Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি, জ্বরে কাবু শিলিগুড়ি শহর

ডেঙ্গির দাপটে উদ্বেগ বাড়ছে শিলিগুড়ি শহরে। এরই মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যুতে চিন্তার ভাঁজ গাঢ় হয়েছে আরও। ১৩ দিন প্রধাননগরে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিল শিশুটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২৫
শিলিগুড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডে জমে জঞ্জাল। — নিজস্ব চিত্র

শিলিগুড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডে জমে জঞ্জাল। — নিজস্ব চিত্র

ডেঙ্গির দাপটে উদ্বেগ বাড়ছে শিলিগুড়ি শহরে। এরই মধ্যে জ্বরে আক্রান্ত এক শিশুর মৃত্যুতে চিন্তার ভাঁজ গাঢ় হয়েছে আরও। ১৩ দিন প্রধাননগরে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিল শিশুটি। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শিশুটিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার অদ্রিজা সূত্রধর (৩ মাস) নামে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। বাড়ি শহরের হায়দরপাড়া শিবরামপল্লি এলাকায়।

নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুটি মারা গিয়েছে বলে মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে পরিবারের প্রশ্ন, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে এতদিন কেন তার সঠিক চিকিৎসা করা গেল না? উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে শিশুটির রক্তের নমুনা ডেঙ্গি বা এনসেফ্যালাইটিসের পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেরই চিকিৎসকদের একাংশের মত নিউমোনিয়া হলে সাধারণ চিকিৎসকই তা বলতে পারেন। মৃত শিশুটির জ্যাঠা তপনবাবু বলেন, ‘‘নিউমোনিয়া হলেও কেন নার্সিংহোমের চিকিৎসক তা বুঝতে পারলেন তা নিয়েই আমরা চিন্তিত।’’

এ দিকে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে শিলিগুড়িতে। এখন পর্যন্ত শহরে আক্রান্তের সংখ্যা ১০৫ জন। দার্জিলিং জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৩৯। শিলিগুড়ির সুভাষপল্লী, বিবেকানন্দ রোড, মহাবীরস্থান, খালপাড়া, সেবকরোড, মাটিগাড়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। জানা গিয়েছে মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের ভাই চন্দন ভট্টাচার্যও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। কলেজপাড়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। মেয়র জানান, এনএস ওয়ান পসিটিভ রিপোর্ট মেলার পরেই ম্যাক অ্যালাইজা পরীক্ষার জন্য তাঁর রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শহরের মধ্যবিত্ত এলাকাগুলিতেই ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি। বিষয়টি আমরাও পরিষ্কার বুঝতে পারছি না। ডেঙ্গি রুখতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ আজ, রবিবার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে তিনি জানান।

হাসপাতালে আক্রান্তরা।

তবে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত তিনশোর মতো রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও তাদের কারও ডেঙ্গি ধরা পড়েনি বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেন। এখন পর্যন্ত ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে এমন রোগীও ভর্তি হয়নি বলে হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানিয়েছেন। দু’দিন আগে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে দু’জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি ছিলেন। তাঁরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। নার্সিংহোমগুলিতে যেখানে প্রচুর ডেঙ্গির রোগী ভর্তি রয়েছেন সেখানে সরকারি হাসপাতালে রোগী নেই বলায় কোনও কিছু রাখঢাক করা হচ্ছে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে।

বেসরকারি বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের কাছে ডেঙ্গি আক্রান্ত অনেক রোগী আসছে। চিকিৎসকদের একাংশের অনুমান সরকারি হিসাবে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা দার্জিলিং জেলায় যা বলা হচ্ছে বাস্তবে তার কয়েক গুণ বেশি। দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে নজরদারি চলছেই। মানুষকে সচেতন করতে প্রচারও চলছে। তবে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।’’

তবে যে শিশুর মৃত্যু হয়েছে তার পাড়া শিবরামপল্লির বাসিন্দা শিল্পী সাহা, শর্মিলা দাস, সুদীপ রায়দের অভিযোগ, এলাকার রাস্তা ও নর্দমায় জল জমে থাকছে। মশা মারার তেল ছড়ানো বা ধোঁয়া দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়নি।

Dengue siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy