওএইচ ছোটন মন্ডল বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানি। কী ভাবে তা মেটে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy