Advertisement
১৮ মে ২০২৪
CAA

ফিরে আসব, বললেন ওঁরা

অসম পুলিশের তরফে জানানো হয়, দু’দিন আগেই তাঁরা জানতেন এই দলটি আসছে। তাই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।

বাধা: দিল্লি থেকে আসা প্রতিনিধিদের আটকে দিল অসম পুলিশ। শুক্রবার বাংলা-অসম সীমানায়। ছবি: নারায়ণ দে

বাধা: দিল্লি থেকে আসা প্রতিনিধিদের আটকে দিল অসম পুলিশ। শুক্রবার বাংলা-অসম সীমানায়। ছবি: নারায়ণ দে

রাজু সাহা
কুমারগ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:০৫
Share: Save:

সোজা চলে গিয়েছে পিচ রাস্তা। এদিকে পশ্চিমবঙ্গ, ওদিকে অসম। এদিক থেকে ওদিকে চলে গিয়েছিল বাসটি, সেখানে মোতায়েন অসম পুলিশের কথা না শুনেই। কিন্তু ‘শেষরক্ষা’ হল না। বাসটিকে শেষ অবধি আটকে দিল পুলিশ। চারটি সংগঠনের ১৭ জন প্রতিনিধি যাচ্ছিলেন গোয়ালপাড়া ডিটেনশন ক্যাম্প দেখতে। দাবি তুলেছিলেন, ডিটেনশন ক্যাম্প নয়, তার জায়গা হাসপাতাল গড়া হোক। তাঁদের সেই ইচ্ছের সেখানেই ইতি। সাময়িক ভাবে গ্রেফতার করে পরে তাঁদের পশ্চিমবঙ্গে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যদিও ওই প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আবার তাঁরা যাওয়ার চেষ্টা করবেন।

গাড়ির উপরে ব্যানারে লেখা, ‘সংবিধান বাঁচাও, নাগরিক বাঁচাও, ভারত বানাও যাত্রা’। চারটি সংগঠনের মধ্যে রয়েছে মেধা পাটকরের জন আন্দোলনের রাষ্ট্রীয় সমন্বয়, সোশ্যালিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া, খোদাই খিদমদগার এবং জাস্টিস ফোরাম অব অসম। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি তাঁরা দিল্লির রাজঘাট থেকে যাত্রা শুরু করেন। লক্ষ্য ছিল অসমের গোয়ালপাড়ায় নির্মিয়মান ডিটেনশন ক্যাম্প।

প্রতিনিধিদলের ফয়জল খান বলেন, ‘‘রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ভারতে কোথাও কোন ডিটেনশন ক্যাম্প নেই। অথচ অসমের কোকরাঝাড় জেলার ডিসি আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছেন, গোয়ালপাড়ায় ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরির কাজ চলছে। এছাড়া অস্থায়ী ডিটেনশন ক্যাম্পে ২৭৯ জনকে রাখা হয়েছে। আমাদের দাবি, নির্মিয়মান ডিটেনশন ক্যাম্পের জায়গায় স্কুল বা হাসপাতাল গড়া হোক। কেন ডিটেনশন ক্যাম্প গড়া হবে? সেখানে কাদের বন্দি করে রাখা হবে?’’

অসম পুলিশের তরফে জানানো হয়, দু’দিন আগেই তাঁরা জানতেন এই দলটি আসছে। তাই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। সে কথা প্রতিনিধিদলটিকে বলাও হয়। তবু তাঁরা যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রথমে গ্রেফতার করা হয়। পরে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কোকরাঝাড়ের এসপি রাকেশ রোশন জানান, দীর্ঘক্ষণ বাসটিকে বাংলা-অসম সীমানায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। সেই সময়ে প্রতিনিধিদের খাবারও দেয় অসম পুলিশ।

পরে ওই প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য সন্দীপ পাণ্ডে বলেন, ‘‘অনৈতিক ভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে আমাদের অসমে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। অথচ সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার বলেছে, এভাবে ১৪৪ ধারা জারি করে কোন গণতান্ত্রিক কার্যক্রমকে আটকে দেওয়া যাবে না।’’ তাঁদের অভিযোগ, ‘‘অসম শুধু নয়, উত্তরপ্রদেশ সরকারও ১৪৪ ধারা ব্যবহার করে আমাদের কার্যক্রমে বাধা তৈরি করে। আমাদের সেখানে বেশ কয়েকটি সভা ছিল। অথচ পুলিশ আমাদের পাহারা দিয়ে বিহারে ঢুকিয়ে দেয়।’’ তাঁদের দাবি, এ দিন শামুকতলায় তাঁদের বাস থাকিয়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। কিন্তু সব শোনার পরে তারা ছেড়ে দেয়। প্রতিনিধিরা এক বাক্যে তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশংসা করেন। স্লোগানও দেন, ‘মমতাদি তুম সংঘর্ষ করো, হাম তুমহারে সাথ হ্যায়’। একই সঙ্গে শুনিয়ে যান, ‘‘এর পরে আমরা মোটরবাইকে করে অসমে যাব।’’ রাকেশ রোশন জানান, আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে ধরে নিয়েই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assam Delhi CAA NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE