প্রতীকী ছবি।
গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন পেরিয়ে গেলেও সংঘর্ষ থামছে না কোচবিহারে। কোথাও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সংঘর্ষের চেহারা নিচ্ছে। কোথাও তৃণমূল- বিজেপির-বামেদের মধ্যে গণ্ডগোলের ঘটনাও ঘটছে।
রবিবারই মেখলিগঞ্জে এক বাম সমর্থক রমজান মিয়াঁকে (৫০) খুনের অভিযোগও উঠেছে। ওই ঘটনায় ১৯ জন জখম হয়েছেন। তার মধ্যে তৃণমূলের সাত জন আর বাকিরা বামেদের কর্মী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে একাধিক সংঘর্ষে এখন পর্য়ন্ত ৩৪ জনের বেশি জখম হয়েছেন। এদের মধ্যে ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হয়ে গেলেও এখনও গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচন হয়নি। তা নিয়েও নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে এখনও বিরোধ রয়েছে। তা থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। অন্যদিকে, বিজেপি ও বামেরা বেশ কিছু এলাকায় ভোট শতাংশ বাড়িয়ে নেওয়ায় শাসক-বিরোধী লড়াইও তীব্র হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে পুলিশকে আরও সক্রিয় হওয়ার আবেদন জানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “সমস্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
শনিবার বক্সিরহাটের মহিষকুচি গ্রামে। ওই এলাকায় তৃণমূলের বুথ সভাপতি মহিরুদ্দিন মিয়াঁর শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। রবিবার ওই এলাকাতেই আবার বিজেপির দুই নেতাকে মারধর করে তাঁদের বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে, দিনহাটায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াই অব্যাহত রয়েছে। গোসানিমারিতে শনিবার দলের যুব সংগঠনের সঙ্গে তৃণমূলের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় জখম চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। দিনহাটা-১ নম্বর ব্লকের বড় আটিয়াবাড়ি এলাকায় দিন কয়েক আগেই এক তৃণমূল নেতাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে যুব কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছিল। গীতালদহে তৃণমূলের মাফুজার রহমানের হাত ও পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ভোটের পরেই। ওই তৃণমূল কর্মী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই দুই এলাকার সঙ্গে মাথাভাঙা, শীতলখুচি এলাকাতেও উত্তেজনা রয়েছে। মেখলিগঞ্জের একটি আসনে সিপিএম জয়ী হয়েছে। ওই এলাকাতেই সংঘর্ষ হয়। বাম নেতা পরেশ অধিকারীর ক্ষোভ, “কোথাও নিরাপত্তা নেই। সশস্ত্র অবস্থায় সাধারণ মানুষের উপরে হামলা হয়েছে।”
দিনহাটা-১ ব্লকে ১২টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টিতে যুব সংগঠনের সমর্থনে দাঁড়ানো নির্দল সংখ্যাগরিষ্ঠ। বাকিগুলি তৃণমূলের। ওই পঞ্চায়েতগুলিতে কে প্রধান হবেন তা নিয়ে লড়াই তীব্র হয়ে উঠছে দুই পক্ষের মধ্যে। একে অপরের দল ভাঙতে ভয় দেখানোর টাকার টোপ দিচ্ছে বলেও অভিযোগ। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আসনে নিয়েও টক্কর রয়েছে দুই পক্ষের। একপক্ষ যুব সংগঠনের সঙ্গে ১৯ জন রয়েছেন। তৃণমূলের সঙ্গে ২৩ জন রয়েছেন।
বিজেপির জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “পুলিশ কোনও ক্ষেত্রেই ব্যবস্থা নিচ্ছে না দেখে রাজনৈতিক গণ্ডগোল বেড়ে যাচ্ছে। শাসক দলের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এই অবস্থার পরিবর্তন সাধারণ মানুষ করবেন।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া জেলা শান্তিতে রয়েছে। বিজেপি দু–এক জায়গায় গণ্ডগোলের চেষ্টা করছে। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy