Advertisement
১৮ মে ২০২৪

শঙ্করের জায়গায় ফের এলেন বিপ্লব

মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ ফিরে পেলেন বিপ্লব মিত্র। শুক্রবার কলকাতা থেকে রাজ্য নেতৃত্বের তরফে বিপ্লববাবুর নাম জেলা সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করা হয় বলে দল সূত্রের খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ ফিরে পেলেন বিপ্লব মিত্র। শুক্রবার কলকাতা থেকে রাজ্য নেতৃত্বের তরফে বিপ্লববাবুর নাম জেলা সভাপতি হিসাবে ঘোষণা করা হয় বলে দল সূত্রের খবর। তার আগে বৃহস্পতিবারই দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর তরফে ওই সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে গঙ্গারামপুরের দুর্গাবাড়িতে বিপ্লববাবুর বাড়িতে পৌঁছে যায়। আজ, শনিবার বালুরঘাটে জেলা তৃণমূল কমিটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা সভাপতি বদলের রাজ্য নেতৃত্বের ওই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হবে বলে সাংসদ অর্পিতা ঘোষ জানান।

কিন্তু কেন এই বদল তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই এই জেলায় দলের দায়িত্ব সামলেছেন বিপ্লববাবু। তাঁর হাত ধরেই জয়ও এসেছে। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে জেলার ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৫টিতে জেতেন তৃণমূল প্রার্থীরা। কিন্তু তারপরে বিপ্লববাবু সম্পর্কে একাধিক অভিযোগ উঠতে শুরু করে। দলেরই একটি অংশ দাবি করতে থাকে, বিপ্লববাবু স্বজনপোষণ করছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সে কারণেই বিধায়কদের বেশ কয়েকজন এককাট্টা হয়ে বিপ্লববাবুর বিরুদ্ধে দলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ করেন।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এতটাই বেড়ে যায় যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করতে হয় খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেও। ভোটের আগে তিনি প্রকাশ্য সভাতেও সে কথা বলেন। তবে তারপরেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তখন প্রবীণ বিধায়ক শঙ্কর চক্রবর্তীকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। বিধানসভা ভোটে জেলায় দু’টি মাত্র আসন পায় তৃণমূল।

দল সূত্রে খবর, এরপরেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে থাকে। দলের একটি অংশ দাবি তোলেন, শঙ্করবাবুর চেয়ে বিপ্লববাবু অনেক ভাল সংগঠক। দলকে ঘুরে দাঁড়াতে গেলে, বিপ্লববাবুকেই ফিরিয়ে আনতে হবে। তাঁদের কথাই শেষ পর্যন্ত শোনা হল বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর।

শঙ্করবাবুর বয়স প্রায় ৭২। বিপ্লববাবু সেখানে ৬২। বিপ্লববাবুর হাত ধরেই তৃণমূলে এসেছিলেন সত্যেন রায়, বাচ্চু হাঁসদা, শঙ্করবাবুরা। দলের কিছু নেতার বক্তব্য, সভাপতির পদ থেকে সরে যাওয়ার পরেও দলের নিচুতলাতে বিপ্লববাবুর প্রভাব বজায় ছিল। বিপ্লববাবুরও ভূমিকা খুব একটা বদলায়নি। পদ চলে যাওয়ার পরেও তিনি নিজের বাড়িতে আগের মতোই দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতেন। তাঁর তিনটি মোবাইল বেজে উঠত বারবার। তাঁর সঙ্গে কথা বলা খুব কোনও সমস্যা ছিল না প্রত্যন্ত এলাকার কর্মীদের পক্ষেও।

শঙ্করবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমার দায়িত্বে রয়েছে তিনটি সংস্থা (ম্যাকিনটস বার্ন, স্যাক্সবি এবং ব্রিটানিয়া)। সংস্থার কাজে কলকাতাতেই বেশি সময় থাকতে হয়। সম্প্রতি কাছে জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলাম।’’ বিপ্লববাবুর বক্তব্য, ‘‘দলের সিদ্ধান্তের উপরে কেউ নন। দলের একজন সৈনিক হিসাবে নির্দেশ মেনে আগেও কাজ করেছি। এখনও করে যাব। দল আমাকে যোগ্য মনে করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Biplab Mitra Zila President
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE