Advertisement
১১ মে ২০২৪

ভোটে ভয় মুঙ্গেরের অস্ত্র

শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, মালদহ, কোচবিহারে হালে যে অস্ত্র পাচারকারীরা ধরা পড়েছে, তাদের জেরা করে অনেক তথ্য জেনেছেন তদন্তকারী অফিসাররা।

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৯
Share: Save:

ভোটের দিন ঘোষণা হতেই বিহারের মুঙ্গেরের অস্ত্র কারবারিরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে আশঙ্কা রাজ্যের পুলিশ ও গোয়েন্দা দফতরের। টেলিফোনে আড়ি পেতে বিহারের দুষ্কৃতীদের কথোপকথন জেনেই সতর্ক পুলিশ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সেই কথাবার্তায় ‘সফট টয়’, ‘হার্ড টয়’, ‘লং টয়’, ‘গোলগাপ্পা’ তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মালদহ, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার থেকে বরাত জোগাড়ের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। এতে উদ্বিগ্ন উত্তরবঙ্গের পুলিশ কর্তারা।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতিটি থানায় সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষ কর্তা জানান, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বিহার থেকে ঢোকা প্রতিটি গাড়িতে তল্লাশির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের ওই কর্তা জানান, সরকারি ভাবে যে অস্ত্র কিনতে ৩০ হাজার টাকা লাগার কথা তা অনায়াসে এখন ৫-৬ হাজারে মিলে যায়। অতীতে ‘খোকা’, ‘গুড বয়’, ‘হার্ড বয়’ গোছের সঙ্কেতে ওই অস্ত্র লেনদেন হতো। ইদানীং সেই সঙ্কেতও পাল্টে গিয়েছে।

শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ, মালদহ, কোচবিহারে হালে যে অস্ত্র পাচারকারীরা ধরা পড়েছে, তাদের জেরা করে অনেক তথ্য জেনেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। যেমন, পাইপগান হল ‘সফট টয়’, নাইন এমএম পিস্তল হল ‘হার্ড টয়’, রাইফেল হল ‘লং টয়’। গোলগাপ্পা মানে হল শক্তিশালী দিশি বোমা। এ ছাড়া, কার্বাইন, একে ৪৭-এর মতো স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রও এখন মুঙ্গেরের অন্ধকার দুনিয়ায় লেনদেন হয়।

টাকা ফেললেই

• নাইন এমএম ৮-১২,০০০ পিস্তল

• পাইপগান ৫,০০০

• সেমি অটোমেটিক ৭,০০০ রিভলবার

• ২০ টি গোলগাপ্পা ১০,০০০

তবে তদন্তকারীরা এটা জেনেছেন, উত্তরবঙ্গে ভোটের বাজারে ছোট মাপের অস্ত্রের বিক্রি বাড়াতে চোরাকারবারিরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। তবে চেষ্টা করলেও তারা সফল হবে না বলে দাবি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে কোনও অশান্তি করতে দেবে না সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ ও গোয়েন্দারা নজরদারি কয়েক গুণ বাড়িয়েছেন। আমরা প্রতিটি গ্রামের বাসিন্দাদের সজাগ থাকতে বলেছি।’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুঙ্গের অস্ত্র কারবারিদের চক্রের জাল নষ্ট করতে একাধিক বিশেষ ‘সেল’ গড়ে দেন। এরপরেই সাঁড়াশি চাপে ‘এজেন্ট’দের কয়েকজন ধরা পড়ে। তাতে অস্ত্রের কারবার কিছুটা থিতিয়ে যায় বলে পুলিশের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE