Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বুকে গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা ভুতনির এএসআইয়ের

মালদহের ভুতনি থানার এএসআই পরেশ রায় মানসিক অবসাদেই নিজের সার্ভিস রিভলভার দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি পুলিশের। তবে আত্মহত্যার কারণ নিয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলতে নারাজ জেলা পুলিশের কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:২৭
Share: Save:

মালদহের ভুতনি থানার এএসআই পরেশ রায় মানসিক অবসাদেই নিজের সার্ভিস রিভলভার দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি পুলিশের। তবে আত্মহত্যার কারণ নিয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলতে নারাজ জেলা পুলিশের কর্তারা।

সোমবার রাতেই গুলিবিদ্ধ এএসআই পরেশবাবুকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে কলকাতার এসএসকেএমে। এখনও তিনি সঙ্কটজনক অবস্থায় ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ওই অফিসারের আত্মহত্যার কারণ জানার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার সমস্ত দিকই খতিয়ে দেখছি। সেই সঙ্গে তাঁকে কী ভাবে দ্রুত সারিয়ে তোলা যায়, তা চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচকের ভুতনি থানাতে গত আট মাস ধরে রয়েছেন পরেশবাবু। তিনি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুরের নয়াপাড়ার বাসিন্দা। দুই ছেলেই পড়াশোনা করে। বছর খানেক হল কনস্টেবল থেকে এএসআই হয়েছেন। তিনি গাজলের বিধায়ক সুশীল রায়ের নিরাপত্তা রক্ষী ছিলেন। সুশীলবাবু বিধানসভায় হেরে যাওয়ার পর পরেশবাবু কিছু দিনের জন্য পুলিশ লাইনে ছিলেন। তারপরে পদোন্নতি হয়ে ভুতনি থানায় যোগ দেন।

তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস দু’য়েক ধরেই তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। পদোন্নতি পেয়ে অফিসার হলেও কাজ বুঝতে পারছিলেন না তিনি। এই নিয়ে পরিবার ও ঘনিষ্ঠ মহলে হতাশাও প্রকাশ করেছিলেন। এমনকী, ভিআরএস নেওয়ারও চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

এ দিন রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ নিজের ব্যারাকেই ছিলেন পরেশবাবু। সেই সময় ভুতনি থানার ওসি রঞ্জিত মজুমদার তাঁকে মোবাইল ডিউটিতে যেতে বলেন। অফিস থেকে সার্ভিস রিভলভারও নিয়ে যান তিনি। এরপরই আচমকা ব্যারাক থেকে গুলির শব্দ শুনতে পান থানার অন্য পুলিশ আধিকারিকেরা। তাঁরা ব্যারাকে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে রয়েছেন পরেশবাবু। তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে আসা হয় মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। হাসপাতালে ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপককুমার সরকার। চিকিৎসার তদারকিও করেন।

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর বুকের বাঁ পাঁজরে গুলি লেগেছে। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণের ফলে দুই ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে রাতেই কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। পরেশবাবুর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় তথা দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায় বলেন, ‘‘মালদহ জেলা পুলিশের কর্তারা দ্রুত তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। চিকিৎসায় ক্রমশ সাড়া দিচ্ছেন। তবে কী কারণে এমন কাজ করলেন, তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে বলা হয়েছে।’’ পরেশবাবুর সার্ভিস রিভলভারটি উদ্ধার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ASI attempted suicide Bhutni PS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE