Advertisement
E-Paper

ভোট প্রচারে হোঁচট

ফলে, কর্মিসভা কিংবা জনসভা অথবা ঘরোয়া প্রচারের শেষে ভোটারদের তরফে যখন প্রশ্ন উঠছে, ‘ভোটটা ঠিক কবে হবে গো দাদা!’ তখন কোনও প্রার্থী জল চেয়ে খাচ্ছেন।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ১৫:১৩
প্রচার: কুশমণ্ডিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। ছবি: অমিত মোহান্ত

প্রচার: কুশমণ্ডিতে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। ছবি: অমিত মোহান্ত

উদয়াস্ত তুমুল প্রচারে ব্যস্ত নানা দলের নেতা-প্রার্থীরা। কিন্তু, ভোটারদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলতে গিয়ে অনেক প্রার্থীকেই অল্পবিস্তর হোঁচট খেতে হচ্ছে। বক্তৃতা দিতে গিয়েও সমস্যা হচ্ছে অনেক নেতার। কারণ, বক্তব্যের শেষ পর্বে ‘অমুক দিন সকাল-সকাল গিয়ে ভোট দিন’ বলে পরামর্শ দেওয়াই অনেক নেতার রেওয়াজ। কিন্তু, উচ্চ আদালতে নির্বাচন নিয়ে মামলা বিচারাধীন থাকায় সেটাও জোর গলায় অনেকে বলতে পারছেন না।

ফলে, কর্মিসভা কিংবা জনসভা অথবা ঘরোয়া প্রচারের শেষে ভোটারদের তরফে যখন প্রশ্ন উঠছে, ‘ভোটটা ঠিক কবে হবে গো দাদা!’ তখন কোনও প্রার্থী জল চেয়ে খাচ্ছেন। কেউ মুচকি হেসে ‘হবে, ঠিক সময়ে হবে’ আশ্বাস দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। কেই কেউ আবার ‘যবেই হোক, আমাকে একটু দেখতে হবে’ বলে সটান প্রশ্নকর্তার হাত জড়িয়ে ধরছেন। সেই সময়ে জটলা থেকে ফস করে কেউ বলেও বসছে, ‘‘মেয়ের বিয়ের নেমতন্ন করলেন, কিন্তু, কবে ভোজ খেতে যাব না বললে কি হয় দাদা!’’

ঘটনা এটাই। কোচবিহার থেকে ইটাহার, বুনিয়াদপুর থেকে জলদাপাড়া, ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি থেকে নাগরাকাটা-মালবাজার, নেতা-প্রার্থীদের অনেকেই নানা প্রশ্নের মুখে পড়ে অপ্রস্তুত হচ্ছেন।

যেমন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কথা ধরা যাক। তিনি প্রচারে বলছেন, ‘‘১৪ মে ভোটের দিন ঠিক করেছে কমিশন। আপাতত ওই দিনই ভোট হবে ধরে প্রচার করছি।’’ সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন যে অভিযোগ তা হল, বাম-বিজেপি-কংগ্রেস ভোট চায় না বলেই বিষয়টি ঝুলিয়ে দিতে চাইছে। ভোটের দিন নিয়ে অনিশ্চয়তার জন্য প্রচারে গিয়ে মোটামুটি একই সুরে বলতে শোনা যাচ্ছে, তৃণমূলের সব নেতা-মন্ত্রীদেরই। তবে একান্তে বহু প্রার্থী, দাপুটে নেতা মানছেন, ভোটের দিনটা ঠিক না হলে বক্তৃতার শেষ দিকটা ততটা জমছে না।

তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের এক প্রথম সারির নেতা একান্তে বলেন, ‘‘সত্যিই তো ভোজের নেমতন্ন করতে যাচ্ছি, কিন্তু, কবে খাওয়ানো হবে সেটা বলতে পারছি না। একটু বেকায়দা হচ্ছে বটে!’’

বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেসের অনেকেই অবশ্য দিন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরির বিষয়টি সামনে রেখে তৃণমূলকে চাপে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছেন। মালদহে মৌসম বেনজির নুর, উত্তর দিনাজপুরে মোহিত সেনগুপ্তের মতো নেতা-নেত্রীরা প্রচারে বলছেন, ‘‘মনোনয়ন জমা থেকে প্রত্যাহার, যা হয়েছে তা গোটা বাংলা টিভিতে দেখেছে। সকলেই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছেন।’’ বিজেপির উত্তরবঙ্গের অন্যতম পর্যবেক্ষক রথীন বসু জানান, ভোটের নামে প্রহসন হোক তা আমজনতা চান না। তিনি বলেন, ‘‘কাদের গা জোয়ারি মনোভাবের জন্য পঞ্চায়েত ভোটের দিন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে সেটা আমরা ঘরে-ঘরে গিয়ে বলছি। বোঝাচ্ছি।’’ এত বোঝানোর পরেও অবশ্য কমবেশি অনেক জায়গাতেই নেতাদের অনেকের দিকে ছোড়া হচ্ছে সেই প্রশ্ন, ‘দাদা, নেমতন্ন তো করছেন, কিন্তু কবে!’’

Arpita Ghos candidates West Bengal Panchayat Elections 2018
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy