Advertisement
০১ মে ২০২৪
BGPM meeting

আগামিকাল দার্জিলিঙে সভা মোর্চার, বাগান থেকে শ্রমিক আনার প্রস্তুতি

জমির অধিকার নিয়ে আওয়াজ তুলে, তা সরকারের কাছে নতুন করে তোলার দাবিতেই সভা ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে মোর্চা। পাট্টা নিয়ে বিরোধীরা সরব হওয়ার পরে, সরকার পাট্টার সমীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে।

অনীত থাপা।

অনীত থাপা। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:১৩
Share: Save:

আগামিকাল, রবিবার পাহাড়ের চা শ্রমিকদের জমির অধিকার সংক্রান্ত বক্তব্যকে সামনে রেখে, দার্জিলিঙে জনসভার ডাক দিয়েছে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। সেখানে পাহাড়ের প্রতিটি বাগান থেকে শ্রমিকদের আনার প্রস্তুতি শুরু করেছে শাসক দল। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দাবি, সভা দল ডাকলেও শ্রমিকেরাই সভা চালাবেন এবং সভা থেকেই বাগানে বাগানে প্রচারের সূচি তৈরি হবে। জমির অধিকার নিয়ে আওয়াজ তুলে, তা সরকারের কাছে নতুন করে তোলার দাবিতেই সভা ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছে মোর্চা। পাট্টা নিয়ে বিরোধীরা সরব হওয়ার পরে, সরকার পাট্টার সমীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। তাতে কিছুটা হলেও, চাপে শাসক দল। পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সে জায়গা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যই সভা করে পাল্টা পথে নামছেন শাসক দলের নেতারা।

দলের সভাপতি অনীত থাপা বলেন, ‘‘জমির অধিকার চা শ্রমিক থেকে পাহাড়বাসী সবার। পাট্টার অধিকারের জন্য লড়াই করতে হয়েছে। বিভিন্ন ভোটের আগে, শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমরা দায়িত্বে এসে সরকারকে রাজি করিয়েছি।’’ তাঁর অভিযোগ, চা শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে পাহাড়ে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা চলছে এবং শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। জনসভা থেকে এ সব নিয়ে বার্তা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

দার্জিলিং পাহাড়ে ৮৬টি বড় চা বাগান রয়েছে। বিশ্ববিখ্যাত দার্জিলিং চা বিভিন্ন বাগানে তৈরি হয়। এর মধ্যে ৭৮টির মতো বাগান খোলা রয়েছে। বাকি কিছু বাগানে সমস্যা অথবা ‘অচলাবস্থা’ রয়েছে। লক্ষাধিক শ্রমিক পাহাড়ের বাগানে কাজ করেন। দাবি, এঁদের কারও জমির অধিকার নেই এবং পাহাড়বাসীর বেশির ভাগেরই জমির মালিকানা নেই। এঁদের অনেকে বাগানের ফাঁকা জমিতে চাষাবাদ করেন এবং শ্রমিক-বস্তিতে থাকেন। প্রতি ভোটের সময় চা শ্রমিকদের জমির পাট্টার দাবি ওঠে। এ বারও প্রায় ২৩ বছর পরে পাহাড়ের পঞ্চায়েত ভোটে পাট্টার আশ্বাস অন্যতম ভোটের হাতিয়ার হিসাবে সামনে এসেছিল। শাসক দলের তরফে তা জোরদার ভাবে প্রচারও করা হয়।

পঞ্চায়েত ভোটের পরে, রাজ্য মন্ত্রিসভা চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ২৫ অগস্ট মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে, নির্দেশিকা জারি হয়। উত্তরবঙ্গের আট জেলায় জেলাশাসকদের সমীক্ষা করার নির্দেশ পাঠানো হয়। চা বাগানে শ্রমিক পরিবার পিছু পাঁচ ডেসিমেল করে পাট্টা দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। বাগানের খালি ও অব্যবহৃত জমি চিহ্নিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়। এই নির্দেশিকার পরেই বিরোধীরা পাহাড়ে প্রচারে নামেন। বাগানে বাগানে গেট মিটিং হয়। শ্রমিকদের জমি ‘কেড়ে’ শুধু পাঁচ ডেসিমেল জমি দেওয়া হবে বলে সেই প্রচারে বলা হয়। তাতে পাহাড়ের বহু বাগানে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সরকার জমি থেকে তুলে দিয়ে অন্য কোথায় বসিয়ে দেবে, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে সরকার সমীক্ষার কাজ স্থগিত করে দিয়েছে। এ বার শাসক দলের জনসভার পরে, নতুন করে কী পরিস্থিতি দাঁড়ায়, তা-ই দেখার বলে মনে করছেন পাহাড়ের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tea Garden Anit Thapa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE