Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আইপিএল নিয়ে জুয়ায় গ্রেফতার ৮

শনিবার রাত থেকে রবিবার রাত অব্দি শিলিগুড়ি পুলিশ এবং সিআইডির-র দুটি আলাদা অভিযানে বেটিং চক্রে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছে ৮ জন। ১৫টি মোবাইল–সহ উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪৩
Share: Save:

আইপিএল শুরু হতেই উত্তরবঙ্গ জুড়ে বেটিং চক্রও রমরমিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। গত সপ্তাহেই জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার পুলিশের অভিযানে কয়েক জন ধরা পড়েন। এ বার ঘটনাস্থল শিলিগুড়ি এবং ময়নাগুড়ি। দুটি জায়গাতেই লটারির দোকানের আড়ালে বেটিং চক্র চালান হচ্ছিল বলে অভিযোগ।

শনিবার রাত থেকে রবিবার রাত অব্দি শিলিগুড়ি পুলিশ এবং সিআইডির-র দুটি আলাদা অভিযানে বেটিং চক্রে জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হয়েছে ৮ জন। ১৫টি মোবাইল–সহ উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে ময়নাগুড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা।

পুলিশ জানাচ্ছে, ইন্টারনেটে নির্দিষ্ট সাইটে গিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করে বেটিং চলছিল। এর পাশাপাশি, মোবাইলে শিলিগুড়ি, কলকাতা, মুম্বই ও দিল্লির মতো শহরে মোবাইলে বুকিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আইপিএল-এ নানা টিমের নামে টাকা লাগানো হচ্ছিল বলে অভিযোগ। সিআইডি-র এক শীর্ষ কর্তা জানান, বিভিন্ন সূত্র মারফৎ খবর পাওয়া ভিত্তিতে নজরদারি চলছিল। সেই মোতাবেক অভিযান হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের কিছু লোকজনের নাম মিলেছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে।

গোয়েন্দারা বলেন, ‘‘কোনও দলের ক্ষেত্রে যে টাকা লাগানো হয়, জিতলে দ্বিগুণ মেলে। ধরা যাক কেকেআর-এ কেউ একশো টাকা লাগালেন। কেকেআর জিতলে তিনি পাবেন দু’শো টাকা। আর যদি হারে পুরো টাকাই হারবেন তিনি।’’ গোয়েন্দাদের দাবি, হোয়াট্সঅ্যাপের মাধ্যমে এই দরাদরি করা হত। দর চূড়ান্ত হলে দেওয়া হত একটি সঙ্কেত। খেলার পরে সেই সঙ্কেত দেখালে টাকা মিলত। এ ভাবে বেটিং হত ময়নাগুড়িতে। দলপিছু ১ হাজার টাকা থেকে ১০ টাকা লাগানোর বন্দোবস্ত থাকে। মূলত দু’ভাবে বেটিং চলত। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বেটিং চলত।

দ্বিতীয় পদ্ধতিতে হত স্থানীয় পর্যায়ে। এই চক্রটি কলকাতার বড়বাজার থেকে পরিচালনা করা হত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। সেখানেই দর ঠিক হত। হিসেব রাখা হত সেখানেই। কলকাতার নির্দেশেই টাকা দেওয়া নেওয়া হত। এ দিন যাদের পুলিশ ধরেছে, সকলেই এজেন্ট বলে দাবি।

তবে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশাও রয়েছে। পুলিশের একটি অংশ জানাচ্ছে, ধৃতদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজনের যোগাযোগের কিছু প্রমাণ মিললেও একেবারেই স্থানীয় স্তরে খেলা চলত না, তা-ও বলা যায় না। মোবাইল নম্বর, নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য দেখে বোঝা গিয়েছে, রাজ্যের বাইরের কিছু লোকজন চক্রের চাঁই হিসাবে রয়েছে। কিন্তু বেটিং-এর পুরো টাকা সেখানে জমা দিয়ে খেলা হয়েছে, সেটা পরিষ্কার নয়। স্থানীয়ভাবে দলের নামে টাকা লাগিয়েও বেটিং চালানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তাদের হাত কতদূর লম্বা, তা পরিষ্কার নয়।

শনিবার রাতে প্রথম পুলিশি অভিযান হয় শিলিগুড়ির ইসকন রোডে। সেখানকার একটি লটারির দোকানে আইপিএল জুয়া চলছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ জীবন সরকার, শ্যামল বর্মন, সুব্রত সাহা এবং মহম্মদ মোহন সরকারকে গ্রেফতার করে। ১৭ হাজার টাকা এবং ৫টি মোবাইল মেলে। তবে অনলাইনে বুকিং-এর মেশিনটি দোকানটি থেকে পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, মোবাইলে যোগাযোগ রেখে ওই লটারি কাউন্টারে টাকা জমা নিয়ে চিরকুট দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ।

রবিবার বিকেলে অভিযানে নামে সিআইডি। তারা প্রথমে জলপাইগুড়ি থেকে ধরেন ভোলা দাস এবং প্রভাত কংসবণিককে। তার পরে গোয়েন্দা অফিসারেরা হানা দেন ময়নাগুড়ির নতুন বাজারে। মোবাইল উদ্ধার হয়। শেষে ময়নাগুড়ির জোরপাকরি থেকে পঙ্কজ সাহাকে ধরার পরে লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার হয়েছে। এলাকার পঙ্কজের লটারির দোকান রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

IPL gambling Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE