Advertisement
০১ মে ২০২৪
Elephant Attack

অন্ধকারেও দেখতে পাচ্ছিলাম বড় সাদা দুটো দাঁত

ঘড়িতে তখন রাত দেড়টা হবে। মিনিট দশেক ঘরে ছিল দাঁতাল হাতি। কিন্তু ওই কটা মিনিট যেন মনে হচ্ছিল কাটছে না। হাতিটা চলে যাওয়ার পরেই, বাবা চিৎকার করে লোক ডাকতে শুরু করে।

An image of a woman

ভাঙা ঘরের সামনে মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড হাতে রেণু মুন্ডা। শনিবার মালবাজারে। —নিজস্ব চিত্র।

রেণু মুন্ডা
মালবাজার শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৮
Share: Save:

মাঝরাতে প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙে ঘরের ভিতরে বুনো হাতি দেখলে কেমন লাগে বলে বোঝাতে পারব না। এক কোণে সিঁটিয়ে রয়েছি আমি, বাবা-মা! জড়িয়ে ধরে রেখেছি একে-অন্যকে। দরদরিয়ে ঘামছিলাম সবাই। ঘন অন্ধকারে হাতির বড় সাদা দাঁত দু’টো দেখতে পাচ্ছিলাম তখন। হাতির ধাক্কায় হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ঘরের একটা দিকের দেওয়াল। দরমার সিলিং-ও খুলে পড়ল। মা জোরে জোরে ‘মহাকাল বাবা কী জয়’ প্রার্থনা করতে শুরু করল।

ঘড়িতে তখন রাত দেড়টা হবে। মিনিট দশেক ঘরে ছিল দাঁতাল হাতি। কিন্তু ওই কটা মিনিট যেন মনে হচ্ছিল কাটছে না। হাতিটা চলে যাওয়ার পরেই, বাবা চিৎকার করে লোক ডাকতে শুরু করে। হুলস্থূল পড়ে যায়। টর্চের আলো জ্বেলে সবাই যখন বাড়ির আসবাবপত্র দেখছিল, তখন আমি শুধু মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড খুঁজেছি। পরে বাড়ির উঠোনে দেখি, সে কার্ড আর বইপত্র ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে।

এত কিছু ঘটার পরেও ঠিক করেছিলাম ইংরেজি পরীক্ষা দিতেই হবে। সকালেই গ্রামের বন্ধুদের সঙ্গে মালবাজারের পরীক্ষাকেন্দ্রে যাই। পরীক্ষা মোটামুটি হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা দিতে দিতেও বারবার রাতের ওই প্রকাণ্ড হাতির কথা মনে পড়ছিল। কানে ভাসছিল ঘর ভেঙে পড়ার শব্দ। বারবার কেঁপে উঠেছি। বিকেলে বাড়ি ফিরে আসার পরে, বাবা-মার চোখমুখেও আতঙ্ক দেখেছি। সন্ধ্যায় অন্ধকার নামতেই হাতিটার কথা ফের মনে পড়ছে। আবার হানা দেবে না তো!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE