Advertisement
১১ মে ২০২৪

থামানো হবে অ্যাম্বুল্যান্সও

গত শুক্রবার রাতে ‘নাকা চেকিং’য়ে ছাড় পাওয়া একটি ‘নকল অ্যাম্বুল্যান্স’ যে ভাবে ৪টি পেট্রল পাম্পে ডাকাতি করেছে তাতে উদ্বিগ্ন পুলিশ। তাই উত্তরবঙ্গের পুলিশ কর্তারা রাতের অ্যাম্বুল্যান্স থামিয়ে রোগীর নথি পরীক্ষার কথাও ভাবছেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৯
Share: Save:

রাতের অন্ধকারে তীব্র গতিতে ছুটে আসছে অ্যাম্বুল্যান্স। নীল বাতি জ্বলছে মাথায়। বাজছে সাইরেনও। রাস্তায় লোহার ব্যারিকেড বানিয়ে ‘নাকা চেকিং’-এর দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা অ্যাম্বুল্যান্স যাওয়ার জায়গা করে দিলেন। এমন ছবি গভীর রাতে নানা জায়গাতেই দেখা যায়। কিন্তু, গত শুক্রবার রাতে ‘নাকা চেকিং’য়ে ছাড় পাওয়া একটি ‘নকল অ্যাম্বুল্যান্স’ যে ভাবে ৪টি পেট্রল পাম্পে ডাকাতি করেছে তাতে উদ্বিগ্ন পুলিশ। তাই উত্তরবঙ্গের পুলিশ কর্তারা রাতের অ্যাম্বুল্যান্স থামিয়ে রোগীর নথি পরীক্ষার কথাও ভাবছেন।

রবিবার রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইডি আনন্দ কুমার জানান, বিদেশে অ্যাম্বুল্যান্স এক জায়গা থেকে অন্যত্র রওনা হওয়ার আগে আগাম পুলিশকে জানিয়ে দেয়। কোথা থেকে কোন রুটে গিয়ে কোথায় পৌঁছবে সেই তথ্য পুলিশ পেয়ে যায়। আইজি বলেন, ‘‘আমাদের দেশেও রাতে অ্যাম্বুল্যান্স এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাতায়াতের আগে পুলিশকে আগাম তথ্য দিতেই পারে। তেমন ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে।’’

তবে তা যত দিন না শুরু হচ্ছে, তত দিন সব গাড়িই পরীক্ষা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ময়নাগুড়ি থানার আই সি তমাল দাস জানান, প্রেস, অ্যাম্বুল্যান্স, অন ডিউটি লেখা গাড়িগুলিকেও এখন থেকে চেকপোস্টে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাম্পগুলির সামনে পুলিশ থাকবে। পুলিশের একটি টহলদারি ভ্যান আলাদা ভাবে তৈরি থাকছে। ওই ভ্যান সারা রাত পাম্প গুলিতে নজরদারি চালাবে। গভীর রাতে কোনও গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্সকে পেট্রল পাম্প থেকে তেল দেওয়া হবে না। তেমন জরুরি হলে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর তেল মিলবে গাড়িতে। যদিও অ্যাম্বুল্যান্সকে অপেক্ষা না করিয়ে থামা মাত্র নথি দেখে, বাড়ির লোকদের সঙ্গে কথা বলেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলে কয়েকজন অফিসার জানান।

শুক্রবার গভীর রাতে ময়নাগুড়ির ছোট ভাণ্ডানি পেট্রল পাম্পে ডাকাতির ঘটনার পরে রবিবার ময়নাগুড়ির সমস্ত পেট্রল পাম্প মালিকদের নিয়ে ময়নাগুড়ি থানায় বৈঠক করেন থানার আধিকারিকরা। পাম্পগুলির নিরাপত্তা কীভাবে বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে এদিন ওই বৈঠকে আলোচনা হয়।

নর্থ বেঙ্গল পেট্রোল পাম্প ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্তা শ্যামল পালচৌধুরী বলেন, ‘‘অনেক পাম্পই রাতে তেল বিক্রি করে না। তবে অ্যাম্বুল্যান্স গিয়ে সাইরেন বাজালে কর্মীরা অনেক সময় খুলে দেন। এ বার থেকে অ্যাম্বুল্যান্স গেলেও রোগী সংক্রান্ত নথি দেখাতে হবে। প্রয়োজনে তেল দেওয়ার আগে পাম্পের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানাকেও জানানো হবে।’’ তবে রোগীদের কথা ভেবেই নথিপত্র পরীক্ষায় বেশিক্ষণ দেরি করা হবে না বলেও পাম্প মালিকদের তরফেও জানানো হয়েছে।

উত্তরবঙ্গের ৮ জেলায় বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা অন্তত ২ হাজার। সেই মালিক ও চালকদের যৌথ সংগঠন এখনও গড়ে ওঠেনি। শিলিগুড়ি অ্যাম্বুল্যান্স মালিক করমবীর সিং বলেন, ‘‘পুলিশ চাইলে সব অ্যাম্বুল্যান্সের নথি এক জায়গায় সংগ্রহ করে রাখতে পারে। নির্দেশ দিলে আমরা এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় রওনা হওয়ার আগে স্থানীয় থানাকে জানিয়ে দিতে পারি। তাতে আমাদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Checking Ambulance Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE