পথে: খুনে শাস্তির দাবিতে দিনহাটা কলেজের পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
কলেজ ছাত্র খুনের পরেও যুব-তৃণমূল দ্বন্দ্বে ছেদ নেই। সেই দ্বন্দ্বের জেরেই দিনহাটায় ফের বোমাবাজির অভিযোগ উঠল।
সোমবার গভীর রাতে দিনহাটার কৃষিমেলা বাজারের কাছে পর পর তিনটি বোমা পড়ে। ওই এলাকাতেই তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মোস্তাক মিয়াঁর বাড়ি। তাঁর অভিযোগ, ভয় দেখাতেই যুব তৃণমূলের একদল কর্মী বোমা ছোড়ে। ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। পরে একদল গ্রামবাসী বাইরে বেরিয়ে তিন জন আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। মঙ্গলবার সকালে দিনহাটা-গোসানিমারি রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভে সামিল হন বাসিন্দারা। দিনহাটার এসডিপিও উমেশ গণপত বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।”
এই ঘটনায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিক দাবি করেছেন, ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। তিনি বলেন, “দিনহাটায় ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার মোড় ঘোরাতেই এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কৃষিমেলায় কী হয়েছে, তার সঙ্গে তৃণমূল যুবর কোনও সম্পর্ক নেই। ছক কষে এমন ঘটনা ঘটানো হয়ে থাকতে পারে।” ওই পঞ্চায়েত সদস্য মোস্তাক আহমেদের অবশ্য দাবি, “যুব তৃণমূলের কর্মীদের একটি অংশ যারা দলের সাধারণ সম্পাদকের অনুগামী তারাই আমার বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা পরে তিনজনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।” সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া বলেন, “পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনের পরে ফের দিনহাটায় একদল দুস্কৃতী রাতের অন্ধকারে বোমাবাজি করছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে জানিয়েছি।”
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকে দিনহাটায় যুব ও তৃণমূলের মধ্যে একের পর এক গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এক তৃণমূল কর্মী খুন হন দিনহাটায়। ওই ঘটনায় অভিযোগের তির ছিল যুব সংগঠনের দিকে। আবার দিন কয়েক আগে দিনহাটা কলেজের ছাত্র তৃণমূল যুব কংগ্রেস অলকনিতাই দাসকে খুন করা হয়। ওই ঘটনায় তৃণমূলের দিকেই অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায়, কৃষিমেলাতে বোমাবাজির জেরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকালে গোসানিরোডে অবরোধের জেরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমস্যায় পড়তে হয় নিত্যযাত্রীদের। অবরোধে সামিল এলাকাবাসী আজিমা বিবি, সান্ত্বনা সাহা, আম্বিয়া বিবি বলেন, “সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছি। রাজনীতির লড়াইয়ে আমাদের ভয়ের মধ্যে কেন থাকতে হবে? পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিক।” পরে দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে আশ্বাস দিলে দুই ঘণ্টা পরে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
কলেজ ছাত্রের খুনের ঘটনাতেও শাস্তির দাবি উঠেছে দিনহাটায়। দিনহাটা কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র অলকনিতাই দাসের খুনের প্রতিবাদে এ দিন দুপুরে দিনহাটা শহরে মিছিল করেন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়ারা। সন্ধ্যায় শহরে শান্তি চেয়ে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে মৌন মিছিল করেন বাসিন্দারা। মিছিলটি দিনহাটা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy