উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে পঞ্চায়েতের বহু আসনে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ বাম, কংগ্রেস, বিজেপির। তবে উচ্চ আদালতের রায়ে ফের মনোনয়নের সুযোগ মিললে বহু আসনেই প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে বিরোধীরা। রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, ইটাহার, কুমারগঞ্জের মতো এলাকার বিরোধী দলের নেতারা নিজেদের মধ্যে বিরোধ আপাতত সরিয়ে রাখতে চাইছেন। ফোনে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগও রাখছেন। তৃণমূল শিবিরে সে খবর পৌঁছে গিয়েছে। তাই নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব ধরে রাখার জন্য তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ সদলবলে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছেন।
উত্তর দিনাজপুরে বামফ্রন্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯১০টি, পঞ্চায়েত সমিতির ২০০টি ও জেলা পরিষদের ২৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেস গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬৪১টি, পঞ্চায়েত সমিতির ১৩৯টি ও জেলা পরিষদের ২২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দের দাবি, ‘‘তৃণমূলের হুমকি ও হামলার জেরে তিনটি স্তরে কয়েকশো আসনে প্রার্থী দিতে পারিনি আমরা। ফের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ মিললে বামেদের সঙ্গে আলোচনা হবে। প্রার্থীদের তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।’’
জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অপূর্ব পালও জানিয়েছেন, বামফ্রন্টের কয়েকশো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দিতে পারেননি। তাঁরাও ফের মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ বিশ্বাসের অভিযোগ, শাসক দল মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সময় বাড়ানোর পাশাপাশি মনোনয়নের সময়ে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হলে তাঁরাও সব আসনে প্রার্থী দিতে তৈরি বলে নারায়ণবাবু জানান।
তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘বিরোধীরা প্রার্থী খুঁজে না পাওয়ায় ব্যর্থতা আড়াল করতে গোড়া থেকেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাদের দলের নেতার বাড়িতে হামলা করেছে।’’ তাঁর দাবি, বাসিন্দারা তাঁদেরই সমর্থন করবেন, তাই তাঁরা নিশ্চিন্ত।
কিন্তু তৃণমূলের অন্দরের খবর, সময়সীমা বাড়ানো হলে বিরোধীদের হয়ে কারা প্রার্থী হতে পারেন, সেদিকে নজর রাখার নির্দেশ জারি হয়েছে। সব ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতিদের নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার জানান, তাঁরা সুযোগ পেলে শতাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন পেশ করাবেন। গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯৭৫টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৮৭০টি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। সিপিএম এবং আরএসপির বামফ্রন্ট মিলে গ্রামপঞ্চায়েতে মনোনয়ন দিতে পেরেছে ৮৩৫টি। কংগ্রেস দিয়েছে মাত্র ৩২৩টি আসনে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় বলেন, ‘‘২০১৩ সালেও পঞ্চায়েত ভোটও পিছিয়ে যায়। এবারে ভোট খুব বেশি দিন পিছিয়ে গেলে খরচ হয়ত বেড়ে যেতে পারে।’’
তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের দাবি, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিরোধীরা মনোনয়ন না দিতে পারার যুক্তি খাড়া করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy