হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস, কখন বেলাকোবা পার হচ্ছে, তার খোঁজ রাখতে হয় বাসিন্দাদের। সে তিস্তাতোর্সা হোক কিংবা বেঙ্গালুরু এক্সপ্রেস। বেলাকোবার উপর দিয়ে যাওয়া যে কোনও ট্রেনের সময়সূচির সঙ্গে বাসিন্দাদের দিনযাপনও জড়িয়ে পড়েছে। তাই বেলাকোবার যাঁর হয়ত কোনদিনই রাজধানী এক্সপ্রেসে চড়ার প্রয়োজন হয়নি, তিনিও সেই ট্রেনের সময় জানেন।
ভোর হোক বা গভীর রাত, গোধুলি বা ভরদুপুর, বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে রেল গেট খোলা না বন্ধ তা জেনে নিতে বয় বেলাকোবার বাসিন্দাদের। না হলে রেল গেটে আটকা পড়ার দুর্ভোগ রয়েছে। বাসিন্দারা হিসেব করে দেখেছেন, একবার গেট বন্ধ হওয়ার পরে সাধারণত তার ১০ মিনিটের মধ্যে ফের গেট বন্ধ হয় না। আর ট্রেনের সময়সূচি জানা থাকলে, দুর্ভোগে আটকা পড়ার আশঙ্কা নেই। তাই বেলাকোবার সকলকেই কমবেশি ট্রেনের খবর রাখতে হয়।
বেলাকোবার বুক চিরে চলে গিয়েছে রেল লাইন। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে অসম এবং হলদিবাড়ি এই দুই রুটে যাতায়াতকারী ট্রেন বেলাকোবা দিয়েই যায়। দিনে অন্তত ৩০ জোড়া ট্রেন যায় বলে রেল সূত্রে জানা গিয়েছে। বাড়ছে প্রতিদিন চলাচলকারী মালগাড়ির সংখ্যাও। প্রতিবারই বন্ধ হয় রেলগেট। হলুদ আর কালো রঙের ভারী লোহার স্তম্ভ রেল লাইনের দু’পাশে নেমে আসতেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এলাকার দুই প্রান্ত। রেল গেটের দু’পাশে বাজার, স্কুল, ব্যাঙ্ক, ওষুধের দোকান ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। স্টেশন কলোনি, কলেজ পাড়া এবং বিবেকানন্দ পাড়ার বাসিন্দাদের পেট্রোল পাম্প, ব্যাঙ্কে যাওয়া থেকে শুরু করে জামা কাপড় কিনতে বড় দোকানে যেতে হলেও রেলগেট পার হতে হয়। অন্যদিকে, গরম মশলা থেকে শুরু করে মাছ-মাংস বাজারের টুকিটাকি কেনাকাট থেকে স্কুল, হাসপাতালে যেতে প্রতিবার রেল গেট পার হতে হয় স্টেশন কলোনি, বটতলা এবং আদর্শ পাড়ার বাসিন্দাদের। গেট বন্ধ থাকলে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে যানজটে আটকে থাকতে হয়। প্রতিবারই বাড়ি থেকে বের হয়ে রেল গেটে আটকা পড়তে হয়েছে এমনও ঘটনাও বেলাকোবার বাসিন্দাদের নিত্যনৈমিত্তিক বলে অভিযোগ।