মাটিগাড়ায় বসেছে সিসিটিভি ক্যামেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
কখনও ট্রাকে ভোররাতে গরু পাচার, কখনওবা পিকভ্যানে চোরাই কাঠ বা আসবাবপত্র পাচার। তেমনই, বালসান নদী থেকে দিনরাত বালি পাথর তোলা বা জাতীয় সড়কে দুঘর্টনা তো আছেই। এ সবে নজর রাখতে জাতীয় সড়কের পাশে এবার নজর মিনার তৈরি করে সিসিটিভি বসালো শিলিগুড়ি পুলিশ। গত সপ্তাহেই মাটিগাড়ার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের বালসান নদীর সেতুর পাশেই ওই নজরমিনার বসানো হল। পুলিশ সূত্রের খবর, লোহার খাঁচার তৈরি প্রায় ২৫ ফুটের মতো উচ্চতার ওই নজর মিনারে অত্যাধুনিক একটি সিসিটিভি বসানো হয়েছে। সিসিটিভির ফুটেজ কিলোমিটার খানেক দূরে মাটিগাড়ার থানার একটি ঘরে মনিটারিং এবং রেকর্ড করার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সেখানে একজন কনস্টেবলকে রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেছেন, ‘‘জাতীয় সড়কে যাতায়াতকারী গাড়িগুলির উপর নজরদারির জন্য মিনারটি তৈরি হয়েছে। তেমনই, বালাসান সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, তাই এই ব্যবস্থা।’’
তবে নজর মিনারটি নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে। তাঁদের প্রশ্ন, বালাসান সেতুর পর থেকে এশিয়ান হাইওয়ে-২ রাস্তা ফোর লেন হচ্ছে। বর্তমান রাস্তা থেকে মাত্র ১৫ ফুট দূরে নজরমিনারটি বসানো হয়েছে। আগামী দিনে তা রাস্তার মধ্যে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনই, মিনারটির চারপাশে আপাতত কোনও গার্ডওয়াল তৈরি না হওয়ায় গাড়িও ধাক্কায় সেটির ভেঙে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বিষয়গুলি দেখা দরকার ছিল। কমিশনারেটের অফিসারদের অবশ্য দাবি, মাটিগাড়া পঞ্চায়েত সমিতি থেকে লিখিত অনুমতি নিয়ে নজরমিনারটি বসানো হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে তা জানানো হয়েছে। এশিয়ান হাইয়ের রাস্তা মাটিগাড়া চা বাগান দিয়ে মেডিক্যাল কলেজের দিকে চলে যাচ্ছে। আর ওই এলাকায় ভবিষ্যতে রাস্তা চওড়া হলেও লোহার মিনারটি যে কোনও সময় সরিয়ে রাস্তার অন্যত্র বসানো যাবে। দ্রুত গার্ড ওয়াল বা ব্যারিকেড হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাগডোগরা বিমানবন্দরের সঙ্গে শিলিগুড়ি শহরের যোগাযোগের মূল রাস্তা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক। রাষ্ট্রপতি, মুখ্যমন্ত্রী থেকে মন্ত্রী, সাংসদ-সহ সমস্ত ভিআইপি’রা রাস্তাটি দিয়েই চলাচল করেন। শহরের ঢোকার আগে বালাসনই সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ণ সেতু। তেমনই, নেপালের দিক থেকে প্রায়শই ট্রাকে, পিকআপ ভ্যানে গরু ওই রাস্তা দিয়েই পাচার শুরু হয়েছে। তেমনই, চোরাই কাঠ এবং আসবাবপত্র যাচ্ছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি সেতু এবং লাগোয়া এলাকা থেকে এসএসবি, বিএসএফ এবং পুলিশ কয়েক দফায় ট্রাক বোঝাই গরু ধরেছে। তেমনই, বন দফতর উদ্ধার করেছে কাঠের আসবাবপত্র। আবার নদী থেকে অবাধে বালি পাথর তোলা ঠেকাতেও সিসিটিভিটি কাজে লাগবে। তাই থানার স্ক্রিনে সন্দেহজনক কিছু দেখা মাত্রই জাতীয় সড়কের থাকা পুলিশ ভ্যানকে সতর্ক করা হবে। গাড়ির নম্বরও ক্যামেরাবন্দি হয়ে যাবে।
এ ছাড়া, সিটি সেন্টার, খাপরাইল মোড়, মেডিক্যাল মোড় এলাকায় মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে। পালিয়ে যাওয়া গাড়িগুলিকে চিহ্নিত করার কাজেও সিসিটিভির ফুটেজ কাজে লাগবে বলে পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন। তাঁরা জানান, মাটিগাড়া থানায় রেকর্ডিং করা ছাড়াও কম্পিউটারে একটি সফটওয়্যার লাগোনো হয়েছে। তা দিয়ে এলসিডি স্ক্রিনের সামনে বসেই দূরের সিসিটিভিটিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিলোমিটার খানেক পরিষ্কার ফুটেজ ছাড়াও জুম করা এবং চতুর্দিকে ক্যামেরাটিকে ঘুরিয়ে ফুটেজ সংগ্রহ করা যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy